আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
ইসলামের ব্যাপারে আমার কিছু সংশয় আছে। আপনি কি সেগুলো আমাকে স্পষ্ট করে দিতে পারবেন? যিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী তার জন্য দ্বীন ইসলামের অনুসারী নয় এমন কাউকে বিবাহ করা কি বৈধ? এমনকি যদি সে বিবাহ করার পরও ইসলাম গ্রহণ না করে?
আলহামদু লিল্লাহ।.
মুসলিম পুরুষের জন্য অমুসলিম নারীকে বিবাহ করা হালাল; যদি ঐ অমুসলিম নারী খ্রিষ্টান বা ইহুদী হয়। কিন্তু এই দুই ধর্মের বাহিরে অন্য কোনো ধর্মের অমুসলিম নারীকে বিবাহ করা হালাল নয়। এর পক্ষে দলীল হল আল্লাহর বাণী: “আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ বৈধ করা হল। কিতাবধারীদের খাদ্য তোমাদের জন্য বৈধ এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য বৈধ। স্বাধীনা (কিংবা সতী-সাধ্বী) মুসলিম নারীগণ ও তোমাদের পূর্বের কিতাবধারীদের স্বাধীনা (কিংবা সতী-সাধ্বী) নারীগণও (তোমাদের জন্য বৈধ); যদি তোমরা তাদেরকে মোহরানা দিয়ে বিয়ে কর; অবৈধ যৌনকর্ম কিংবা বান্ধবী গ্রহণের জন্য নয়।” [সূরা মায়েদা: ৫]
ইমাম ত্বাবারী উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন: “তোমাদের পূর্বের কিতাবধারীদের স্বাধীনা নারীগণ” অর্থাৎ যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের স্বাধীনা নারীগণ। তারা হলো ইহুদী ও খ্রিস্টানেরা, যারা তোমাদের পূর্বে প্রেরিত তাওরাত ও ইঞ্জিলে যা আছে সে ধর্ম অনুসরণ করে। আরবদের মধ্যে ও অপরাপর মানুষদের মধ্যে যারা মুহাম্মদের প্রতি ঈমান এনেছো তোমরা এ নারীদেরকেও বিবাহ করতেও পার “যদি তোমরা তাদেরকে মোহরানা দিয়ে বিয়ে কর” অর্থাৎ যদি তোমরা তোমাদের নারীদের মধ্য থেকে কিংবা তাদের নারীদের মধ্য থেকে যাকে বিয়ে করেছ তাকে মোহরানা প্রদান কর।[তাফসিরে ত্বাবারী ৬/১০৪)]
কিন্তু মুসলিম পুরুষের জন্য অগ্নিপূজারী, সাম্যবাদী, পৌত্তলিক নারী কিংবা তাদের অনুরূপ কোনো নারীকে বিবাহ করা হালাল নয়।
এর পক্ষে দলীল হল আল্লাহর বাণী: “তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। ঈমানদার ক্রীতদাসীও মুশরিক নারীর চেয়ে উত্তম; যদি সে নারী তোমাদেরকে অভিভূত করে তবুও ...” [বাকারা: ২২১]
মুশরিক নারী হলো ঐ পৌত্তলিক নারী যে পাথরের পূজা করে, হোক সে আরব কিংবা অনারব।
মুসলিম নারীর জন্য অন্য ধর্মের অমুসলিম পুরুষকে বিবাহ করা হালাল নয়। সেটা ইহুদী-খ্রিষ্টান হোক কিংবা অন্য ধর্মের কাফের হোক। তার জন্য ইহুদী, খ্রিষ্টান, অগ্নিপূজারী, সাম্যবাদী, পৌত্তলিক বা অন্য ধর্মীয় কারো সাথে বিবাহে আবদ্ধ হওয়া হালাল নয়।
এর পক্ষে দলীল হল আল্লাহর বাণী: “আর মুশরিকদের কাছে তোমরা (মেয়েদের) বিয়ে দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। ঈমানদার ক্রীতদাসও মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম; যদি মুশরিক পুরুষ তোমাদেরকে মুগ্ধ করে তবুও। ওরা (মুশরিকরা) জাহান্নামের দিকে ডাকে; আর আল্লাহ তাঁর বিধান দিয়ে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে ডাকেন এবং তাঁর বিধানসমূহ মানুষকে বুঝিয়ে দেন, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।” [বাকারা: ২২১]
ইমাম ত্বাবারী বলেন: আল্লাহর বাণী “আর মুশরিকদের কাছে তোমরা (মেয়েদের) বিয়ে দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। ঈমানদার ক্রীতদাসও মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদি মুশরিক পুরুষ তোমাদেরকে মুগ্ধ করে তবুও।” –এর দ্বারা আল্লাহ বুঝিয়েছেন: আল্লাহ মুমিন নারীদের জন্য মুশরিক পুরুষকে বিবাহ করা হারাম করেছেন। সেই মুশরিক যে ধরনের শির্ক করে থাকুক না কেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরা তাদের কাছে বিয়ে দিও না। কারণ এটা তোমাদের জন্য হারাম। তোমরা তাদেরকে আল্লাহ্, আল্লাহ্র রাসূল ও রাসূলের আনীত বিষয়ের প্রতি ঈমানদার দাসের কাছে বিয়ে দেয়া একজন স্বাধীন মুশরিকের কাছে বিয়ে দেয়ার চেয়ে উত্তম; এমনকি সেই মুশরিক যদি অভিজাত, উচ্চ বংশের হয়, তার বংশ মর্যাদা ও কৌলিন্য তোমাদেরকে মুগ্ধ করে তবুও।
কাতাদা ও যুহরী উভয়ে আল্লাহর বাণী: “মুশরিকদের কাছে তোমরা (মেয়েদের) বিয়ে দিও না” এর ব্যাপারে বলেন: আপনার ধর্মের বাহিরে কোনো ইহুদী, খ্রিষ্টান বা মুশরিক পুরুষের কাছে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া আপনার জন্য বৈধ নয়।[তাফসীরুত তাবারী (২/৩৭৯)]