আলহামদু লিল্লাহ।.
ইবাদতের বিধানগুলোর ক্ষেত্রে মূলনীতি হল– আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের দেয়া বিধানের গণ্ডিতে থেমে যাওয়া (তাওক্বীফ)। আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল আমাদেরকে যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন সেভাবে ইবাদত করা। হোক না আমরা এর হেকমত বা গূঢ় রহস্য জানতে পারি কিংবা না জানি। বিশেষতঃ নামায-রোযা-হজ্জ এর পদ্ধতির ক্ষেত্রে। এতে যুক্তির কোন স্থান নেই। এ ধরণের একটি বিষয় হচ্ছে– নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বিধান দিয়েছেন যে, দুই ঈদের নামাযের প্রথম রাকাতে তাকবীরে তাহরিমার পরে সূরা ফাতিহার আগে ৬ তাকবীর কিংবা ৭ তাকবীর বলা এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার আগে ৫ তাকবীর বলা; পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ক্ষেত্রে এ বিধান দেননি।
তাই আমাদের কর্তব্য হচ্ছে, আমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের দেয়া বিধানের প্রতি ঈমান আনব, সেটার প্রতি আত্মসমর্পণ করব। শুনব এবং মানব। কেননা এ ক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে- আনুগত্য করা; কারণ ব্যাখ্যা নয়।
ইবাদত, ইবাদতের প্রকারভেদ ও পদ্ধতি ইত্যাদি যেগুলো আল্লাহ্র সংরক্ষিত বিষয় সেগুলোতে কোন বান্দার অনধিকার চর্চা করার সুযোগ নেই। আল্লাহ্ কারো জিজ্ঞাসাবাদের পাত্র নন যে, তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে: ‘কেন এমন বিধান দেয়া হল’, ‘কেন এমনটা দেয়া হল না’, কিংবা ‘এ বিধান দেয়ার উপকারিতা কী’? বরং বান্দার কর্তব্য হচ্ছে– আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল যে বিধান জারী করেছেন সেটা জানা ও আমল করা। এরপর যদি কোন হেকমত জানা যায়, আলহামদুলিল্লাহ্। না জানলেও বান্দা আল্লাহ্র বিধানের প্রতি আত্মসমর্পণ করবে, আনুগত্য করবে এবং দৃঢ় বিশ্বাস রাখবে যে, আল্লাহ্ তাআলা কোন গূঢ় রহস্যের কারণে ও বান্দাদের কল্যাণার্থে বিধান দিয়েছেন। কেননা আল্লাহ্ তাঁর কথা, কাজ, বিধান প্রদান ও তাকদীর নির্ধারণে প্রজ্ঞাবান ও জ্ঞানী। তিনি বলেন: “নিশ্চয় আপনার রব্ব হাকীম (প্রজ্ঞাবান) ও আলীম (জ্ঞানী)।[সূরা আনআম, আয়াত: ৮৩]
আমরা যা উল্লেখ করেছি তার প্রমাণ রয়েছে আল্লাহ্র এ বাণীতে: “তোমাদের জন্য আল্লাহ্র রাসূলের মধ্যে রয়েছে অনুকরণীয় উত্তম আদর্শ।”[সূরা আহযাব, আয়াত: ২১] এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ বাণীতে: “তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ সেভাবে নামায পড়।”[সহিহ বুখারী] এবং বিদায় হজ্জকালে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ বাণীতে: “তোমরা আমার কাছ থেকে তোমাদের হজ্জের অনুষ্ঠানাদি শিখে নাও।”[সহিহ মুসলিম (৩৭৮)]
আল্লাহ্ই উত্তম তাওফিকদাতা।