আলহামদু লিল্লাহ।.
ইখলাস বা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠতা যে কোন ইবাদতের ক্ষেত্রে শর্ত। আল্লাহর সাথে যদি অন্যকে অংশীদার করা হয় সে ইবাদত কবুল হয় না। আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
(অর্থ- অতএব, যেব্যক্তিতারপালনকর্তারসাক্ষাতকামনাকরে, সেযেন, সৎকর্মসম্পাদনকরেএবংতারপালনকর্তারএবাদতেকাউকেশরীকনাকরে।[সূরা কাহাফ, আয়াত: ১১০]
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন:
وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ
(অর্থ- তাদেরকেএছাড়াকোননির্দেশকরাহয়নিযে, তারাখাঁটিমনেএকনিষ্ঠভাবেআল্লাহরএবাদতকরবে, নামাযকায়েমকরবেএবংযাকাতদেবে।এটাইসঠিকধর্ম।)[সূরা বাইয়্যেনা, আয়াত: ০৫]
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন:
فَاعْبُدِ اللَّهَ مُخْلِصًا لَهُ الدِّينَ (2) أَلَا لِلَّهِ الدِّينُ الْخَالِصُ
(অর্থ- অতএব, আপনি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর এবাদত করুন।জেনে রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত।)[সূরা যুমার, আয়াত: ২-৩]
সহিহ হাদিসে কুদসিতে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তাআলা বলেন: “আমি অংশীদারিত্ব থেকে সম্পূর্ণ অমুখাপেক্ষী। যে ব্যক্তি কোন আমল করে এবং সে আমলের মধ্যে আমার সাথে অন্যকেও অংশীদার করে আমি সে আমল ঐ অংশীদারের জন্য ছেড়ে দেই।” ইবাদত পালনে আল্লাহর জন্য নিষ্ঠাবান হওয়ার অর্থ হচ্ছে- আল্লাহর ভালবাসা, তাঁর প্রতি সম্মানপ্রদর্শন, তাঁর থেকে সওয়াব ও সন্তুষ্টি প্রাপ্তির আশা ছাড়া অন্য কোন কিছু বান্দাকে ইবাদত পালনে অনুপ্রাণিত না করা। তাইতো আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا
(অর্থ- মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেন।)[সূরা ফাতহ, আয়াত: ২৯]
কোন ইবাদত-ই কবুল হবে না; সেটা হজ্ব হোক অথবা অন্য কোন ইবাদত হোক যদি ইবাদতকারী মানুষকে দেখানোর জন্য ইবাদতটি করে থাকে। অর্থাৎ ইবাদতটি এজন্য করে যে, মানুষ দেখে বলবে: অমুক কতই না তাকওয়াবান!! অমুক কতই না ইবাদতগুজার!! ইত্যাদি। অনুরূপভাবে যদি ইবাদতটি পালনের উদ্দেশ্য থাকে দেশ দেখা অথবা দেশের মানুষকে দেখা অথবা এজাতীয় অন্য কোন উদ্দেশ্য যা একনিষ্ঠতা বা ইখলাস বিনষ্টকারী তাহলে সে ইবাদত কবুল হবে না। তাই যারা বায়তুল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্বযাত্রার নিয়ত করেন তাদের নিয়তকে আল্লাহর জন্য খাঁটি করা উচিত।মুসলিম বিশ্ব দেখা, ব্যবসা করা, অমুক প্রতিবছর হজ্ব করে অথবা এ জাতীয় অন্য কোন সুনাম প্রাপ্তির উদ্দেশ্য যেন তাদের নিয়তের মধ্যে না থাকে। ব্যক্তির নিয়ত যদি হয় বায়তুল্লাতে হজ্ব করা, হজ্বে এসে ব্যবসা করে আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ করতে কোন দোষ নেই। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوا فَضْلًا مِنْ رَبِّكُمْ
(অর্থ- তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষন করায় কোন পাপ নেই।)[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯৮]
যদি তার নিয়তে ব্যবসা ও রোজগার ছাড়া অন্য কিছু না হয়ে থাকেতাহলে তার ইবাাদতের ইখলাস তথা নিষ্ঠা নষ্ট হবে। যার উদ্দেশ্য এ রকম হবে সে ব্যক্তি আখেরাতের আমল দিয়ে দুনিয়া কামাই করার ইচ্ছা করেছে। এই ইচ্ছা তার আমল নষ্ট করে দিবে অথবা ব্যাপকভাবে তার আমলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
مَنْ كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ الْآَخِرَةِ نَزِدْ لَهُ فِي حَرْثِهِ وَمَنْ كَانَ يُرِيدُ حَرْثَ الدُّنْيَا نُؤْتِهِ مِنْهَا وَمَا لَهُ فِي الْآَخِرَةِ مِنْ نَصِيبٍ
(অর্থ- যে কেউ পরকালের ফসল কামনা করে, আমি তার জন্যে সেই ফসল বাড়িয়ে দেই। আর যে ইহকালের ফসল কামনা করে, আমি তাকে তার কিছু দিয়ে দেই এবং পরকালে তার কোন অংশ থাকবে না।)[সূরা শুরা, আয়াত: ২০] সমাপ্ত।