বুধবার 15 শাওয়াল 1445 - 24 এপ্রিল 2024
বাংলা

দেরী না করে মীনা ত্যাগ করা

প্রশ্ন

আমি শুনেছি যে, ১৩ ই যিলহজ্জ কংকর নিক্ষেপ করা ঐচ্ছিক বিষয়; আবশ্যকীয় নয়। ১২ ই যিলহজ্জ কংকর নিক্ষেপ করে আমরা মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যেতে পারি; তাশরিকের সবগুলো দিন মীনাতে থাকতে হবে না। এটি কি সঠিক?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

হজ্জপালনকারীর জন্য কংকর নিক্ষেপের দিনগুলোর দ্বিতীয় দিন মীনা ত্যাগ করা জায়েয আছে; তৃতীয় দিনের জন্য অপেক্ষা না করে। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন: অতঃপর যদি কেউ তাড়াতাড়ি করে দুই দিনে চলে আসে তবে তার কোনো পাপ নেই এবং যে ব্যক্তি বিলম্ব করে আসে তারও কোনো পাপ নেই। এটা তার জন্য যে তাক্‌ওয়া অবলম্বন করে।[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২০৩]

জমহুর আলেমের নিকট এটি জায়েয হওয়ার শর্ত হচ্ছে: হজ্জপালনকারী জমরাতগুলোতে কংকর নিক্ষেপ করার পর সূর্য ডোবার পূর্বে মীনা থেকে বের হয়ে যাওয়া। তখন তার উপর থেকে তাশরিকের তৃতীয় দিন কংকর মারার বিধান মওকূফ হয়ে যায়। যদি সূর্য ডোবার আগে বের না হয় তাহলে মীনাতে রাত্রি যাপন করা তার ওপর আবশ্যক হয়ে যায়।  উমর (রাঃ) থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি তাশরিকের মধ্যবর্তী দিন মীনাতে থাকা অবস্থায় সূর্য ডুবে গেছে সে ব্যক্তি আর মীনা ত্যাগ করবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না পরবর্তী দিন জমরাতগুলোতে কংকর নিক্ষেপ করে।”

স্থায়ী কমিটির আলেমগণ  বলেন:

“ঈদের দিনের পর যতটুকু সময় মীনাতে অবস্থান করা একজন হজ্জপালনকারীর উপর ওয়াজিব তা হলো: যিলহজ্জের ১১ ও ১২ তারিখ। পক্ষান্তরে, যিলহজ্জের ১৩ তারিখ মীনাতে অবস্থান করা আবশ্যকীয় নয়। সেই দিন জমরাতগুলোতে কংকর নিক্ষেপ করাও আবশ্যকীয় নয়; মুস্তাহাব। তবে যদি মীনাতে থাকাবস্থায় ১২ যিলহজ্জের সূর্য ডুবে যায় তাহলে ১৩ই যিলহজ্জের রাত মীনাতে থাকা ও পরবর্তী দিন সূর্য হেলে পড়ার পর তিনটি জমরাতে কংকর নিক্ষেপ করা আবশ্যক হয়ে যায়।

আর উল্লেখিত আয়াতটির মর্ম হচ্ছে: যে ব্যক্তি ঈদের দিনের পর আরও দুই রাত মীনাতে থেকে এবং ১১ তারিখ ও ১২ তারিখ তিনটি জমরাতে কংকর মেরে আর অপেক্ষা না করে মীনা থেকে চলে যান তার কোন গুনাহ হবে না। তার উপর কোন দম (পশু জবাই করা) আবশ্যক হবে না। কেননা তিনি তার উপর যা আবশ্যক সেটি আদায় করেছেন। আর যে ব্যক্তি তাড়াহুড়া না করে মীনাতে ১৩ই যিলহজ্জের রাত্রিও যাপন করেন এবং ১৩ তারিখে তিনটি জমরাতে কংকর নিক্ষেপ করেন; তারও কোন গুনাহ নেই। বরং এই রাত্রিটি মীনাতে থাকা ও দিনে কংকর মারা তার জন্য উত্তম ও অধিক সওয়াবপূর্ণ। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে এটি করেছেন। তাছাড়া আল্লাহ্‌ তাআলা আয়াতটিকে শেষ করেছেন তাকওয়া ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনা এবং তাতে যে হিসাব ও পুরস্কার রয়েছে সে সবের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ দিয়ে; যাতে করে যে ব্যক্তি এ বিষয়গুলোকে স্মরণ করবে তার জন্য এটি আল্লাহ্‌র রহমতের আশায় ও শাস্তির ভয়ে বেশি বেশি নেক আমল করা ও বদ আমল বর্জন করার প্রতি উৎসাহব্যঞ্জক হয়।

শাইখ আব্দুর রাজ্জাক আফিফি, শাইখ আব্দুল্লাহ্‌ বিন গাদইয়ান, শাইখ আব্দুল্লাহ্‌ বিন মানী’

[গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র (১১/২৬৬, ২৬৭) থেকে সমাপ্ত]

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব