বৃহস্পতিবার 6 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 7 নভেম্বর 2024
বাংলা

মিলাদুন্নবীর মিষ্টান্ন ক্রয়ের হুকুম

প্রশ্ন

প্রশ্ন: মিলাদুন্নবীর দিন, অথবা এর আগের দিন, অথবা এর পরের দিন মিলাদুন্নবীর মিষ্টান্ন খাওয়া কি হারাম? এই মিষ্টান্ন ক্রয়ের বিধান কি? বিশেষতঃ এই মিষ্টান্ন এই দিনগুলো ছাড়া অন্য কোন সময় পাওয়া যায় না। আশা করি জবাব দিয়ে বাধিত করবেন।

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

মিলাদুন্নবী বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিবস পালন একটি বিদআত। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা তাঁর সাহাবীগণ অথবা তাবেয়ীগণ হতে এই দিবস পালনের অনুমোদনমূলক কোন উদ্ধৃতি পাওয়া যায় না। বরং এর উদ্ভব করেছে- উবাইদি শাসকগণ (এরা ফাতেমী নামে পরিচিত)। যারা আরো অনেক ভ্রান্ত আমল ও বিদআত চালু করেছিল। এই দিন পালন করা যে, বিদআত সে ব্যাপারে (10070)ও(70317)নং প্রশ্নের জবাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

দুই:

যে মিষ্টান্ন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, এমন মিষ্টান্ন খাওয়া ও ক্রয় করা ইসলামি আইনেজায়েয; যদি না এর মধ্যে শরিয়ত গর্হিত কোন কাজে সহযোগিতা করা, এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা বা প্রসার করার বিষয় না থাকে। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে, মিলাদুন্নবীর মৌসুমে এই মিষ্টান্ন ক্রয় করা মিলাদুন্নবী পালনকে সহযোগিতা করা ও প্রসার করার নামান্তর। বরং এই মিষ্টান্ন ক্রয় এ দিবসকে ঈদ (উৎসব) হিসেবে পালনতুল্য। কেননা উৎসব হচ্ছে- প্রথাগতভাবে মানুষ কোন কিছু পালন করে আসা। সুতরাং মানুষ যদি শুধু ঈদ উপলক্ষেএ মিষ্টান্ন তৈরী করে থাকে এবং খেয়ে থাকে অন্য দিনগুলোতে না-করে থাকে তাহলে এই মিষ্টান্ন ক্রয়বিক্রয় করা, খাওয়া বা হাদিয়া পাঠানো ইত্যাদি এ দিবসকে ঈদ হিসেবে পালনের নামান্তর। এ কারণে এগুলো পরিহার করাই বাঞ্ছনীয়।

ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া সংকলনে ভালবাসা দিবস পালন, ভালবাসা দিবসে ভালবাসা চিহ্ন অংকিত লাল রঙের মিষ্টান্ন ক্রয়ের বিধান সম্পর্কে এসেছে- “কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট দলিল ও মুসলমানদের ইজমার ভিত্তিতে জানা যায় যে, ইসলামে উৎসব শুধু দুটি- ঈদুল ফিতর (রোযা ভঙ্গের উৎসব) ও ঈদুল আযহা (পশু উৎসর্গের উৎসব)। এ দুটি ছাড়া আর যত উৎসব আছে সেটা কোন ব্যক্তির সাথে, কোন গোষ্ঠীর সাথে, কোন ঘটনার সাথে বা বিশেষ কোন ভাবাবেগের সাথে সংশ্লিষ্ট হোক না কেন সেটা বিদআতি (নবউদ্ভাবিত) উৎসব। এ ধরনের কোন উৎসব পালন করা, পালনে সম্মতি দেয়া বা কোনভাবে সহযোগিতা করা অথবা সেই দিনে খুশি প্রকাশ করা কোন মুসলমানের জন্য জায়েয নয়। কেননা এটি আল্লাহর সীমারেখার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমারেখা লঙ্ঘন করে সে নিজের উপর নিজেই জুলুমকারী। এই উৎসবে অথবা এ ধরনের অন্য কোন হারাম উৎসবে কোনভাবে সহযোগিতা করা মুসলমানদের জন্য হারাম। সেটা যে ধরনের সহযোগিতা হোক না কেন; যেমন খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা, ক্রয়বিক্রয় করা, জিনিসপত্র প্রস্তুত করা, উপঢৌকন প্রদান করা, পত্র বিনিময় করা, প্রচার-প্রচারণা চালানো ইত্যাদি। কারণ এ ধরনের সহযোগিতা পাপ-কাজে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতার ক্ষেত্রে সহযোগিতার মধ্যে গণ্য। “সৎকর্ম ও আল্লাহভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ০২]” সমাপ্ত।

আল্লাহই ভাল জানেন।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ