আলহামদু লিল্লাহ।.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শের অনুসরণে একজন মুসলিমের জন্য মুস্তাহাব হলো গোসলের পূর্বে ওযু করা।
যদি গোসলটি বড় অপবিত্রতাজনিত হয়; (যেমন জানাবাতের গোসল ও হায়েযের গোসল) এবং গোসলকারী কুলি করা ও নাকে পানি দেয়াসহ সমস্ত দেহে পানি পৌঁছায়; তাহলে এ গোসল ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গোসলের পর আর ওযু করতেন না।
আর যদি গোসলটি শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য হয় কিংবা পরিচ্ছন্নতার জন্য হয়; তাহলে সেটি ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে না।
শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীন (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: জানাবতের গোসল কি ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে?
তিনি জবাব দেন: “যদি কোন ব্যক্তি জানাবত (সহবাস, স্বপ্নদোষ, বীর্যপাত)-এর গোসল করে তাহলে তা ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “যদি তোমরা জুনুবী হও তাহলে প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন কর”। গোসলের পর তাকে ওযু করতে হবে না; যদি ওযু ভঙ্গের কোন কারণ না ঘটে। আর যদি গোসলের পর ওযু ভঙ্গের কোন কারণ ঘটে তাহলে ওযু করা তার উপর ওয়াজিব। আর যদি ওযু ভঙ্গের কোন কারণ না ঘটে তাহলে জানাবতের গোসলই তার ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে; চাই সে গোসলের পূর্বে ওযু করুক; কিংবা না করুক। কিন্তু কুলি করা ও নাকে পানি দেয়ার বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। ওযু ও গোসলে এ দুটো অবশ্যই পালনীয়।”[সমাপ্ত]
[মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ ইবনে উছাইমীন (১১/প্রশ্ন নং-১৮০)]
শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উছাইমীনকে আরও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: শরিয়তে আদিষ্ট নয় এমন গোসল কি ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে?
তিনি জবাব দেন: “শরিয়তে আদিষ্ট নয় এমন গোসল ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে না। কেননা সেই গোসল কোন ইবাদত নয়।”[সমাপ্ত]
[মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ ইবনে উছাইমীন (১১/প্রশ্ন নং-১৮১)]
অনুরূপভাবে শাইখকে আরও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: গোসল কি ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে?
তিনি জবাব দেন: “যদি সেটা জানাবত (সহবাস, স্বপ্নদোষ, বীর্যপাত)-এর গোসল হয়; তাহলে সেটি ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে। যেহেতু আল্লাহ্র বাণী হচ্ছে: “যদি তোমরা জুনুবী হও তাহলে প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন কর”। কোন ব্যক্তি যদি জানাবতের শিকার হন; এরপর কোন পুকুরে বা নদীতে বা এ জাতীয় অন্য কিছুর ভেতরে ডুব দেন এবং এর মাধ্যমে জানাবত দূর করার নিয়ত করেন, কুলি করেন ও নাকি পানি দেন; তাহলে এর মাধ্যমে ছোট অপবিত্রতা ও বড় পবিত্রতা উভয়টি দূরীভুত হবে। কেননা আল্লাহ্ তাআলা জানাবতের কারণে প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন করা ছাড়া অন্য কিছু করা ওয়াজিব করেননি। প্রকৃষ্টভাবে পবিত্রতা অর্জন হচ্ছে সারা দেহকে পানি দিয়ে ধৌত করা। যদিও জানাবতের গোসলকারীর জন্য উত্তম হচ্ছে- প্রথমে ওযু করে নেয়া। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর হাতের কব্জিদ্বয় ধোয়ার পরে লজ্জাস্থান ধৌত করতেন। এরপর নামাযের ওযুর মত ওযু করতেন। এরপর মাথার ওপর পানি ঢালতেন। যখন ধারণা হত যে, তিনি চামড়া ভিজিয়েছেন তখন মাথার ওপর তিনবার পানি ঢালতেন। এরপর অবশিষ্ট শরীর ধৌত করতেন।
পক্ষান্তরে পরিচ্ছন্নতা বা শরীর ঠাণ্ডা রাখার কারণে গোসল করলে সেই গোসল ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে না। কেননা সেটি ইবাদত নয়। বরং সেটি অভ্যাসগত বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত; যদিও শরিয়ত পরিচ্ছন্নতার নির্দেশ দেয়। কিন্তু এভাবে নয়; বরং পরিচ্ছন্নতার সাধারণ নির্দেশ; সেটা যে কোন কিছুতে যেভাবেই পরিচ্ছন্নতা অর্জিত হোক না কেন।
মোটকথা: যদি গোসলটা শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য কিংবা পরিচ্ছন্নতার জন্য হয় তাহলে সেটি ওযুর পরিবর্তে যথেষ্ট হবে না।[সমাপ্ত]
মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ বিন উছাইমীন (১১/প্রশ্ন নং-১৮২)
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।