শুক্রবার 8 রবীউছ ছানী 1446 - 11 অক্টোবর 2024
বাংলা

যে ব্যক্তি জীবনকে ঘৃণা করে মরে যেতে চায়

প্রশ্ন

শরিয়তে এমন ব্যক্তির হুকুম কি যে ব্যক্তি জীবনকে প্রচণ্ড ঘৃণা করে আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করেছে যে, যদি মৃত্যু তার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে আল্লাহ্‌ যেন তাকে মৃত্যু দেন এবং সে মৃত্যুর অপেক্ষায় আছে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

কোন মুসলিমের জন্য জীবনকে ঘৃণা করা এবং আল্লাহ্‌র কাছে যে বিপদমুক্তি ও কল্যাণ রয়েছে তা থেকে নিরাশ হওয়া জায়েয নয়। তার কর্তব্য হল আল্লাহ্‌ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত তাকদীরের পরিপ্রেক্ষিতে সে যা কিছুর মুখোমুখি হচ্ছে সেক্ষেত্রে ধৈর্য ধারণ করা এবং বিপদ-মুসিবতগুলোকে সওয়াব-প্রাপ্তির উপকরণ হিসেবে গ্রহণ করা। আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করা যেন তিনি তার থেকে বিপদ-আপদ দূর করে দেন, তাকে  সাহায্য করেন, তার জন্য যে তাকদীর নির্ধারণ করে রেখেছেন সেটাতে যেন তাকে প্রতিদান দেন এবং আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে বিপদমুক্তির অপেক্ষা করা।

আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি। নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে[সূরা আন্‌-নাশর, আয়াত: ৫-৬]

কোন মুসলিমের উপর কোন অনিষ্ট অবতীর্ণ হওয়া, যেমন- রোগ, দুনিয়াবী সংকট বা অন্য কিছু, ইত্যাদির কারণে মৃত্যু কামনা করা মাকরুহ।

সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:"অবশ্যই তোমাদের কেউ যেন কোন অনিষ্ট নাযিলের কারণে মৃত্যু কামনা না করে। যদি কামনা করতেই চায় তাহলে সে যেন বলে: হে আল্লাহ্‌! যতদিন বেঁচে থাকা আমার জন্য কল্যাণকর হয় ততদিন আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন। আর যদি মৃত্যু আমার জন্য ভালো হয় তাহলে আমার মৃত্যু দিন" উল্লেখিত হাদিসে যেভাবে দোয়া করতে বলা হয়েছে এর মধ্যে তাকদীরের প্রতি এক ধরণের সোপর্দ করা ও সমর্পন রয়েছে। কোন মুসলিম এ দুনিয়াতে যে বিপদ-মুসিবতের শিকার হয় এগুলো তার জন্য কাফ্‌ফারা (গুনাহ মোচন); যদি বান্দা এর বিনিময়ে আল্লাহ্‌র কাছে সওয়াবপ্রাপ্তির নিয়ত করে এবং অসন্তুষ্টি প্রকাশ না করে। বিপদ-মুসিবতের মধ্যে গাফলতি থেকে অন্তরের জাগরণ ও ভবিষ্যতের জন্য নসিহত রয়েছে।

আল্লাহ্‌ই তাওফিকাদাতা, আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি, তাঁর সাহাবীবর্গ ও পরিবার-পরিজনের প্রতি আল্লাহ্‌র রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক।[সমাপ্ত]

শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায, শাইখ আব্দুল আযিয আলে শাইখ, শাইখ সালেহ আল-ফাওযান, শাইখ বকর আবু যায়েদ।

[গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (২৫/৩৯৮)]

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব