আলহামদু লিল্লাহ।.
‘আল-মাসীহ’ ঈসা আলাইহিস সালামের উপাধি। তাকে এই উপাধি দেয়ার কয়েকটি কারণ আলেমগণ উল্লেখ করেছেন; যেমন:
১। আল্লাহ্ তাআলা তাঁকে মোছন করেছেন (مَسَحَه) তথা গুনাহ থেকে পবিত্র করেছেন।
২। তিনি ছিলেন বরকত দিয়ে মোছনকৃত (مُسِحَ)।
৩। কারো কারো মতে, কারণ তিনি যখনই কোন রোগগ্রস্তকে হাত দিয়ে মুছতেন তখন তারা সুস্থ হয়ে যেত।[দেখুন: তাফসিরে তাবারী (৫/৪০৯), মাক্কী রচিত ‘আল-হিদায়া (৩/১০১৩)]
ইবনে আতিয়্যা (১/৪৩৬) বলেন: المَسِيح শব্দটির উৎসমূলের ব্যাপারে মানুষ মতভেদ করেছে।
একদল বলেছেন: এটি ساح يسيح في الأرض থেকে উদ্ভুত। অর্থাৎ পৃথিবীতে বিচরণ করা। সেক্ষেত্রে শব্দটির ওজন হচ্ছে: مَفْعَل।
আর অধিকাংশ আলেমের মত হলো: শব্দটি مَسَحَ থেকে উদ্ভুত। তখন এর ওজন হবে: فعيل।
এরপর তারা مَسَحَ থেকে এর রূপান্তর প্রক্রিয়া নিয়েও মতভেদ করেছেন।
একদল বলেছেন: তাঁকে এই নামে অভিহিত করা হয়েছে مساحة الأرض থেকে। যেহেতু তিনি ভূমিতে বিচরণ করেছেন এতে করে যেন তিনি গোটা পৃথিবীকে مسح করেছেন বা চষে বেড়িয়েছেন।
অন্যরা বলেছেন: তাঁকে এই নামে অভিহিত করা হয়েছে যেহেতু তিনি তাঁর হাত দিয়ে কোন রোগগ্রস্তকে মুছে দিলে সে সুস্থ হয়ে যেত। এই দুই অভিমতের ভিত্তিতে এখানে فعيل শব্দ فاعل অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
ইবনে জুবাইর বলেন: তাঁকে এই নামে অভিহিত করা হয়েছে যেহেতু তাঁকে বরকত দিয়ে مسح (মোছন) করা হয়েছে।
অন্যেরা বলেছেন: তাঁকে এই নামে অভিহিত করা হয়েছে যেহেতু তাঁকে আল-কুদসের তেল দিয়ে মোছন করা হয়েছে। এই উক্তিদ্বয়ের আলোকে এখানে فعيل শব্দ فاعل অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
অনুরূপভাবে যারা বলেছেন: আল্লাহ্ তাকে মোছন করেছেন (مَسَحَه) তথা গুনাহ থেকে পবিত্র করেছেন। সেখানেও এই গঠনের ভিত্তিতে।
ইব্রাহিম নাখায়ী বলেছেন: আল-মাসীহ হচ্ছেন: আস্সিদ্দিক (সত্যবাদী)।
ইবনে জুবাইর ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, মাসীহ হচ্ছেন: মালিক (বাদশাহ)। যেহেতু তিনি মৃতকে জীবিত করা ও অন্যান্য মোজেজাগুলোর মালিক। এটি দুর্বল অভিমত এবং ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে সাব্যস্ত নয়।[সমাপ্ত]
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।