সোমবার 24 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 25 নভেম্বর 2024
বাংলা

eToto ওয়েবসাইটে বিনিয়োগ করার হুকুম

269079

প্রকাশকাল : 31-05-2022

পঠিত : 1203

প্রশ্ন

eToro ওয়েবসাইটে বিনিয়োগ করার ব্যাপারে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে; যেখানে শেয়ার ক্রয়বিক্রি করা যায়। কেউ বলেন: হালাল, কেউ বলেন: হারাম, কেউ বলেন: ইহুদী কোম্পানী; এর সাথে লেনদেন করা অনাবশ্যক...। আশা করি আপনারা বিষয়টি পরিস্কার করবেন।

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

স্টক মার্কেটে বা অন্য কোন মার্কেটে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা কখনও জায়েয, আবার কখনও নাজায়েয— লেনদেনের প্রকার ও শরয়ি নীতিমালা মেনে চলা বা না-চলার ভিত্তিতে।

ফরেক্স সিস্টেমে মার্জিন বা লিভারেজ নামে যে লেনদেন হয় সেগুলো জায়েয নয়; এগুলোর মধ্যে বেশকিছু শরিয়ত গর্হিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে। 

এই লেনদেনগুলোতে যে সব শরিয়ত গর্হিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে যেমনটি ফিকাহ একাডেমীর সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়েছে:

ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে এই লেনদেনর ব্যবসায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে শরিয়তে নিষিদ্ধ হারাম চুক্তিগুলো সম্পাদিত হয়ে থাকে:

১। বন্ডের ব্যবসা। এটি হারাম সুদী কারবার। ফিকাহ একাডেমীর ষষ্ঠ অধিবেশনের ৬০তম সিদ্ধান্তে তা উল্লেখ করা হয়েছে।

২। কোন প্রকার বাছবিচার না করে সব কোম্পানির শেয়ারে ব্যবসা করা। ওয়ার্ল্ড মুসলিম লীগের অধিভুক্ত ফিকাহ একাডেমীর ১৪১৫ হিজরীতে অনুষ্ঠিত ১৪তম অধিবেশনের চতুর্থ সিদ্ধান্তে স্পষ্টভাবে এসেছে যে, যে কোম্পানিগুলোর মূল উদ্দেশ্য হারাম কিংবা কিছু লেনদেন সুদভিত্তিক হারাম সেগুলোতে বিনিয়োগ করা হারাম।

৩। বিদেশী মুদ্রার ক্রয়বিক্রয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে শরিয়ত অনুমোদিত গ্রহণ ছাড়াই সম্পাদিত হয়; যে গ্রহণের মাধ্যমে লেনদেনটিকে বৈধ হয়।

৪। এখতিয়াতের চুক্তি ও ভবিষ্যৎ চুক্তিগুলোতে ব্যবসা করা। জেদ্দাস্থ ফিকাহ একাডেমীর ষষ্ঠ অধিবেশনের ৬৩তম সিদ্ধান্তে এসেছে যে, এখতিয়াতের চুক্তিগুলোতে ব্যবসা করা শরিয়তে জায়েয নয়। কেননা যেটাকে কেন্দ্র করে চুক্তি সম্পাদিত হচ্ছে সেটা সম্পদ নয়; কোন সেবা নয় এবং কোন আর্থিক অধিকারও নয় যে, সেটার বিপরীতে বিনিময় নেয়া বৈধ হবে। অনুরূপ কথা প্রযোজ্য ভবিষ্যৎ চুক্তি ও সূচকের উপর সম্পাদিত চুক্তিগুলোর ক্ষেত্রেও।”[সমাপ্ত]

দুই:

eToro ওয়েবসাইটি যাচাই করে পরিস্কার হল যে, এ ওয়েবসাইটে মার্জিন পদ্ধতিতে লেনদেন সম্পাদিত হয়; যার মধ্যে overnight সুদী ফি রয়েছে এবং হারাম সিএফডি (পার্থক্যের চুক্তি)-র মাধ্যমে লেনদেন সম্পাদিত হয়।

পাথর্ক্যের চুক্তিসমূহ কিংবা পার্থক্যের বিনিময়ে চুক্তিসমূহের সংক্ষিপ্তরূপ হচ্ছে— ‘সিএফডি’। এই চুক্তির সংজ্ঞায় বলা হয়: এটি দুই পক্ষের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি। দুইপক্ষকে সাধারণত ‘ক্রেতা’ ও ‘বিক্রেতা’ নামে ইশারা করা হয়। এর মূল্য মূলের উপর নির্ভর করে (যেমন- স্টকের সূচক, শেয়ার কিংবা ভবিষ্যৎ বিলম্বের পণ্য চুক্তি)।

চুক্তি শেষে কিংবা উভয় পক্ষ যখন লেনদেন সমাপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় তখন বিক্রেতা ক্রেতাকে লেনদেন শুরু করার সময়ের সাথে বর্তমান মূল্যের যে পার্থক্য সেটা পরিশোধ করে। যদি মূল মূল্য ঊর্ধ্বে হয়ে থাকে।

ঠিক এর বিপরীতে যদি মূল মূল্য নিম্ন হয়; তথা বর্তমান মূল্যের সাথে মূল মূল্যের পার্থক্য মাইনাসে হয়; তখন ক্রেতা বিক্রেতাকে পার্থক্য যা সেটা পরিশোধ করে। দেখুন

এ ধরণের পার্থক্য নির্ভর চুক্তি হারাম এবং ফিকাহ একাডেমীর সিদ্ধান্তে উল্লেখিত এখতিয়ার চুক্তি ও ভবিষ্যৎ চুক্তি এটাই।

এর সাথে যদি মার্জিন সিস্টেমের বিষয়টি যোগ করা হয় তাহলে এই লেনদেন হারাম হওয়ার এটি আরেকটি দিক।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব