বৃহস্পতিবার 6 জুমাদাল আউওয়াল 1446 - 7 নভেম্বর 2024
বাংলা

কুরআন তেলাওয়াতের পর দোয়া করা

প্রশ্ন

কুরআন তেলাওয়াত শেষ করার পর

سبحانك اللهم وبحمدك ، لا إله إلا أنت أستغفرك وأتوب إليك

এই দোয়া পড়ার শুদ্ধতা কি? তেলাওয়াত সমাপ্ত করার পর পঠিতব্য বিশেষ কোন দোয়া আছে কি?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: “যখনই রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন বৈঠকে বসতেন, যখনই কুরআন তেলাওয়াত করতেন কিংবা নামায আদায় করতেন তখনই তিনি কিছু বাক্যের মাধ্যমে সেটাকে সমাপ্ত করতেন। (আয়েশা রাঃ) বলেন: সে প্রসঙ্গে আমি বললাম: ইয়া রাসূলুল্লাহ্‌! আমি দেখি আপনি যে কোন বৈঠক, যে কোন তেলাওয়াত এবং যে কোন নামায এই বাক্যগুলোর মাধ্যমে সমাপ্ত করে থাকেন? তিনি বললেন: হ্যাঁ। যে ব্যক্তি কোন ভাল কথা বলল তার জন্য সেই ভালোর উপর সীলমোহর হল এবং যে ব্যক্তি কোন খারাপ কথা বলল তার জন্য কাফ্‌ফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হল:  سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ (আমি প্রশংসাসহ আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার কাছে তাওবা করছি।)।[আলাবানী সিলসিলা সাহিহা গ্রন্থে (৩১৬৪) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]

এই হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক বৈঠক শেষে বৈঠকের কাফ্‌ফারা সংক্রান্ত যিকির উল্লেখ করেছেন; সেই বৈঠক যিকিরের বৈঠক হোক কিংবা মন্দ ও বেহুদা কথা মিশ্রিত বৈঠক হোক। যদি যিকিরের বৈঠক হয় তাহলে এটি যেন ঐ বৈঠকের সীলমোহর।

সিন্দি (রহঃ) বলেন:

“উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যিকিরটি সেই ভাল কাজকে সাব্যস্তকারী, কবুলের মর্যাদায় উন্নীতকারী ও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশংকামুক্তকারী হওয়া।”[মিরাআতুল মাসাবীহ (৮/২০৪)]

পূর্বোক্ত আলোচনার আলোকে কোন মুসলিমের জন্য এই যিকির পড়ার মাধ্যমে বৈঠক সমাপ্ত করা মুস্তাহাব; সেটা যে বৈঠক-ই হোক না কেন। কুরআনের বৈঠক, নামায, কিংবা কেউ সঙ্গীসাথীদের সাথে বৈঠক করল, পরিবারের সদস্যদের সাথে বৈঠক করল, সমঝোতা বৈঠক করল কিংবা অন্য কোন বৈঠক করল; এরপর যখন উঠে যেতে চাইবে তখন সরাসরি উঠে যাওয়ার আগে এই যিকিরটি বলবে; এরপর উঠবে।

দুই:

কুরআন খতম করার ব্যাপারে বিশেষ কোন দোয়া সাব্যস্ত হয়নি; না এই দোয়াটি, আর না অন্য কোন দোয়া। ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই যিকির ও দোয়াটি খতমে কুরআন বা অন্য কিছুর দোয়া নয়; বরং এটি সকল বৈঠকের জন্য আম দোয়া।

কিন্তু আলেমগণ কুরআন খতমের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়াকে মুস্তাহাব বলেন। ইমাম নববী বলেন: “কুরআন খতমের অনুষ্ঠান উপস্থিত হওয়া তাগিদপূর্ণ মুস্তাহাব।”[আত্‌-তীবইয়ান ফি আদাবি হামালাতিল কুরআন (পৃষ্ঠা-১৫৯)]

ইবনে কুদামা (রহঃ) ‘আল-মুগনী’ গ্রন্থে (২/১২৬) বলেন: “কুরআন খতমের সময় দোয়াতে হাযির থাকার জন্য পরিবারের সদস্যদেরকে ও অন্যদেরকে একত্রিত করা মুস্তাহাব।

ইমাম আহমাদ বলেন: আনাস (রাঃ) যখন কুরআন খতম করতেন তার স্ত্রী-সন্তানদেরকে একত্রিত করতেন।

ইবনে মাসউদ (রাঃ) সম্পর্কেও এমন বিষয় বর্ণিত আছে।”

আরও জানতে দেখুন: 65581 নং ও 37683 নং প্রশ্নোত্তর।

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব