শুক্রবার 21 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 22 নভেম্বর 2024
বাংলা

রমজান মাসে দিনের বেলা শারীরিক মিলন সংক্রান্ত ৬টি মাস্‌য়ালা

প্রশ্ন

 

এটি কারো অজানা নয় যে, যে ব্যক্তি রমজান মাসে দিনের বেলায় তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে, তার কাফ্‌ফারা হল- একজন দাস মুক্ত করা অথবা (তা না পারলে) একটানা দুই মাস রোযা রাখা অথবা (তা না পারলে) ৬০ জন মিসকীনকে খাওয়ানো। প্রশ্ন হল-
১- যে ব্যক্তি রমজান মাসের ভিন্ন ভিন্ন দিবসে নিজের স্ত্রীর সাথে একাধিকবার সহবাস করেছে, তাকে কি সহবাসকৃত প্রতিটি দিবসের পরিবর্তে দুই মাস করে রোযা পালন করতে হবে? নাকি যতদিন সহবাস করুক না কেন শুধু দুই মাস রোযা রাখা যথেষ্ট?
২- উপরে উল্লেখিত কাফ্‌ফারার হুকুম না জেনে কেউ যদি (রমজানের দিনের বেলায়) স্ত্রী-সহবাস করে (তার বিশ্বাস ছিল সে যেদিন সহবাস করবে শুধু সেই দিনের বদলে একদিনের রোযা কাযা করতে হবে) তবে সে ব্যক্তির ব্যাপারে হুকুম কি?
৩- স্বামীর ন্যায় স্ত্রীর উপরও কি একই হুকুম বর্তাবে?
৪- খাবার খাওয়ানোর বদলে কি অর্থ প্রদান করা জায়েয?
৫- স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের পক্ষ থেকে শুধু একজন মিসকীনকে খাওয়ালে চলবে কি?
৬- যদি খাওয়ানোর মত কাউকে না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে কোন দাতব্য সংস্থাকে খাদ্যের মূল্য প্রদান করা যাবে কি না। যেমন- রিয়াদের আল-বির্‌র দাতব্য সংস্থা বা এ ধরনের অন্য কোন দাতব্য সংস্থা?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

যে ব্যক্তির উপর রোযা পালন করাফরয:

এক:
তিনি যদি তার স্ত্রীর সাথে রমজানেরকোনএকদিবসেএকবার বা একাধিকবার সহবাস করেনতবে তার উপর একবার কাফ্‌ফারা আদায় করা আবশ্যক হবে; যদি তিনি প্রথমবার সহবাস করার পর কাফ্‌ফারা আদায় না করে থাকেন। আর যদি তিনি কয়েকদিন দিবাভাগে সহবাস করেথাকেনতবে তাকে সম সংখ্যক দিনের কাফ্‌ফারাআদায় করতে হবে।

দুই:
তার উপর শারীরিক মিলনের কাফ্‌ফারা আদায় করাফরয যদিও তিনি এই ব্যাপারে অজ্ঞ থেকে থাকেন।

তিন:
সহবাস করার ক্ষেত্রে স্ত্রী যদি স্বামীকে সম্মতি দেয়তাহলে স্ত্রীর উপরও কাফ্‌ফারা ফরয হবে। আর যদি স্বামী জোরপূর্বক স্ত্রীরসাথেসহবাসকরে তাহলে স্ত্রীর উপর কোন কিছু ফরয হবে না।

চার:
খাদ্য খাওয়ানোর বদলে সমমূল্য অর্থ প্রদান করা জায়েয নয়।খাওয়ানোর পরিবর্তে অর্থ প্রদান করলে এতে অর্পিত দায়িত্ব পালন হবে না।

পাঁচ:
একজন মিসকীনকে তার পক্ষ থেকে অর্ধ স্বা‘ও তার স্ত্রীর পক্ষ থেকে অর্ধ স্বা‘খাওয়ানো জায়েয।এতে তাদের দুইজনের পক্ষ থেকে ৬০ জন মিসকীনের একজনকে খাওয়ানো হয়েছে বলে গণ্য হবে।

ছয়:
কাফ্‌ফারার সবগুলো খাদ্য শুধু একজন মিসকীনকে প্রদান করা জায়েয নয়।অনুরূপভাবে আল-বির্‌র চ্যারিটি বা অন্য কোন দাতব্য সংস্থাকে প্রদান করাও জায়েয নয়। কারণ তারা হয়ত ৬০ জন মিসকীনের মাঝে খাদ্য বিতরণ করবে না। মু’মিনের উচিত শরিয়ত কর্তৃক তার উপর আরোপিত কাফ্‌ফারাসহ সকল ওয়াজিব পালনে সচেষ্ট হওয়া।

আল্লাহই তাওফিক্দাতা। আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সাহাবীগণের উপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন।

সূত্র: ফাতাওয়াল্‌ লাজনাদ্‌ দায়িমা (ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র) (১০/৩২০)