বৃহস্পতিবার 20 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 21 নভেম্বর 2024
বাংলা

ফরয নামাযের পর দোয়া করার হুকুম

প্রশ্ন

কিছু কিছু মুসল্লি নামাযের সালাম ফিরানো মাত্রই দোয়া করেন। অন্যেরা বলেন: এক্ষেত্রে অনুমতি আছে কেবল তাসবীহে ফাতেমা পড়ার। কেউ কেউ নামাযের পর পর দোয়া করাকে বিদাত বলার কঠোরতা দেখান। এ বিষয়টি আমাদের কম্যুনিটির মাঝে কিছুটা অস্থিরতা তৈরী করেছে। বিশেষতঃ যারা ইমাম আবু হানিফা বা ইমাম শাফেয়ির মাযহাব অনুসরণ করে চলেন।

অতএব, নামাযের পর দোয়া করা কি আমাদের জন্য জায়েয?

নামায সমাপান্তে ইমামের সাথে একত্রে আমাদের দোয়া করা কি জায়েয?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্রে এসেছে:

ফরয নামাযের পর হাত তুলে দোয়া করা সুন্নত নয়; চাই সেটা ইমাম একাকী করুক, কিংবা মুক্তাদি একাকী করুক কিংবা উভয়ে সম্মিলিতভাবে করুক। বরং সেটা বিদাত। কেননা এমন কোন আমল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কিংবা তাঁর সাহাবীবর্গ থেকে উদ্ধৃত হয়নি। পক্ষান্তরে, হাত না তুলে দোয়া করতে কোন অসুবিধা নেই। যেহেতু এই মর্মে কিছু হাদিস উদ্ধৃত আছে।[ফাতাওয়াল লাজনানদ দায়িমা (৭/১০৩)]

স্থায়ী কমিটিকে আরও জিজ্ঞেস করা হয় যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের শেষে দুই হাত তুলে দোয়া করা কি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত আছে; নাকি নেই? যদি সাব্যস্ত না থাকে তাহলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের শেষে দুই হাত তুলে দোয়া করা কি জায়েয হবে; নাকি হবে না? জবাবে তারা বলেন: আমাদের জানা মতে, ফরয নামাযের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়া করার জন্য হাত তুলেছেন মর্মে কিছু সাব্যস্ত হয়নি। ফরয নামাযের সালামের পরে হাতদ্বয় তোলা সুন্নাহ বিরোধী।”[ফাতাওয়াল লাজনানহ (৭/১০৪)]

কমিটি আরও অবহিত করে যে: “পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের শেষে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের সুন্নত নামাযগুলোর শেষে নিয়মিত সম্মিলিতভাবে উচ্চস্বরে দোয়া করা গর্হিত বিদাত। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কিংবা তাঁর সাহাবীবর্গ থেকে এই মর্মে কোন কিছু সাব্যস্ত হয়নি। যে ব্যক্তি ফরয নামাযগুলোর শেষে কিংবা সুন্নত নামাযগুলোর শেষে সম্মিলিতভাবে দোয়া করে এক্ষেত্রে সে ব্যক্তি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের বিরোধী। উপরন্তু যে ব্যক্তি তার সাথে মতভেদ করেছে এবং তার মত আমল করছে না তাকে কাফের বলা কিংবা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অনুসারী না বলা তার অজ্ঞতা, পথভ্রষ্টতা ও বাস্তবতাকে পরিবর্তন।

ফাতাওয়া ইসলামিয়্যা (১/৩১৯)

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব