আলহামদু লিল্লাহ।.
এ কথাটি কিছু হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু হাদিসটির বিশুদ্ধতা নিয়ে আলেমদের বিরূপ মন্তব্য রয়েছে। অর্ধ শাবানের রাত্রির ফযিলতের ব্যাপারে কোন হাদিস সহিহ সাব্যস্ত হয়নি। আবু মুসা আল-আশআরি (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ্ অর্ধ শাবানের রাত্রিতে সৃষ্টিকুলের দিকে দৃষ্টি দেন। অতঃপর মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।”[সুনানে ইবনে মাজাহ (১৩৯০)]
مشاحن (বিদ্বেষ পোষণকারী) হচ্ছে- যার মাঝে ও তার মুসলিম ভাইয়ের মাঝে শত্রুতা রয়েছে।
‘আল-যাওয়ায়েদ’ গ্রন্থে এসেছে- হাদিসটির সনদ দুর্বল। আব্দুল্লাহ্ বিন লাহিআর দুর্বলতার কারণে এবং আল-ওয়ালিদ বিন মুসলিমের ‘তাদলিস’-এর কারণে।
তাছাড়া হাদিসটিতে ‘ইযতিরাব’ও রয়েছে। দ্বারাকুতনি ‘আল-ইলাল’ গ্রন্থে (৬/৫০, ৫১) সেটা তুলে ধরেছেন এবং বলেছেন: হাদিসটি সাব্যস্ত নয়।
হাদিসটি মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ), আয়েশা (রাঃ), আবু হুরায়রা (রাঃ) ও আবু ছালাবা আল-খুশানি (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীদের থেকেও বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু কোন একটি সনদ দুর্বলতা মুক্ত নয়। বরং কোন কোনটি খুবই দুর্বল।
ইবনে রজব হাম্বলি বলেন:
অর্ধ শাবানের রাত্রির ফযিলতের ব্যাপারে কয়েকটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। যে হাদিসগুলোর ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেম সে হাদিসগুলোকে দুর্বল বলেছেন। ইবনে হিব্বান কোন কোন হাদিসকে সহিহ বলেছেন।[লাতায়েফুল মাআরিফ (পৃষ্ঠা-২৬১)]
আল্লাহ্ তাআলা দুনিয়ার আকাশে অবতীর্ণ হওয়ার বিষয়টি অর্ধ শাবানের রাতের সাথে খাস নয়। বরং সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমের হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে যে, আল্লাহ্ তাআলা প্রতি রাতের শেষ এক তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আকাশে নাযিল হন। এই সাধারণত্বের আওতায় অর্ধ শাবানের রাত্রিও শামিল।
এ কারণে আব্দুল্লাহ্ বিন মুবারককে যখন অর্ধ শাবানের রাতে আল্লাহ্র অবতীর্ণ হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় তখন তিনি বলেন: “ওহে দুর্বল! অর্ধ শাবানের রাতে? তিনি প্রতি রাতে নাযিল হন।”[আবু উসমান আল-সাবুনি ‘ইতিকাদু আহলিস সুন্নাহ’ গ্রন্থে (নং ৯২) উক্তিটি বর্ণনা করেছেন]
আল-উকাইলি (রহঃ) বলেন:
অর্ধ শাবানের রাতে নাযিল হওয়া সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস রয়েছে; যেগুলো দুর্বলতা রয়েছে। প্রতি রাতে নাযিল হওয়ার হাদিস সহিহ ও সাব্যস্ত। অর্ধ শাবানের রাতও এর মধ্যে পড়বে, ইনশাআল্লাহ্।
[আয্ যুআফা (৩/২৯)]
দেখুন: প্রশ্নোত্তর নং 8907