Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

কবিরা গুনাহ করলে কি রোযা নষ্ট হয়ে যাবে

20-07-2015

প্রশ্ন 37877

আল্লাহ তাআলা কি সে ব্যক্তির রোযা কবুল করবেন; যে ব্যক্তির ইনভেস্টমেন্ট সার্টিফিকেট রয়েছে। সুদি ব্যাংকে তার শেয়ারের লেনদেন রয়েছে, তাকে সুদি কারবারি ধরা হয়; নাকি তার রোযা কবুল করবেন না?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৮]

এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর বান্দাগণের প্রতি আহ্বান যেন তারা সুদ ত্যাগ করে, সুদ থেকে দূরে থাকে। কেননা আল্লাহ সুদকে হারাম করেছেন, “ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন; আর সুদকে হারাম করেছেন” [সূরা বাকারা, আয়াত: ২৭৫]

সুদ ভক্ষণ মুসলমানদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত হওয়ার অন্যতম কারণ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি তোমরা আইনা ব্যবসা কর, কৃষিকাজ নিয়ে সন্তুষ্ট থাক, গরুর লেজ ধরে থাক এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা ছেড়ে দাও; তাহলে আল্লাহ তোমাদের উপর এমন জিল্লতি চাপিয়ে দিবেন, যে জিল্লতি থেকে তোমাদেরকে মুক্ত করবেন না; যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর দ্বীনের দিকে ফিরে আস।” [সুনানে আবু দাউদ (৩৪৬২); আলবানি ‘সিলসিলা সহিহা’ গ্রন্থে (১১) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

সুদি ব্যাংকের শেয়ার এর ব্যাপারে ইতোপূর্বে বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

দেখুন 8590112445 নং প্রশ্নোত্তর।

তবে যে ব্যক্তি কোন কবিরা গুনাতে লিপ্ত হয়েছে- যেমন সুদি ব্যাংকের শেয়ার কেনা- এমন ব্যক্তি রোযা রাখলে তার শরয়ি দায় খালাস হবে; তবে এতে কমতি থাকবে। হতে পারে সে ব্যক্তি রোযা রাখার সওয়াব পাবে না। আল্লাহ তাআলার এ বাণীটি একটু ভেবে দেখুন তো, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়াবানহতে পার।”[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩] এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা রোযা ফরজ করার উদ্দেশ্য উল্লেখ করে দিয়েছেন, সেটা হচ্ছে- আল্লাহর নির্দেশ পালন ও নিষেধগুলো বর্জনের মাধ্যমে আল্লাহভীতি বা তাকওয়া অর্জন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা ও মিথ্যা কর্ম ত্যাগ করল না; তার পানাহার ত্যাগ করা তে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” [সহিহ বুখারি (১৯০৩)] অর্থাৎ রোযার মাধ্যমে আল্লাহর উদ্দেশ্য এটা নয় যে, আমরা পানাহার থেকে উপবাস করব; বরং আল্লাহর উদ্দেশ্য হচ্ছে- আমরা আল্লাহকে ভয় করব। যেহেতু আল্লাহ বলেছেন, “যেন তোমরা তাকওয়াবানহতে পার”। [দেখুন ‘আল-শারহুল মুমতি (৬/৪৩৫)]

হাফেয ইবনে হাজার বলেন, হাদিসের বাণী: “قول الزور والعمل به” এর মধ্যে قول الزور দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- মিথ্যা কথা; আর والعمل به বা মিথ্যাকর্ম দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- মিথ্যার দাবীর অনুযায়ী কাজ করা।

ইবনুল আরাবী বলেন, এ হাদিসের দাবী হচ্ছে- হাদিসে যে পাপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে ব্যক্তি এ পাপ করবে সে রোযার সওয়াব পাবে না। অর্থাৎ দাঁড়িপাল্লাতে রোযার সওয়াব মিথ্যা ও মিথ্যাকর্মের গুনাহর চেয়ে হালকা।

বায়যাবী (রহঃ) বলেন, নিরেট ক্ষুধার্ত বা পিপাসার্ত থাকা রোযা ফরজ করার উদ্দেশ্য নয়; বরং রোযা ফরজ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে- রোযা রাখার মাধ্যমে যৌন চাহিদাকে প্রশমিত করা, নফসে আম্মারাকে নফসে মুতমাইন্নাহর অনুগত করা। যদি এটি হাছিল না হয় তাহলে আল্লাহ তাআলা রোযার প্রতি কবুলের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।

এ হাদিসটি দিয়ে দলিল দেয়া হয়ে থাকে যে, এ পাপগুলো রোযাকে অসম্পূর্ণ রাখবে।[ফাতহুল বারী থেকে সমাপ্ত]

রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান