আলহামদু লিল্লাহ।.
আলেমগণ কোরবানীর হুকুম নিয়ে মতভেদ করেছেন: কোরবানী করা কি ওয়াজিব যা পালন না করলে গুনাহ হবে; নাকি সুন্নতে মুয়াক্কাদা যা বর্জন করাটা নিন্দনীয়?
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী কোরবানী করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। ইতিপূর্বে 36432 নং প্রশ্নোত্তরে এ বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
কারো জন্য কোরবানী ওয়াজিব হওয়া কিংবা সুন্নত হওয়ার জন্য কোরবানীকারীকে ধনী হওয়া শর্ত। অর্থাৎ তার নিজের খরচপাতি ও সে যাদের খরচ চালায় তাদের খরচপাতির অতিরিক্ত তার কাছে কোরবানী করার অর্থ থাকা। অতএব, কোন মুসলমানের যদি মাসিক বেতন বা আয় থাকে এবং এ বেতন দিয়ে তার খরচ চলে যায়, এর অতিরিক্ত তার কাছে কোরবানীর পশু কেনার অর্থ থাকে তাহলে সে ব্যক্তি কর্তৃক কোরবানী দেয়ার শরয়ি বিধান রয়েছে।
কোরবানী করার জন্য ধনী হওয়া শর্ত মর্মে দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে অথচ সে কোরবানী করেনি সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়”[সুনানে ইবনে মাজাহ (৩১২৩), আলবানী ‘সহিহ সুনানে ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন] এখানে সামর্থ্য দ্বারা উদ্দেশ্য ধনী হওয়া।
প্রতিটি পরিবারের পক্ষ থেকে কোরবানী দেয়ার বিধান রয়েছে। দলিল হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “প্রতিটি পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর একটি কোরবানী দেয়া ওয়াজিব”[মুসনাদে আহমাদ (২০২০৭)] ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে বলেন: হাদিসটির সনদ মজবুত। আলবানী ‘সহিহ সুনানে আবু দাউদ গ্রন্থে (২৭৮৮) হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন]
এ বিধানের ক্ষেত্রে পুরুষ বা নারীর কোন ভেদ নেই। অতএব, কোন নারী যদি একাকী বসবাস করেন কিংবা তাঁর সন্তানদেরকে নিয়ে থাকেন তাহলে তাদেরকে কোরবানী করতে হবে।
আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা গ্রন্থে (৫/৮১) এসেছে-
“কোরবানী ওয়াজিব হওয়া কিংবা সুন্নত হওয়ার জন্য পুরুষ হওয়া শর্ত নয়। কোরবানী পুরুষদের উপর যেমন ওয়াজিব হয় তেমনি নারীদের উপরও ওয়াজিব হয়। কারণ ওয়াজিব হওয়ার দলিলগুলো নর-নারী সবাইকে সমানভাবে শামিল করে।”[সংক্ষেপিত ও সমাপ্ত]
দেখুন: আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা (৫/৭৯-৮১)]
আল্লাহই ভাল জানেন