আলহামদু লিল্লাহ।.
সমস্তপ্রশংসা আল্লাহর জন্য।আপনার মসজিদে যাওয়া, তারাবী নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়া,মুসলিম বোনদের সাথে দেখা-সাক্ষাত করা ইত্যাদি সবই ভাল আমল; আলহামদুলিল্লাহ। এবং আপনার ভাইকে ভাল কাজে সহায়তা করা এটা আরো একটি ভালআমল।আপনার এই আমলগুলো পালন করা ও শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামায আদায় করার মাঝে তো কোন সংঘর্ষ নেই। আপনার পক্ষে এ ফজিলতপূর্ণ কাজগুলোরমাঝে সমন্বয় করা সম্ভব।
এ ক্ষেত্রে দুটো পদ্ধতি হতে পারে:
প্রথমত : আপনি ইমামের সাথে বিতিরের নামায আদায় করে ফেলবেন। তারপর দুই রাকাত রাকাত করে আপনার সুবিধামত যত রাকাত সম্ভব তাহাজ্জুদ নামায আদায় করে নিবেন। তবে বিতিরেরসালাত পুনরায় পড়বেন না। কারণ এক রাতে দুইবার বিতির পড়া যায় না।
দ্বিতীয়ত : আপনি বিতিরের নামায শেষ রাতেরজন্য রেখে দিবেন। অর্থাৎ ইমাম যখন বিতিরের সালাত আদায় শেষে সালাম ফিরাবেন তখন আপনি সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে যাবেন এবং অতিরিক্ত এক রাকাত যোগ করবেন যাতে শেষ রাতে আপনি বিতির আদায় করতে পারেন।
শাইখ
ইবনে বাযরাহিমাহুল্লাহকে
প্রশ্ন করা
হয়েছিল: ইমাম
বিতিরের
সালাত আদায়
শেষ করলে কিছু
মানুষ
দাঁড়িয়ে যায়
এবং অতিরিক্ত
এক রাকাত যোগ
করে যাতেশেষ
রাতে তিনি
বিতির
পড়তে পারেন। এই আমলের হুকুম
কি? এতে কি
তিনি “ইমামের
সাথে সালাত
সম্পন্ন করেছেন” ধরা যাবে?তিনি
উত্তরে বলেন: “আমরা
এতে কোন দোষ
দেখি না। আলেমগণএটা
পরিষ্কারভাবে
বলে দিয়েছেন।তিনি এটা
করেন যেন
বিতির (বেজোড়)
নামাযটা শেষ রাতেই
আদায় করতে
পারেন। তাঁর
ক্ষেত্রে এ
কথা বলাও সত্য
হবে যে, “ইমাম
শেষ করা
পর্যন্ত তিনি
ইমামের সাথে
নামায আদায়
করেছেন”। কারণ
ইমাম
নামায শেষ করা
পর্যন্ত তিনি
তো ইমামের সাথে
ক্বিয়াম
করেছেন এবং এরপর তিনি এক
রাকাত যোগ
করেছেনঅন্য একটি শরয়ি কল্যাণের
কারণে।
সেটা হলো-বিতির
(বেজোড়)
নামাযটা যাতে
শেষ রাতেআদায়
করা যায়। তাই
এতে কোন
সমস্যা নেই। অতিরিক্ত এ
রাকাতেরকারণে
এ ব্যক্তি ‘যারা
ইমামের সাথে
শেষ পর্যন্ত
নামায পড়েছেন’
তাদের দল থেকে
বের হয়ে যাবে
না। বরং তিনি
তো ইমামের
সাথে সম্পূর্ণ
নামায আদায়
করেছেন।
তবে ইমামের
সাথে নামায
শেষ করেননি;কিছুটা বিলম্বে
শেষ করেছেন।”
সমাপ্ত
[মাজমূ
ফাতাওয়াইবনে বায (
১১/৩১২)]
শাইখ ইবনে জিবরীনহাফিজাহুল্লাহকে এই প্রশ্নের মত একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল, উত্তরে তিনি বলন: “মুক্তাদির ক্ষেত্রে উত্তম হল ইমামের অনুসরণ করা, যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি তারাবী ও বিতির নামাযশেষ করেন। যাতে করে তার ক্ষেত্রে এই কথা সত্য হয় যে তিনি ইমামের সাথে ইমাম শেষ করা পর্যন্ত সালাত আদায় করেছেন এবং তারজন্য সারারাত ক্বিয়াম করার সওয়াব লেখা হয়; যেমনটি ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য ‘আলেমগণ হাদিস রেওয়ায়েত করেছেন।”
এর উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে, যদি তিনি তাঁর (ইমামের) সাথে বিতির নামায আদায় করেন তবে শেষ রাতে বিতির নামায আদায় করার প্রয়োজন নেই। যদি তিনি শেষ রাতে উঠেন তবে তিনি তার জন্য যত রাকাত সম্ভব তা জোড় সংখ্যায় (অর্থাৎ দুই দুই রাকা‘আত করে) আদায় করবেন। বিতিরের পুনরাবৃত্তি করবে না, কারণ এক রাতে দুইবার বিতির হয় না।
আর কিছু আলেম ইমামের সাথে বিতিরকেজোড় বানিয়ে (অর্থাৎ এক রাকাত যোগ করে) পড়াকে উত্তম হিসেবে গণ্য করেছেন। তা হল এভাবে যে ইমাম সালাম ফিরানো শেষে তিনি অতিরিক্ত এক রাকাত সালাত আদায় করে তারপর সালাম ফিরাবেন এবং বিতিরের নামায শেষরাতে তাহাজ্জুদের সাথে পড়ার জন্য রেখে দিবেন । এর দলীল হচ্ছে- নবীসাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণী :
( فَإِذَاخَشِيَأَحَدُكُمْالصُّبْحَصَلَّىرَكْعَةًوَاحِدَةًتُوتِرُلَهُمَاقَدْصَلَّى ) "
“আপনাদের মধ্যে কেউ ফজর হয়ে যাওয়ার আশংকা করলে আদায় করা সালাতের সাথে এক রাকাত বিতির পড়ে নিবেন।”
তিনি আরও বলেছেন :
( اجْعَلُواآخِرَصَلاتِكُمْبِاللَّيْلِوِتْرًا
“আপনারা বিতিরের (বেজোড়ের) মাধ্যমে আপনাদের রাতের সালাত সমাপ্ত করুন।”সমাপ্ত[ফাতাওয়া রমজান (পৃঃ ৮২৬)]
আল-লাজ্নাদ-দায়িমা দ্বিতীয় ব্যাপারটিকে উত্তম বলে ফতোয়াদিয়েছে।
[ফাতাওয়াল্ লাজনাহ আদ্দায়িমা (ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়াসমগ্র) (৭/২০৭)]
আমরা আল্লাহর কাছে আপনার জন্য তাওফিক ও দ্বীনি অটলতার দোয়া করছি।আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।