আলহামদু লিল্লাহ।.
এ প্রশ্নে দুটো মাসয়ালা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
প্রথম মাসয়ালা: কুরআন তেলাওয়াতের জন্য সমবেত হওয়া। সেটা এভাবে যে, উপস্থিত লোকেরা প্রত্যেকে এক পারা করে কুরআন শরিফ ভাগ করে নিবে; যাতে করে একই সময়ে প্রত্যেকে তার পারা তেলাওয়াত করে শেষ করতে পারে।
এ মাসয়ালার জবাব স্থায়ী কমিটির ফতোয়াতে (২/৪৮০) যা এসেছে সেটাই:
এক: কুরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়নের জন্য একত্রিত হওয়া; সেটা এভাবে যে, একজনে তেলাওয়াত করবে বাকীরা শুনবে এবং তারা যা পড়েছে সেটা পরস্পর অধ্যয়ন করবে, অর্থ বুঝবে– শরিয়ত অনুমোদিত ও নেকীর কাজ; যা আল্লাহ্ পছন্দ করেন এবং এর জন্য অনেক প্রতিদান দেন। ইমাম মুসলিম তাঁর সহিহ গ্রন্থে ও ইমাম আবু দাউদ তাঁর সুনান গ্রন্থে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “দি কোন জনগোষ্ঠী আল্লাহ্র কোন এক ঘরে সমবেত হয়ে আল্লাহ্র কিতাব তেলাওয়াত করে ও নিজেদের মধ্যে অধ্যয়ন করে তখন তাদের উপর সাকিনা (প্রশান্তি) নাযিল হয়। তাদেরকে আল্লাহ্র রহমত বেষ্টন করে রাখে। ফেরেশতারা তাদেরকে ঘিরে রাখে। আল্লাহ্ তাদের কথা তাঁর নিকট যারা আছে তাদের কাছে আলোচনা করেন।”
কুরআন খতম করার পর দোয়া করাও শরিয়ত অনুমোদিত। তবে সবসময় ও নির্দিষ্ট কোন শব্দমালায় দোয়া করা ঠিক নয়; যাতে মনে হতে পারে এটা একটা অনুসৃত সুন্নত। কেননা এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়নি। বরং কোন কোন সাহাবী সেটা করেছেন। অনুরূপভাবে যারা পড়তে এসেছেন তাদেরকে খাওয়ার দাওয়াত দেয়া এতেও কোন অসুবিধা নেই; যদি এটাকে প্রথাগত অভ্যাস হিসেবে গ্রহণ করা না হয়।
দুই: সমাবেশে যারা হাযির হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের মাঝে কুরআনের পারাগুলো পড়ার জন্য ভাগ করে দিলে অনিবার্যভাবে তারা প্রত্যেকেই কুরআন খতম করেছেন এমনটি বিবেচিত হবে না। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নিছক বরকত নেয়া। এতে কসুর রয়েছে। কারণ কুরআন পাঠের উদ্দেশ্য হচ্ছে– নৈকট্য হাছিল, মুখস্থ করা, চিন্তাভাবনা করা, কুরআনের বিধান অনুধাবন করা, এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা, সওয়াব হাছিল করা এবং জিহ্বাকে তেলাওয়াত করায় অভ্যস্ত করে তোলা...ইত্যাদি। আল্লাহ্ই তাওফিকদাতা।[সমাপ্ত]
দ্বিতীয় মাসয়ালা: এই বিশ্বাস করা যে দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে এই কাজ (প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে সমবেত হওয়া) এর প্রভাব রয়েছে: এর সপক্ষে কোন দলিল আছে বলে জানা যায় না। তাই এটি শরিয়ত অনুমোদিত নয়। দোয়া কবুলের সুবিদিত অনেক কারণ রয়েছে; যেমনি দোয়া কবুল না-হওয়ারও সুবিদিত কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। দোয়াকারীর কর্তব্য হচ্ছে– দোয়া কবুলের কারণগুলো অর্জন করা এবং প্রতিবন্ধকতাগুলো থেকে দূরে থাকা এবং আল্লাহ্র প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করা। কারণ আল্লাহ্ সেরূপ বান্দা তার প্রতি যেরূপ ধারণা পোষণ করে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যে ব্যক্তি কোন একটি বিষয়কে শরিয়তের বিধান সাব্যস্ত করবে তার কাছে দলিল তলব করা হবে। নচেৎ ইবাদতের ক্ষেত্রে মূলনীতি হচ্ছে– যে কোন কিছু নিষিদ্ধ; যতক্ষণ না শরিয়ত অনুমোদিত হওয়ার পক্ষে দলিল পাওয়া যায় যেমনটি আলেমগণ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এ কারণে এ বিশ্বাসটি যে শরিয়তসম্মত নয় এর দলিল হচ্ছে– এটি জায়েয হওয়ার পক্ষে কোন দলিল না থাকা।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।