আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।
আমি দুই মাসের গর্ভবতী। রমযান মাসে আমার বমি হয়। কখনও কখনও মাগরিবের কিছু সময় আগেও বমি হয়। কখনও কখনও আমি অনুভব করি যে, বমি আমার গলার ভেতরে ফিরে যাচ্ছে। এর হুকুম কী?
আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
আলেমদের মাঝে এ ব্যাপারে কোন মতভেদ নাই যে, ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা রোযা ভঙ্গের কারণ। আর কারো যদি বমি এসে যায় তাহলে তার রোযা ভঙ্গ হবে না।[এটি উল্লেখ করেছেন আল-খাত্তাবী ও ইবনুল মুনযির। দেখুন: আল-মুগনী (৪/৩৬৮)]
সুন্নাহ থেকে এর দলিল হচ্ছে তিরমিযি (৭২০)-এর সংকলিত আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিস: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তির বমি এসে গেছে তার উপর কাযা নেই। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করেছে তাকে কাযা পালন করতে হবে।"[আলবানী সহিহুত তিরমিযি গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ আখ্যায়িত করেছেন]
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া "আল-ফাতাওয়া" গ্রন্থে (২৫/২৬৬) বলেন: আর বমি: যদি কেউ নিজে থেকে বমি করে তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে। আর যদি কারো বমি এসে যায় তাহলে তার রোযা ভাঙ্গবে না।[সমাপ্ত]
শাইখ বিন বায (রহঃ) কে এমন ব্যক্তির হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় রোযা অবস্থায় যার বমি হয়ে গেছে তাকে কি ঐ দিনের রোযার কাযা পালন করতে হবে?
জবাবে তিনি বলেন: তার উপর কাযা পালন নেই্। যে ব্যক্তি নিজে থেকে বমি করেছে তাকে কাযা পালন করতে হবে। তিনি পূর্বোক্ত হাদিস দিয়ে দলিল দেন।[সমাপ্ত]
শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) কে রমযান মাসে বমি করলে রোযা ভাঙ্গবে কিনা— এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে জবাবে তিনি বলেন: যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে তাহলে তার রোযা ভেঙ্গে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি এসে যায় তাহলে রোযা ভাঙ্গবে না। দলিল হচ্ছে আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদিস। (তিনি পূর্বোক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেন।)
অতএব, যদি আপনার বমি হয়ে যায় তাহলে আপনার রোযা ভঙ্গ হবে না। এমনকি কেউ যদি তার পাকস্থলিতে অস্বাভাবিকতা অনুভব করে এবং কিছু বের হয়ে আসবে এমন অনুভব করে; সে ক্ষেত্রে আমরা কি বলব যে, সেটাকে আটকিয়ে রাখা আপনার উপর ওয়াজিব? উত্তর: না। কিংবা সেটাকে টেনে আনা? উত্তর: না। কিন্তু আমরা বলব: আপনি নিরপেক্ষ অবস্থান নিন। বমিকে টেনে আনবেন না; প্রতিরোধও করবেন না। যদি আপনি বমিকে টেনে আনেন তাহলে আপনার রোযা ভেঙ্গে যাবে। যদি প্রতিরোধ করে রাখেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। যদি আপনার কোন তৎপরতা ছাড়া বমি বের হয়ে আসে তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের কোন ক্ষতি হল না এবং আপনার রোযাও নষ্ট হল না।[সমাপ্ত]
দুই:
যদি বমির কিছু অংশ ব্যক্তির অনিচ্ছা সত্ত্বেও পেটে চলে যায় তাহলে তার রোযা শুদ্ধ হবে। কেননা তার ইখতিয়ার ছাড়াই সেটা চলে গেছে।
ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: এমন রোযাদার সম্পর্কে যে ব্যক্তির বমি এসেছে এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে সে বমি গিলে ফেলেছে— তার হুকুম কী?
জবাবে তারা বলেন: যদি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে তাহলে তার রোযা নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি বমি চলে আসে তাহলে তার রোযা নষ্ট হবে না। অনুরূপভাবে যেহেতু অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি গিলে ফেলেছে তাই রোযা নষ্ট হবে না।[সমাপ্ত]