বৃহস্পতিবার 13 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 14 নভেম্বর 2024
বাংলা

রমযান মাসে তারাবীর নামায কখন শুরু হবে; প্রথম রাত্রিতে নাকি দ্বিতীয় রাত্রিতে?

প্রশ্ন

আমরা কখন তারাবীর নামাযের কিয়াম শুরু করব? রমযানের প্রথম রাত্রিতে (যে রাতে চাঁদ দেখা যায় কিংবা মাস পূর্ণ হয়); নাকি রমযান মাসের প্রথম দিনের এশার নামাযের পর?  

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

রমযান মাসের প্রথম রাত্রির এশার নামাযের পর মুসলমানের জন্য তারাবীর নামায পড়া শরয়ি বিধান। প্রথম রাত্রি হল যে রাতে চাঁদ দেখা যায় কিংবা মুসলমানেরা শাবান মাসের ত্রিশদিন পূর্ণ করে।

অনুরূপ বিধান রমযান মাসের শেষের ক্ষেত্রেও। অর্থাৎ ঈদের চাঁদ দেখার মাধ্যমে  কিংবা রমযান মাসের ত্রিশদিন পূর্ণ হওয়ার মাধ্যমে রমযান মাস শেষ হওয়া সাব্যস্ত হলে আর তারাবীর নামায পড়া হবে না।

এতে করে প্রতীয়মান হয় যে, তারাবীর নামায রমযানের দিনের বেলায় রোযা রাখার সাথে সম্পৃক্ত নয়। বরং মাস শুরু হওয়ার মাধ্যমে রাত থেকে শুরু করতে হয় এবং রমযানের শেষ রাতে শেষ হয়।

এমন কথা বলা উচিত হবে না যে, তারাবীর নামায সাধারণ নফল নামায; যে কোন রাত্রিতে যে কোন সমাবেশে আদায় করা জায়েয। কেননা তারাবীর নামায রমযানেই উদ্দিষ্ট। তারাবীর নামায আদায়কারী রমযান মাসে কিয়ামুল লাইল পালনের সওয়াবের প্রত্যাশা করেন।

তারাবীর নামায জামাতের সাথে আদায় করার হুকুম অন্য নামায জামাতের সাথে আদায় করার মত নয়। রমযানের কিয়ামুল লাইল ঘোষণা দিয়ে, উদ্বুদ্ধ করে জামাতের সাথে আদায় করা জায়েয। পক্ষান্তরে, অন্য মাসে কিয়ামুল লাইল এভাবে আদায় করা সুন্নতসম্মত হয়; তবে বিশেষ কোন উদ্দেশ্য ছাড়া কিংবা উৎসাহ ও শিক্ষামূলক হলে হতে পারে। তাই কখনও কখনও এভাবে করা সুন্নত হতে পারে; সবসময় নয়।

শাইখ মুহাম্মদ আল-সালেহ আল-উছাইমীন (রহঃ) বলেন:

রমযান ছাড়া অন্য মাসে তারাবীর নামায পড়া বিদআত। তাই রমযান ছাড়া অন্য কোন মাসে যদি লোকেরা কিয়ামুল লাইল জামাতের সাথে আদায় করার জন্য মসজিদে একত্রিত হয় তাহলে সেটা বিদআত হবে।

তবে রমযান ছাড়া অন্য সময়ে কেউ তার নিজ বাসাতে কখনও কখনও জামাতের সাথে নামায পড়তে কোন অসুবিধা নেই। যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমল আছে: একবার তিনি ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে নিয়ে নামায পড়েছেন। একবার ইবনে মাসউদ (রাঃ) কে নিয়ে নামায পড়েছেন। একবার হুযাইফা বিন ইয়ামানকে নিয়ে তাঁর বাসায় নামায পড়েছেন। কিন্তু তিনি সেটাকে রেগুলার সুন্নত হিসেবে গ্রহণ করেননি। এবং সেটা মসজিদে করতেন না।[আল-শারহুল মুমতি (৪/৬০, ৬১)]

অতএব, যে ব্যক্তি রমযান মাস শুরু হওয়া সাব্যস্ত হওয়ার আগে তারাবীর নামায আদায় করেছে সে ঐ ব্যক্তির মত যিনি অসময়ে নামায পড়ল। যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করে সে গুনাহ থেকে রেহাই পেলেও তার জন্য সওয়াব লেখা হবে না।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব