আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
প্রশ্নকারী বোন, সম্ভবতঃ আপনি জানেন বর্তমান পৃথিবীর সকল জাতি, মুসলিম বা কাফের সবাই ধুমপানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। যেহেতু তারা ধুমপানের কঠিন ক্ষতি সম্পর্কে অবগত। যা কিছু ক্ষতিকর ইসলাম সেটাকে হারাম করে। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা ক্ষতি করা কোনটা নয়”। নিঃসন্দেহে পানীয় ও খাবার-দাবারের মধ্যে কিছু রয়েছে উপকারী ও ভাল। আর কিছু রয়েছে ক্ষতিকর ও মন্দ। আল্লাহ্ তাআলা তাঁর নবীর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন: “তিনি ভাল জিনিসসমূহ তাদের জন্য হালাল করেন এবং মন্দ জিনিসসমূহ তাদের জন্য হারাম করেন”। ধুমপান কি ভাল জিনিস; নাকি মন্দ জিনিস?
দুই:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আরও উদ্ধৃত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্ অর্বাচীন কথাবার্তা, অধিক প্রশ্ন করা ও সম্পদ নষ্ট করা থেকে বারণ করেছেন।” এবং আল্লাহ্ তাআলা সম্পদ অপচয় থেকে নিষেধ করে বলেন: “তোমরা খাও ও পান কর। কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।” এবং তিনি রহমানের বান্দাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন: “যারা যখন দান করে তখন অপচয় করে না এবং কৃপণতাও করে না। বরং তাদের দান হয় ভারসাম্যপূর্ণ।” বর্তমানে গোটা বিশ্ব জানে যে, ধুমপানের পিছনে ব্যয়কৃত অর্থ সম্পদ নষ্ট করার নামান্তর; যাতে কোন প্রকার উপকার নেই। বরং ক্ষতির পিছনে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। পৃথিবীতে ধুমপানের পিছনে যত অর্থ ব্যয় হচ্ছে যদি সে অর্থগুলো সঞ্চয় করা সম্ভব হত তাহলে এ অর্থ দিয়ে ক্ষুধাগ্রস্ত অনেক জাতিকে রক্ষা করা যেত। কোন ব্যক্তি যদি একটি ডলার হাতে নিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় তার জন্য কোন আফসোস করার আছে? এই ব্যক্তির মধ্যে ও ধুমপায়ীর মধ্যে পার্থক্য কী? বরং ধুমপায়ীর নির্বুদ্ধিতা আরও বেশি জঘন্য। কারণ যে ব্যক্তি ডলার পোড়াচ্ছে তার নির্বুদ্ধিতা পোড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু ধুমপায়ী অর্থ পোড়াচ্ছে এবং নিজের শারীরিক ক্ষতি করছে।
তিন:
কত দুঘর্টনার কারণ হচ্ছে ধুমপান। সিগারেটের যে গোড়াটি ফেলে দেয়া হয় এটি কত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর কারণে গোটা বাড়ী বাড়ীর লোকজনসহ পুড়ে শেষ হয়ে গেছে; কেবল বাড়ীর মালিকের ধুমপানের কারণে। গ্যাস লিক হচ্ছিল আর এর মধ্যে সে ব্যক্তি সিগারেট ধরিয়েছিল।
চার:
ধুমপানের ধোয়ায় কত মানুষ কষ্ট পায়। বিশেষতঃ মসজিদে আপনার পাশে যদি কোন ধুমপায়ী দাঁড়ায়। সম্ভবতঃ ধুমপায়ী ঘুম থেকে উঠার পর তাদের মুখের দুর্গন্ধ সহ্য করার চেয়ে অন্য সব দুর্গন্ধ সহ্য করা অনেক সহজ। তাই সেসব নারীদের জন্য বিস্ময়; তারা কিভাবে তাদের স্বামীদের মুখের দুর্গন্ধ সহ্য করে যাচ্ছেন!! যে ব্যক্তি রসুন কিংবা পেঁয়াজ খেয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে নামাযের জন্য মসজিদে হাযির হতে নিষেধ করেছেন; যাতে করে সে ব্যক্তি দুর্গন্ধ দিয়ে মুসল্লিদেরকে কষ্ট না দেয়। অথচ পেঁয়াজ ও রসুনের দুর্গন্ধ ধুমপায়ী ও তার মুখের দুর্গন্ধের কাছে কিছু না।
এই হচ্ছে কিছু কারণ যেগুলোর প্রেক্ষিতে ধুমপান হারাম করা হয়েছে।