আলহামদু লিল্লাহ।.
প্রশ্নে যে দুধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে কোন মুসলমানের জন্য সে দুধ কিংবা সে জাতীয় অন্য যে কোন দুধ খেতে কোন বাধা নেই। ঐ দুধগুলোর উৎপাদন উপাদান সম্পর্কে জানা না-থাকলে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা ও বিস্তারিত জানাও আবশ্যকীয় নয়।
আমি যদি ধরে নিই যে, সেগুলোর মধ্যে এমন উপদান আছে যা আমরা জানি না সেক্ষেত্রে এর হুকুম আমাদের উপর বর্তাবে না। কেননা কোন কিছু অজ্ঞাত থাকা সেটা না-থাকার পর্যায়ভুক্ত। যদি খাদ্য সম্পর্কে বিস্তারিত খুঁটিনাটি জানা আবশ্যক হত তাহলে কাফেরদের খাদ্যের ক্ষেত্রে এমন শর্ত করা হত। যখন আমাদেরকে সে নির্দেশ দেয়া হয়নি; অথচ অন্যের খাদ্য থেকে উপকৃত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা সর্বব্যাপী বিদ্যমান। এর থেকে জানা গেল যে, শরিয়ত এটি চাচ্ছে না; বরং জিজ্ঞাসা করা শরিয়ত সম্মত নয়।
গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়:
চিজ তৈরী করা হয় এঞ্জাইম (রেনেট) থেকে। এ সকল চিজ খাওয়া কি বৈধ হবে? কেননা রেনেট এমন সব গরু ও গরু বাছুর থেকে সংগ্রহ করা হয় যেগুলোকে শরিয়তসম্মত পদ্ধতিতে জবাই করা হয়নি?
জবাবে তাঁরা বলেন: আপনাদের এ সকল চিজ খেতে কোন অসুবিধা নেই। এ সকল চিজে ব্যবহৃত রেনেট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করাও আপনাদের জন্য জরুরী নয়। কারণ সাহাবায়ে কেরামের যামানা থেকে মুসলমানেরা কাফেরদের তৈরীকৃত চিজ খেয়ে আসছে; তখন কেউ সেসবের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।[স্থায়ী কমিটির ফতোয়া (২২/২৬৩-২৬৪) সমাপ্ত]
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন:
আল্লাহ্ তাআলা এ পৃথিবীতে আমাদের জন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছেন মূল বিধান হচ্ছে- এগুলো সব আমাদের জন্য হালাল। দলিল হচ্ছে আল্লাহ্র বাণী: “পৃথিবীতে যা কিছু আছে তিনি সে সবকিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ২৯] সুতরাং কেউ যদি দাবী করে যে, অমুক জিনিস নাপাকির কারণে হারাম তাহলে সে ব্যক্তিকে দলিল পেশ করতে হবে।
“আর আমরা যে, সব সন্দেহ-সংশয় ও সকল কথাকে বিশ্বাস করব এটারও পক্ষেও কোন দলিল নেই।”[লিকাউল বাব আল-মাফতুহ (১৩/২০)]
দুই:
বাজারে যে দুধগুলো পাওয়া যায় সেগুলো সম্পর্কে যেসব কথা ছড়ানো হচ্ছে যে, এগুলোর উৎপাদন উপকরণে হারাম বস্তু আছে কিংবা সন্দেহপূর্ণ বস্তু আছে ইত্যাদি সে সব কথায় কান না দেওয়া বাঞ্ছনীয়। কেননা এসব উপাদান যদি উদ্ভিদ শ্রেণীর হয় তাহলে সেটা জায়েয হওয়ার ব্যাপারে কোন আপত্তি নেই। আর যদি সেসব উপাদানের উৎস হয় কোন বিশেষ প্রাণী: তাহলে হয়তো সে প্রাণী হালাল ও জবাইকৃত প্রাণী হবে কিংবা মৃত প্রাণী হবে। যদি এ প্রাণীটি হালাল শ্রেণীর প্রাণী হয় এবং এমন কোন দেশ থেকে আসে যাদের জবাই খাওয়া হালাল তাহলে তো এসব উপাদানও হালাল; এতে কোন আপত্তি নেই। আর যদি এমন কোন প্রাণী হয় যে প্রাণীর গোশত খাওয়া হারাম কিংবা এমন দেশ থেকে আসে যাদের জবাই খাওয়া হারাম সেক্ষেত্রেও এসব উপাদান হালাল। কেননা সেক্ষেত্রেও এসব উপাদানের দুইটি অবস্থা হতে পারে:
- কারণ উক্ত উপাদান অন্য ক্যামিকেলের সাথে মিশ্রিত হয়ে এর মৌলিকত্ব হারিয়ে সম্পূর্ণরূপে অন্য উপাদানে পরিণত হয়েছে।
- কিংবা উক্ত উপাদান ব্যবহৃত হয়ে এর অস্তিত্ব নিঃশেষ হয়ে গেছে; এর কোন প্রভাব দুধের মধ্যে নেই।
ইতিপূর্বে এক প্রশ্নের জবাবে আমরা বলেছি যে, লেচিথিন, কোলেস্টেরল কিংবা এ জাতীয় অন্যান্য পদার্থ যেগুলোকে অপবিত্র উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয় সেগুলো খাদ্যে ও ঔষধে ব্যবহার করা জায়েয; যদি সে উপাদানের পরিমাণ নিতান্ত কম হয় এবং সেগুলোকে অন্য হালাল উপাদানের সাথে ব্যবহার করা হয়।
আল্লাহ্ই ভাল জানেন