বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

শাবান মাসের প্রতি বৃহস্পতিবারে দুই রাকাত নামায পড়া সংক্রান্ত হাদিস মাওযু (বানোয়াট)

প্রশ্ন

ইমেইলে আমার কাছে একটি মেইল এসেছে। সেটি নিম্নরূপ: মহান শাবান মাসের প্রতি বৃহস্পতিবার দুই রাকাত নামায পড়া। রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি সেই দিন দুই রাকাত নামায পড়বে, প্রত্যেক রাকাতে ফাতিহাতুল কিতাব (সূরা ফাতিহা) ও 'কুল হু আল্লাহু আহাদ' (সূরা ইখলাস) একশতবার পড়বে, সালাম ফিরানোর পর একশবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর দুরুদ পড়বে আল্লাহ্‌ তার দ্বীন ও দুনিয়ার সকল প্রয়োজন পূরণ করে দিবেন"। আমি এ হাদিসটির সত্যতা জানতে চাই। এ দুই রাকাত নামায পড়ার পদ্ধতি জানতে চাই। উল্লেখ্য, সেখানে বলা আছে যে, 'কুল হু আল্লাহু আহাদ' একশবার পড়তে হবে। এটা কি নামাযের রাকাতদ্বয়ের ভেতরে পড়া হবে; নাকি নামাযের শেষে?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

হাদিসের গ্রন্থসমূহে এ হাদিসটির কোন ভিত্তি নেই। মনে হচ্ছে-- এটি শাবান মাসে নামায পড়ার ফযিলত সংক্রান্ত বানোয়াট হাদিস। শাবান মাসের ফযিলত, এ মাসে নামায পড়ার ফযিলত ও ১৫ই শাবানের ফযিলত সংক্রান্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামে অনেক মিথ্যা হাদিস রচনা করা হয়েছে। আল্লামা ইবনে হাজার আল-হাইতামি (রহঃ) বলেন: "এ রাতের ফযিলতের ব্যাপারে প্রসিদ্ধ যে হাদিসগুলো বর্ণনা করা হয় (অর্থাৎ রজব মাসের প্রথম জুমার রাত ও ১৫ই শাবানের রাত) সবগুলো বাতিল ও মিথ্যা, এগুলোর কোন ভিত্তি নেই। এমনকি সেগুলো বড় বড় আলেমদের গ্রন্থে থাকলেও; যেমন- ইমাম গাজালির 'ইহইয়াউ উলুমিদ্দিন'-এ।['আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা' (১/১৮৪) থেকে সমাপ্ত]

অনুরূপভাবে সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে নামায পড়ার ফযিলতের ব্যাপারেও কিছু হাদিস জাল করা হয়েছে।

ইমাম শাওকানী বলেন: "সপ্তাহের রবিবার, সোমবার ও অন্যান্য বারে নামায পড়া সংক্রান্ত যে হাদিসগুলো উল্লেখ করা হয় হাদিস বিশারদ আলেমদের মাঝে কোন মতভেদ নাই যে, এগুলো বানোয়াট হাদিস এবং ইসলামের আলেমদের মধ্যে কেউ এই ধরণের নামাযকে মুস্তাহাব বলেননি।"[আল-ফাওয়ায়েদ আল-মাওযুআ (১/৭৪) থেকে সমাপ্ত]

সুতরাং এ মিথ্যা ও বানোয়াট হাদিসের ওপর আমল করা জায়েয হবে না। যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রকৃত অনুসারী হতে চায় তার জন্য সাব্যস্ত সহিহ হাদিসগুলোই যথেষ্ট।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব