Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

কর্মস্থলে সেজদা দিলে করোনায় আক্রান্তের আশংকা থেকে তিনি কি সেজদা বাদ দিবেন; নাকি নামাযগুলো বাড়ীতে পড়বেন?

04-06-2020

প্রশ্ন 335350

করোনা ভাইরাসের এ কঠিন দিনগুলোতে আমার কর্মস্থলের নিয়ম হল আমরা জীবানুমুক্ত থাকার ব্যাপারে খুবই সচেতন। এমনকি আমরা যখন করিডোর দিয়ে যাতায়াত করি কিংবা টয়লেটে যাই সেক্ষেত্রেও আমরা মাস্ক পরে যাই। আমার প্রশ্ন হল নামাযে সেজদা দেয়া সম্পর্কে? সেজদার সময় নাক ফ্লোর কিংবা জায়নামায স্পর্শ করে। এখানের ফ্লোর তো আর বাসার ফ্লোরের মত নয়। প্রত্যেকে এখানে জুতা নিয়ে হাঁটে। তাই এখানে ফ্লোর থেকে নাক দিয়ে ভাইরাস সংক্রমণের বড় ধরণের আশংকা রয়েছে। যদি আমি নামায পড়িও এবং কোন একজন সহকর্মী আমাকে দেখে ফেলেন তাহলে সমস্যা। কেননা সেক্ষেত্রে আমি সকল নীতিমালা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সতর্কতাগুলো ভঙ্গকারী গণ্য হব। এমতাবস্থায় আমি কি সেজদা ছাড়া নামায পড়ব? নাকি আমি নামাযগুলো একত্রে আমার বাসায় পড়ব?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

এক:

সেজদা নামাযের একটি রুকন। অক্ষম ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারো সেজদা ছাড়া নামায সহিহ হবে না; সে অক্ষমতা রোগের কারণে হোক কিংবা কোন নাপাক স্থানে বন্দি থাকার কারণে হোক; সেক্ষেত্রে তারা ইশারায় সেজদা দিবে।

'কাশ্‌শাফুল ক্বিনা' গ্রন্থে (১/৩৫১) বলেন: "সক্ষমতা থাকাবস্থায় এই অঙ্গগুলোর উপর তথা সাতটি অঙ্গ: নাকসহ কপাল, হাতদ্বয়, হাঁটুদ্বয়, পাদ্বয়ের উপর সেজদা দেয়া: নামাযের রুকন। যেহেতু ইবনে আব্বাস (রাঃ) মারফু হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, আমাকে সাতটি হাড়ের উপর সেজদা দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে: কপালের উপর, তিনি হাত দিয়ে নাকের দিকে ইশারা করলেন, হাতদ্বয়ের উপর, হাঁটুদ্বয়ের উপর এবং পায়ের আঙ্গুলের অগ্রভাগের উপর।"[মুত্তাফাকুন আলাইহি]

তিনি আরও বলেছেন: "যখন তোমাদের কেউ সেজদা করে তখন তার সাথে সাতটি অঙ্গ সেজদা করে: মুখমণ্ডল, কব্জিদ্বয়, হাঁটুদ্বয়, পায়ের পাতাদ্বয়।"[সহিহ মুসলিম]

পক্ষান্তরে, যে হাদিসে এসেছে "আমার চেহারা সেজদা দিয়েছে…" সে হাদিস অন্য অঙ্গগুলোর সেজদা দেয়াকে নাকচ করে না। বরং সেখানে চেহারাকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যেহেতু সেজদা দেয়ার ক্ষেত্রে কপালই হলো প্রধান। তাই নামায আদায়কারী সেজদা দেয়াকালে যখনই এ অঙ্গগুলোর কোনটির ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটবে তার সেজদা সহিহ হবে না।

"যদি কপাল দিয়ে সেজদা দিতে অক্ষম হয় তাহলে যতটুকু পারে ইশারা করবে এবং অপর অঙ্গগুলোর সেজদা দেয়া মওকুফ হয়ে যাবে। যেহেতু সেজদা দেয়ার ক্ষেত্রে কপালই হলো প্রধান। অন্য অঙ্গগুলো কপালের অনুবর্তী। তাই প্রধান অঙ্গের জন্য মওকুফ হয়ে গেলে অন্য অঙ্গের জন্যেও মওকুফ হয়ে যায়। আর যদি কপাল দিয়ে সেজদা দিতে সক্ষম হয় তাহলে পূর্বোক্ত হেতুর ভিত্তিতে অন্য অঙ্গগুলো কপালের অনুবর্তী হবে।"[সমাপ্ত]

দুই:

নামাযকে এর ওয়াক্ত থেকে বিলম্ব করা বৈধ নয়; যোহরকে আসরের সাথে একত্রিত করা এবং মাগরিবকে এশার সাথে একত্রিত করা একত্রিতকরণকে বৈধকারী ওজরের প্রেক্ষিতে জায়েয।

ওজরের বিবরণ: 147381 নং প্রশ্নোত্তরে দেখুন।

রোগে আক্রান্ত না হওয়ার জন্য যে সতর্কতার কথা আপনি উল্লেখ করেছেন সেটা সেজদা বাদ দেয়া কিংবা নামায একত্রে আদায় করার কোন ওজর নয়। আপনার পক্ষে একটি জায়নামায রেখে দেয়া সম্ভব; যে জায়নামাযের উপর আপনি নামায আদায় করবেন এবং জায়নামাযের যে অংশটি ফ্লোরকে স্পর্শ করে সে অংশটি জীবানুমুক্ত করে নিবেন।

অনুরূপভাবে আপনি কিছু পরিচ্ছন্ন পলিথিন আপনার সাথে রাখতে পারেন। প্রত্যেকবার একটি পলিথিনের উপরে নামায পড়ে নামায শেষে সেটি ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন। এভাবে আপনি ফ্লোর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন এবং সংক্রমণ থেকেও নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

নামাযের বিধিবিধান
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান