শুক্রবার 21 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 22 নভেম্বর 2024
বাংলা

তাওয়াফের সময় কি বলবেন?

প্রশ্ন

এই দোয়াগুলো একজন উমরাপ্রেমী সংকলন করেছেন। তিনি এগুলো উমরাকারীদের মাঝে বিলি করতে চাচ্ছিলেন। তিনি আপনাদের কাছ থেকে এর মধ্যে কোনটি সঠিক কোনটি ভুল তা জানার জন্য থেমে গেছেন। এ যিকিরগুলোর মধ্যে রয়েছে যা উমরাকারীর প্রয়োজন: তাওয়াফকালে যা বলতে হয়, আল্লাহ্‌র হামদ ও স্তুতি দিয়ে প্রথম চক্কর শুরু করা, এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ পড়া। এরপর দোয়া করা; মনোযোগ দিয়ে দ্বীনী দোয়াকে দুনিয়াবী দোয়ার উপর প্রাধান্য দেয়া।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

আমাদের জানামতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে তাওয়াফকালে পঠিতব্য কোন দোয়া বা যিকির নাই; রুকনে ইয়ামেনী ও হাজারে আসওয়াদের মাঝে

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

দোয়াটি ছাড়া [মুসনাদে আহমাদ (৩/৪১১), সহিহ ইবনে হিব্বান (৯/১৩৪), মুস্তাদরাকে হাকেম (১/৬২৫)]

এবং হাজারে আসওয়াদ অতিক্রমকালে তাকবীর দেয়া ছাড়া।[সহিহ বুখারী (৪৯৮৭)]

পক্ষান্তরে অবশিষ্ট তাওয়াফে যিকির, দোয়া ও কুরআন তেলাওয়াত যে কোনটা করার এখতিয়ার রয়েছে।

ইবনে কুদামা ‘আল-মুগনী’ (৩/১৮৭) গ্রন্থে বলেন:

“তাওয়াফের মধ্যে দোয়া করা, বেশি বেশি আল্লাহ্‌র যিকির করা মুস্তাহাব। কেননা যিকির সর্বাবস্থায় মুস্তাহাব। আর এই ইবাদত পালনকালে সেটি আরও বেশি উত্তম। এ সময় আল্লাহ্‌র যিকির কিংবা কুরআন তেলাওয়াত কিংবা সৎ কাজের আদেশ কিংবা অসৎ কাজের নিষেধ কিংবা যা না হলে নয় এমন কিছু ছাড়া অন্য কোন কথাবার্তা না-বলা মুস্তাহাব।”[সমাপ্ত]

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন যেমনটি মাজমুউল ফাতাওয়াতে এসেছে (২৬/১২২): “তাতে (অর্থাৎ তাওয়াফে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নির্দিষ্ট কোন যিকির নেই; না তাঁর নির্দেশের মাধ্যমে, না তাঁর কথার মাধ্যমে, না তাঁর শিক্ষাদানের মাধ্যমে। বরং তিনি তাতে শরিয়তে উদ্ধৃত সকল দোয়া দিয়ে দোয়া করতেন। অনেক মানুষ মীযাবের নীচে পঠিতব্য যে নির্দিষ্ট দোয়ার কথা উল্লেখ করে কিংবা এ জাতীয় অন্য যেগুলোর কথা বলে সে সবের কোন ভিত্তি নেই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই রুকনের মাঝে তাওয়াফ শেষ করতেন

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

এ দোয়াটি বলে। যেমনিভাবে তিনি তার সকল দোয়া এর মাধ্যমে শেষ করতেন। ইমামদের সর্বসম্মতিক্রমে এর মধ্যে কোন ওয়াজিব দোয়া নেই।”[সমাপ্ত]

শাইখ ইবনে উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি যখনই হাজারে আসওয়াদে আসতেন তখন তাকবীর দিতেন এবং রুকনে ইয়ামেনী ও হাজারে আসওয়াদের মধ্যে বলতেন:

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছ থেকে তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করে পঠিতব্য বিশেষ কোন দোয়া বর্ণিত হয়নি।

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে, তাওয়াফকারী দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের যে দোয়া ইচ্ছা সে দোয়া করতে পারেন। শরিয়তসম্মত যে কোন যিকির যেমন সুবহানাল্লাহ্‌ বলা, আলহামদু লিল্লাহ্‌ বলা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা কিংবা কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি করতে পারেন।”[সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত]

[মাজমুউল ফাতাওয়া (২৪/৩২৭)]

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব