আলহামদু লিল্লাহ।.
এক:
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবপ্রাপ্তির আশা নিয়ে রমযানের রোযা রাখবে তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।"[সহিহ বুখারী (৩৮) ও সহিহ মুসলিম (৭৫৯)]
রমযান মাসের রোযা রাখা বাস্তবায়িত হবে সবগুলো দিন রোযা রাখার মাধ্যমে। যে ব্যক্তি সব রোযা রাখেনি তার ক্ষেত্রে এ কথা সত্য নয় যে, সে গোটা রমযান রোযা রেখেছে। বরঞ্চ তার ব্যাপারে সত্য হল: সে রমযানের কিছু অংশ কিংবা কিছুদিন রোযা রেখেছে।
কারমানী বলেন:
"হাদিসের উক্তি: صام رمضان অর্থাৎ রমযানের রোযা রেখেছে। আপনি যদি বলেন: নিদেন পক্ষে যতটুকুকে রোযা বলা যায় ততটুকু রোযা রাখলে কি যথেষ্ট হবে; এমনকি কেউ যদি মাত্র একদিন রোযা রাখে সেকি হাদিসের অধিভুক্ত হবে?
আমি বলব: মানুষের প্রচলনে 'রমযানের রোযা রেখেছে' ঐ ব্যক্তির ক্ষেত্রে বলা হয় যে সবগুলো রোযা রেখেছে। প্রসঙ্গ থেকে এটি সুস্পষ্ট।
আপনি যদি বলেন: ওজরগ্রস্ত ব্যক্তি; যেমন রোগী যদি রোযা রাখতে না পারে। যদি সে রোগী না হত তাহলে রোযা রাখত। যদি তার ওজর না থাকত তাহলে তার নিয়ত ছিল রোযা রাখার: সে কি এই হুকুমের অধিভুক্ত হবে? আমি বলব: হ্যাঁ। যেমনিভাবে রোগী যদি তার ওজরের কারণে বসে বসে নামায পড়ে সে দাঁড়িয়ে নামায পড়া ব্যক্তির সমান সওয়াব পাবে। ইমামগণ এ কথা বলেছেন।"[আল-কাওয়াকিবুদ দারারি (১/১৫৯)]
শাইখ মাহমুদ খাত্তাব আস-সুবকী (রহঃ) বলেন, হাদিসের উক্তি: من صام رمضان الخযে ব্যক্তি রমযানে রোযা রাখল…" অর্থাৎ রমযানের সকল দিন রোযা রাখল। আর যে ব্যক্তি কোন ওজর ছাড়া কিছু দিনের রোযা ভেঙ্গেছে সে ব্যক্তি এই প্রতিদান পাবে না। আর যে ব্যক্তি ওজরের কারণে ভেঙ্গেছে সে ব্যক্তি প্রতিদান পাবে; যদি সে তার উপর কাযা পালন বা খাদ্য খাওয়ানো যেটা আবশ্যক হয় সেটা পালন করে থাকে। ঐ ব্যক্তির মত যে ব্যক্তি ওজরের কারণে বসে বসে নামায পড়েছে সে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায আদায়কারীর সওয়াব পাবে।"[আল-মানহাল আল-আযব আল-মাওরুদ শারহু সুনানে আবি দাউদ (৭/৩০৮) থেকে সমাপ্ত]
দুই:
এই ব্যক্তির এই চৈতন্য রাখা বাঞ্চনীয় যে, যদি এই মহান সওয়াব তার ছুটেও যায় তার অন্য অনেক পথ খোলা রয়েছে। তার কর্তব্য দেরী না করে সে সুযোগগুলো গ্রহণ করা। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে— খালিস (ঐকান্তিক) তাওবা করা।
গুরুত্বপূর্ণ বিধায় 13693 প্রশ্নোত্তরটিও পড়ুন।
রোযা রাখা ছাড়াও রমযান মাসের গুনাহ মোচনকারী আরও কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন শেষ দশকে ঈমান ও সওয়াব পাওয়ার আশা নিয়ে কিয়ামুল লাইল পালন করা। আশা করা যায়, শেষ দশকে কিয়াম পালনকারী লাইলাতুল ক্বাদর পাওয়ার তাওফিকপ্রাপ্ত হবেন। এই রাতগুলোতে কিয়াম পালন করার মধ্যে গুনাহ মাফও রয়েছে; যা রমযানের সিয়াম পালনের মধ্যেও রয়েছে।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে ঈমান ও সওয়াবপ্রাপ্তির আশা নিয়ে কিয়াম পালন করবে তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"[সহিহ বুখারী (৩৫) ও সহিহ মুসলিম (৭৬০)]
আপনি রমযান মাসে নেক আমলের ক্ষেত্রগুলো জানার জন্য ওয়েবসাইটের ২৫ নং প্রবন্ধটি পড়তে পারেন।
আমরা আপনাকে নিম্নোক্ত কিতাব পড়ার উপদেশ দিচ্ছি:
হাফেয ইবনে হাজার-এর রচিত"الخصال المكفرة للذنوب" (আল-খিসালুল মুকাফ্ফিরা লিয্ যুনুব) এবং শামসুদ্দিন আশ-শারবিনির রচিত "الخصال المكفرة للذنوب" (আল-খিসালুল মুকাফ্ফিরা লিয্ যুনুব)।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।