আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
শরিয়ত বিধান হচ্ছে— আপনি তাকে উপদেশ দেওয়া, রমযান মাসে রোযা না-রাখা যে কবিরা গুনাহ সেটার ভয়াবহতা তুলে ধরা।
এই গুনার সাথে আরও একটি কবিরা গুনাহ যোগ হয়েছে সেটা হল: এ কবিরা গুনাহটি প্রকাশ্যে করা, গুনাহটিকে তুচ্ছ মনে করা এবং লুকিয়ে না করা। যা তার অন্তরে এ মহান বিধানের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শনের দুর্বলতা নির্দেশ করছে। যার ফলে অন্যদের মাঝেও একই ধরণের কাজ করার স্পর্ধা তৈরী হবে কিংবা ঈমানদারদের অন্তরে ক্রোধ জাগাবে, আর তাদের শত্রুদের অন্তরে খুশি আনবে।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন: "আমার সকল উম্মত ক্ষমার্হ; কেবল প্রকাশ্যে গুনাহকারীরা ব্যতীত। প্রকাশ্যে গুনাহর মধ্যে এটাও পড়বে যে, কোন বান্দা রাতের অন্ধকারে কোন একটি পাপকাজ করেছে এবং আল্লাহ্ তাকে আচ্ছাদিত করে রেখেছেন এমতাবস্থায় সে ভোরে উপনীত হয়। কিন্তু সে অমুককে ডেকে বলে: ওহে অমুক গতরাতে আমি এমন এমন করেছি; অথচ আল্লাহ্র আচ্ছাদনে থেকে সে রাত কাটিয়েছে। আল্লাহ্ তাকে রাতভর আচ্ছাদন দিচ্ছেন; আর সে সকালে উঠে আল্লাহ্র আচ্ছাদনকে উন্মুক্ত করে ফেলে।"[সহিহ বুখারী (৫৭২১) ও সহিহ মুসলিম (২৯৯০)]
সুতরাং যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে দিনের বেলায় গুনাহ করে, লজ্জাবোধ করে না, লুকিয়ে করার চেষ্টা করে না— তার অবস্থা কেমন হবে?!
দুই:
উপদেশ দেয়ার পদ্ধতি:
নিঃসন্দেহে আপনার মত ব্যক্তি যার এই ড্রাইভার ও তার গোত্রীয়দের উপর কোন কর্তৃত্ব নেই তাদেরকে উপদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে কোমল হতে হবে। তাকে আল্লাহ্র কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হবে। আল্লাহ্র ভয় দেখাতে হবে। সে ব্যক্তি যে অবস্থার মধ্যে আছে সেটার ভয়াবহতা তুলে ধরতে হবে। বর্ণনা করতে হবে যে: রাব্বুল আলামীনের প্রতি অন্তরের ঈমান আল্লাহ্কে সম্মান করা ও আল্লাহ্র অনুশাসনগুলোকে মর্যাদা দেওয়া আবশ্যক করে। ফলে বান্দা অনুশাসনগুলো পালন করে এবং নিষিদ্ধকাজগুলোকে জঘন্য মনে করে সেগুলো থেকে বিরত থাকে। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: "এটাই (করণীয়)। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র পবিত্র বিধানসমূহের সম্মান করবে, তার প্রভূর নিকট সেটা তার জন্য উত্তম। আর তোমাদের কাছে যেগুলো পাঠ করা হবে (ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ করা হবে) সেগুলো ছাড়া (সব) চতুষ্পদ জন্তু তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। অতএব তোমরা মূর্তিপূজার পঙ্কিলতা বর্জন কর এবং মিথ্যা কথা পরিহার কর। আল্লাহ্র প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে, তাঁর সাথে শরীক না করে। আর আল্লাহ্র সাথে যে শরীক করে (তার অবস্থা এমন যে,) সে যেন আকাশ থেকে পড়ল, আর পাখিরা তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল কিংবা বাতাস তাকে কোন দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করল। এটাই (করণীয়)। আর যারা আল্লাহ্র নিদর্শনসমূহের সম্মান করবে, নিঃসন্দেহে সেটা হবে (তাদের) অন্তরের তাকওয়ার পরিচায়ক।"[সূরা হাজ্জ, ২২:৩০-৩২]
যদি তার সাথে এমন উপদেশ কার্যকরী না হয় এবং আপনি তার মাঝে উপক্ষো লক্ষ্য করে কিংবা আল্লাহ্র পবিত্র বিধানসমূহের প্রতি তাচ্ছিল্য দেখেন তাহলে আপনার ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান রয়েছে যে, তাকে বর্জন করা, তার সাথে কথা না বলা, লেনদেন না করা, তাকে সালাম না দেওয়া, সালামের উত্তর না দেওয়া। বিশেষতঃ যে সময়গুলোতে সে ব্যক্তি এ জঘন্য গুনাহতে লিপ্ত থাকে সে সময়গুলোতে। সে ব্যক্তি এ গুনাহ করতে থাকা অবস্থায় তার সাথে উঠাবসা করা আপনার জন্য বৈধ হবে না; যতক্ষণ না সে এ গুনাহ ছেড়ে দেয় ও এর থেকে তওবা করে।
আপনি একান্ত প্রয়োজনে তার সাথে ততটুকু কাজ কারবার করবেন যতটুকু করতে চাকুরীর আইন আপনাকে বাধ্য করে।
যদি এ ধরণের বয়কটের কারণে আপনি নিজের দ্বীনের উপর বা নিজের উপর কোন ক্ষতির আশংকা করেন; যেহেতু আপনি এমন দেশে বাস করছেন যে দেশের কর্তৃত্ব কাফেরদের হাতে এবং আপনার প্রবল ধারণা হয় যে, বয়কটের কারণে আপনাকে কষ্টের শিকার হতে হবে সেক্ষেত্রে সাধ্যানুযায়ী তার অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করার সাথে তার সাথে মিল দিয়ে চলতে কোন আপত্তি নাই; যতটুকু মিল দিয়ে চললে আপনি ক্ষতি এড়াতে পারবেন।
আরও জানতে দেখুন: 83581 নং প্রশ্নোত্তর।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।