আলহামদু লিল্লাহ।.
উপায়-উপকরণ গ্রহণ করা আল্লাহ্র উপর তাওয়াক্কুল (ভরসা) করার সাথে সাংঘর্ষিক নয়। বরং উপায়-উপকরণ গ্রহণ করার বিধান আল্লাহ্ই দিয়েছেন; সাথে এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে, ভাল-মন্দ আল্লাহ্র হাতে। উপকরণ ও ফলাফল উভয়ের স্রষ্টা আল্লাহ্।
উপকরণ ও ফলাফল একটির সাথে অপরটির যোগসূত্র থাকা আবশ্যক। অভিজ্ঞতা, অভ্যাস ও শরয়ি সংবাদ ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষ এ ব্যাপারটি জেনে থাকে। এছাড়া উপকরণটি অবশ্যই শরিয়ত অনুমোদিত হতে হবে। শরিয়ত অনুমোদিত ভাল কোন উদ্দেশ্য হাছিলের পন্থাও শরিয়ত অনুমোদিত হওয়া আবশ্যক।
বান্দা তার যে কোন বিষয়ে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করবে: না সে উপকরণ গ্রহণকে একেবারে বাদ দিবে; আর না সে মনেপ্রাণে উপকরণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে থাকবে। বরং প্রথাগতভাবে ও নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে মানুষ যেসব উপায়-উপকরণ গ্রহণ করে সেও সেসব উপায়-মাধ্যম গ্রহণ করবে। কিন্তু, উক্ত উপকরণের সাথে তার অন্তর সম্পৃক্ত হয়ে থাকবে না। বরং তার অন্তর সম্পৃক্ত থাকবে মহান সৃষ্টিকর্তা, রাজাধিরাজ ও সবকিছুর নিয়ন্ত্রণকর্তার সাথে।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন:
উপকরণের দিকে চেয়ে থাকা: মানুষের অন্তর উপকরণের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে থাকা, সে উপকরণের উপর আশা রাখা ও ভর করা। মাখলুকাতের মধ্যে এমন কোন মাখলুক নেই যে মাখলুক এগুলো পাওয়ার অধিকার রাখে। কারণ মাখলুক স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়। মাখলুকের সহকারী ও প্রতিপক্ষ থাকা অনিবার্য। এসব সত্ত্বেও যিনি সকল কারণের স্রষ্টা তিনি যদি সুগম করে না দেন তাহলে কোন কিছুই ঘটে না।”।[মাজমুউল ফাতাওয়া (৮/১৬৯)]
উপকরণ গ্রহণের ক্ষেত্রে সূত্র হচ্ছে- প্রত্যেক বিষয়ের উপকরণ সেটার উপযোগী বিষয় দিয়ে হয়ে থাকে। যেমন- হালকা রোগ থেকে সতর্কতা গ্রহণ প্রক্রিয়া কঠিন রোগ থেকে সতর্কতা গ্রহণ প্রক্রিয়ার মত নয়; কোন মূল্যবান, দামী জিনিসের সংরক্ষণ প্রক্রিয়া কমদামী ও সাধারণ জিনিসের সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার মত নয়।
জীবিকা সন্ধানের উপকরণ রোগ প্রতিরোধের উপকরণ থেকে ভিন্ন। পানাহারের উপকরণ সন্তান-প্রাপ্তি ও প্রতিপালনের উপকরণ থেকে ভিন্ন। এভাবে প্রত্যেক বিষয়ের উপকরণ ওটার সাথে যেমন উপযুক্ত তেমন হয়ে থাকে। আর উপকরণ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কে অসচেতন ও অবহেলাকারী, আর কে সচেতন ও বুদ্ধিমান এটি নির্ণয়ের নীতি বিষয়ভেদে ও অবস্থাভেদে ভিন্ন। এ বিষয়গুলো মানুষ নিজের থেকে ও স্বাভাবিক অভ্যাস থেকে জানতে পারে।
আল্লাহ্ই ভাল জানেন।