আলহামদু লিল্লাহ।.
আল্লাহ্ তাআলার সকল নাম তাওক্বিফী (অর্থাৎ এক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহতে যা উদ্ধৃত হয়েছে সেটার গণ্ডিতে থেমে যাওয়া আবশ্যক; এর চেয়ে বাড়ানো বা কমানো যাবে না)। এর ভিত্তিতে আল্লাহ্ তাঁর কিতাবে নিজেকে যে নামে অভিহিত করেছেন কিংবা তাঁর রাসূল সহিহ সূত্রে বর্ণিত হাদিসে তাঁকে যে নামে অভিহিত করেছেন সেগুলো ছাড়া অন্য কোন নামে তাঁকে অভিহিত করা সঠিক নয়। যেহেতু বুদ্ধি দিয়ে আল্লাহ্ যে নামসমূহের উপযুক্ত সে সব নাম জানা সম্ভবপর নয়। তাই দলিলের গণ্ডিতে থেমে যাওয়া আবশ্যকীয়। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলার বাণীতে এসেছে: “যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই সে বিষয়ে আলোকপাত করো না। নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও আত্মা প্রত্যেকটি এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”[সূরা ইসরা বা বনী ইসরাইল; ১৭: ৩৬] এবং যেহেতু আল্লাহ্ নিজেকে যে নামে অভিহিত করেননি সে নামে তাঁকে অভিহিত করা কিংবা তিনি নিজেকে যে নামে অভিহিত করেছেন সে নামকে নাকচ করা— আল্লাহ্র অধিকারের ওপর অন্যায় করা। সুতরাং এক্ষেত্রে শিষ্টাচার রক্ষা করা আবশ্যক। আর তা হলো দলিলে যা এসেছে এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা।
পক্ষান্তরে কুরআন-সুন্নাহতে যা আল্লাহ্র গুণ হিসেবে কিংবা আল্লাহ্ সম্পর্কে সংবাদ হিসেবে উদ্ধৃত হয়েছে; তথা ওটা দ্বারা আল্লাহ্র নামকরণ উদ্ধৃত হয়নি; সেটা দিয়ে আল্লাহ্র নামকরণ করা সঠিক নয়। কেননা আল্লাহ্র গুণসমূহের মধ্যে কিছু গুণ তাঁর কর্মের সাথে সম্পৃক্ত। আর আল্লাহ্র কর্মের কোন শেষসীমা নেই; যেমনিভাবে তাঁর কথারও শেষসীমা নেই।
আল্লাহ্র কর্মগত গুণের কিছু উদাহরণ হচ্ছে— المجيء (আসা), الإتيان (আগমন করা), الأخذ (ধরা), الإمساك (ধরা), البطش (পাকড়াও করা) ইত্যাদি অগণিত আরও অনেক গুণ। যেমনটি আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন: “আপনার প্রভু এসেছেন।” [সূরা আল-ফাজর, আয়াত: ২২] তিনি আরও বলেন: “আর তিনি আসমানকে তার জায়গায় ধরে রেখেছেন, যাতে তা তাঁর নির্দেশ ছাড়া পৃথিবীর ওপর পড়ে না যায়।”[সূরা আল-হাজ্জ, আয়াত: ৬৫] তিনি আরও বলেন: “নিশ্চয় আপনার প্রভুর পাকড়াও কঠোর।”[সূরা বুরুজ, আয়াত: ১২] অতএব আমরা আল্লাহ্ তাআলাকে এ সকল গুণে এমনভাবে গুণান্বিত করব যেভাবে দলিলে উদ্ধৃত হয়েছে; কিন্তু আমরা এগুলো দিয়ে তাঁকে নামকরণ করব না। আমরা বলব না যে, আল্লাহ্র নামসমূহের মধ্যে রয়েছে: الجائي (আগমনকারী), الآتي (আগমনকারী), الآخذ (ধারণকারী), الممسك (ধারণকারী), الباطش (পাকাড়ওকারী), ইত্যাদি; যদিও আমরা এ শব্দগুলো দিয়ে তাঁর সম্পর্কে সংবাদ দিই কিংবা তাঁকে গুণান্বিত করি।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
দেখুন: শাইখ ইবনে উছাইমীনের রচিত ‘আল-কাওয়ায়েদ আল-মুছলা ফি সিফাতিল্লাহি ওয়া আসমায়িহিল হুসনা’ (১৩, ২১)।