আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
নারীর থেকে যে রক্তপাত হয় সেটির মূল অবস্থা হলো হায়েযের রক্ত হওয়া; যদি না সেটি ১৫দিন অতিক্রম করে। ১৫ দিন অতিক্রম করলে অধিকাংশ ফিকাহবিদদের নিকট তা ইস্তিহাযার (রোগজনিত) রক্ত। আর কারো কারো মতে, যদি মাসের বেশির ভাগ অংশ রক্ত অব্যাহত না থাকে তাহলে সেটি হায়েয; আর যদি বেশির ভাগ অংশ অব্যাহত থাকে তাহলে সেটি ইস্তিহাযা।
দুই:
হায়েযের অভ্যাসগত দিন কখনও বাড়ে, কখনও কমে; কখনও এগিয়ে আসে, আবার কখনও পিছিয়ে যায়। এ অবস্থাগুলোতে যে রক্তপাত হবে সেটা হায়েযের রক্ত, এক্ষেত্রে এর পুনরাবৃত্তি ঘটার কোন প্রয়োজন নেই— এটি আলেমদের দুটো অভিমতের মধ্যে বিশুদ্ধতম মতের ভিত্তিতে। উদাহরণস্বরূপ আপনার হায়েযের অভ্যাস সাত দিন; সেটি দশদিন পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে। তখন হুকুম দেয়া হবে যে, সবগুলো দিন হায়েয।
তিন:
‘কোপারটি’ স্থাপনের ফলে অধিকাংশ অবস্থায় মাসিকে বিশৃঙ্খলা ঘটে— দিনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, নির্ধারিত তারিখের আগে হায়েয হওয়া কিংবা হায়েযের রক্তের বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন ঘটা।
চার:
আপনার প্রশ্ন থেকে আমরা যা বুঝতে পেরেছি সেটা হলো ‘কোপারটি’ স্থাপন করার পর রমযানের দুইদিন আগে রক্তপাত শুরু হয়েছে এবং আজ পর্যন্ত (৭ ই রমযান পর্যন্ত) অব্যাহত আছে। কিন্তু ইতিপূর্বে আপনার মাসিক কতদিন হত সেটা উল্লেখ করেননি। আপনার পূর্বের যে অভ্যাস ছিল সেই সময়মত কি মাসিক হয়েছে; নাকি সে সময়মত হয়নি?
এই ভূমিকাগুলোর ভিত্তিতে: আপনার থেকে যে রক্তপাত হচ্ছে সেটি হায়েযের রক্ত হিসেবে হুকুম দেয়া হবে। তবে যদি ১৫ দিনের বেশি অব্যাহত থাকে; তখন আপনি মুস্তাহাযা (রোগী) হিসেবে গণ্য হবেন।[তবে কোন কোন আলেমের মতে, মাসের অধিকাংশ সময় রক্তপাত অব্যাহত থাকা ছাড়া আপনি মুস্তাহাযা গণ্য হবেন না]
যদি সাব্যস্ত হয় যে, আপনি ইস্তিহাযাগ্রস্ত (রোগগ্রস্ত) তাহলে আপনার অবস্থা হবে তিনটির কোন একটি:
১। যদি আপনার হায়েযের সুনির্দিষ্ট সময়সীমার কোন অভ্যাস থাকে; তাহলে আপনি আপনার সেই পূর্ব অভ্যাসের উপর নির্ভর করবেন এবং সম পরিমাণ দিনে হায়েয পালন করবেন। এরপর গোসল করে নামায পড়বেন। আপনার অভ্যাসগত দিনগুলোর অতিরিক্ত সময়ের রক্তপাত ইস্তিহাযা।
২। আর যদি আপনার এমন কোন নিয়মতান্ত্রিক অভ্যাস না থাকে তাহলে রক্তগুলোর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের শরণাপন্ন হতে হবে। হায়েযের রক্ত হলো (প্রগাঢ়) কালো রঙের, ঘন, দুর্গন্ধযুক্ত এবং সাধারণতঃ এর সাথে ব্যথা থাকে। আর ইস্তিহাযার রক্ত হলো হালকা রঙের ও পাতলা।
৩। যদি পার্থক্য নির্ণয় করা সম্ভবপর না হয়; তাহলে ছয়দিন বা সাতদিন হায়েয পালন করবেন। কেননা অধিকাংশ নারীদের এটাই হায়েযের সময়কাল। এরপর গোসল করে নামায পড়বেন।
মুস্তাহাযা (ইস্তিহাযাগ্রস্ত নারী): রোযা রাখবেন, নামায পড়বেন এবং তার সাথে সহবাস করা যাবে। প্রত্যেক ফরয নামাযের জন্য ওয়াক্ত প্রবেশ করার পর তাকে ওযু করতে হবে এবং এই ওযু দিয়ে তিনি যত ইচ্ছা নামায পড়তে পারবেন।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।