আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
আমি একবার এক হালাকাতে শুনেছি যে, বই ফেরত দিতে দেরী করলে লাইব্রেরী কর্তৃক যে জরিমানা ধার্য্য করা হয় সেটা সুদ। এটি কি সঠিক? যদি লাইব্রেরীর জরিমানা সুদ হয় তাহলে লাইব্রেরীর কার্ড পাওয়ার জন্য গ্রাহক হওয়া ও সেবাগুলো ব্যবহার করা কি সুদভিত্তিক ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক হওয়ার মত? এমনকি বইগুলো যদি যথাসময়ে ফেরত দেওয়া হয় তবুও? ইতিপূর্বে আমি লাইব্রেরী থেকে যে বইগুলো ধার নিয়েছি সে গুলোর জরিমানা পরিশোধের ব্যাপারে কি করা আবশ্যক? এবং ঋণের সাথে সম্পৃক্ত জরিমানা পরিশোধের ব্যাপারে? আমি কি লাইব্রেরীর সেবা গ্রহণ অব্যাহত রাখতে পারি; যেহেতু যে বইগুলো আমি পড়তে চাই সেগুলো সব বই কেনা কঠিন?
আলহামদু লিল্লাহ।.
বই ধার নিতে কোন অসুবিধা নেই। তবে, নির্ধারিত সময়ে ফেরত দেওয়া আবশ্যকীয়। যে ব্যক্তি কোন ওজর ছাড়া বিলম্ব করবে সে গুনাহগার হবে। বিলম্ব করার কারণে তাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে বাধ্য করা জায়েয। এটি হচ্ছে অতিরিক্ত সময়ে বই থেকে উপকৃত হওয়ার চার্জ।
এ চার্জের ব্যাপারে যদি শুরু থেকেই চুক্তি থাকে তাহলে কোন সমস্যা নেই। যেমন বলে দেওয়া হল: বই ফেরত দিতে দেরী করলে প্রতিদিনের বদলে এই পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যদি শুরুতে এ চার্জ নির্দিষ্ট করা না হয় সেক্ষেত্রে সমতুল্য চার্জ দিতে বাধ্য করা হবে।
‘কাশ্শাফুল ক্বিনা’ গ্রন্থে (৪/৬৪) বলেন: বিশেষ কোন স্থানে যাওয়ার জন্য কোন একটি বাহন ভাড়া করা জায়েয আছে। কেউ যদি ঐ স্থানের চেয়ে বেশি দূর চড়ে তাহলে সে সীমালঙ্ঘন করল। কেননা সেটি মালিকের অনুমতি ছাড়া করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে মালিককে অতিরিক্ত চড়ার জন্য সমতূল্য ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
শাইখ বিন বায (রাঃ) কে কিছু কিছু মসজিদে বই ভাড়া দেওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় যে, এই শর্তে ভাড়া দেওয়া হয় যে, বই ফেরত দিতে নির্দিষ্ট সময়ের পরে দেরী করলে প্রতিদিনের বদলে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক জরিমানআ পরিশোধ করতে হবে; যে জরিমানার অর্থ মসজিদের জন্য কিংবা মসজিদের স্বার্থে খরচ করা হবে—এটা কি জায়েয হবে, ইয়া শাইখ?
জবাব: হ্যাঁ; কেননা এটি অর্থের বিনিময়ে সেবা শ্রেণীয়। যদি দেরী করে তাহলে চার্জ দিয়ে, সমতুল্য চার্জ দিয়ে দেরী করবে। অর্থাৎ সে যদি নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় বইটি থেকে উপকৃত হয়। আমি এতে কোন অসুবিধা জানি না। যেহেতু এতে শর্ত পূর্ণ করার প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করণ রয়েছে এবং অবহেলাবশতঃ বইটি যেন ধারগ্রহীতার কাছে থেকে না যায়। সে যদি ৫ দিন কিংবা ৬ দিন কিংবা এত এত দিনের জন্য বইটি ধার নেয় এরপর বইটি ফেরত দিতে এর চেয়ে বেশি সময় দেরী করে তাহলে তাকে এত এত দিতে হবে। ইনশাআল্লাহ্, এতে কোন অসুবিধা নেই। বরং কল্যাণ অনেক বড়।[ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব (১১/২৯৬) থেকে সমাপ্ত]
এ আলোচনার ভিত্তিতে পরিস্কার হয়ে গেল যে, ধারকৃত বই ফেরত দিতে দেরী করার জরিমানা সুদ নয়। কেননা এ জরিমানা কোন ঋণের বিপরীতে নয়। বরং সেটি ধারকৃত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় বইটি ব্যবহার করার চার্জ।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।