আমানতদার মুসলিম ব্যবসায়ীর বৈশিষ্ট্যাবলি

প্রশ্ন: 283602

ব্যবসার ক্ষেত্রে মূলনীতি কিংবা সীমারেখাগুলো কী কী? অর্থাৎ বর্তমানে আমার বেশ কিছু প্রতিযোগী রয়েছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিযোগীকে সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে, গোয়েন্দাগিরি করে। কেউ কেউ তার প্রতিযোগীকে এই মূলনীতির জায়গা থেকে পিষে ফেলতে চায় যে, ব্যবসায় কোনো দয়ামায়া নেই। অথবা এটা মনে করে যে, আমি যদি এমন না করি; আমার সাথেই এমনটি করা হবে। প্রতিযোগীদের সাথে আমার কোন কাজগুলো করা অনুমোদিত? ক্রেতাদেরকে আমার থেকে কেনার ব্যাপারে প্রভাবিত করার জন্য কি আমি কিছু লোককে ভাড়া করতে পারব যারা ক্রেতাদেরকে আমার পণ্য কিনতে পরামর্শ দিবে? মানুষজন তাদেরকে ক্রেতা মনে করবে, কিন্তু তারা আসলে ক্রেতা নয়। বরং তারা মানুষকে আমার পণ্যের দিকে টানতে কাজ করবে। এই পণ্যে আমি কোনো ধরনের জালিয়াতি করি না। এর হুকুম কী? আমার জন্য কি আমানতদারিতা হিসেবে ক্রেতাদেরকে আমার পণ্যের কাঁচামালের উৎসের ব্যাপারে জানানো আবশ্যক? এটি প্রসিদ্ধ বিষয় যে পণ্যের কাঁচামাল সংক্রান্ত তথ্য কোম্পানি এবং ব্যবসায়ীদের অন্যতম গোপন বিষয়। প্রতিযোগী ও ক্রেতা হিসেবে মানুষের সাথে লেনদেন করার সময় নানা প্রকার সংশয়ের মুখে আমি কীভাবে আমানতদার ব্যবসায়ী হতে পারব? একজন ব্যবসায়ীর দৈনন্দিন জীবনের ম্যানুয়াল হবে এমন কোনো ইলমী বইয়ের পরামর্শ দিবেন কী?

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। পর সমাচার:

এক:

ব্যবসায়ীকে অবশ্যই কিছু উত্তম গুণাবলি ধারণ করতে হবে যেন আল্লাহ তার ব্যবসায় ও রিযিকে বরকত দান করেন।

সেই সমস্ত গুণাবলির মাঝে রয়েছে:

  • তার ব্যবসা যেন কোনোভাবে তাকে আল্লাহর যিকির, নামায, আল্লাহর আর্থিক হক আদায় করা থেকে ভুলিয়ে না রাখে। যে সমস্ত মুমিন বান্দাদের ব্যবসা তাদেরকে আল্লাহর আনুগত্য থেকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে না তাদের প্রশংসা করে আল্লাহ বলেন:

رِجَالٌ لَا تُلْهِيهِمْ تِجَارَةٌ وَلَا بَيْعٌ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ يَخَافُونَ يَوْمًا تَتَقَلَّبُ فِيهِ الْقُلُوبُ وَالْأَبْصَارُ * لِيَجْزِيَهُمُ اللَّهُ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا وَيَزِيدَهُمْ مِنْ فَضْلِهِ وَاللَّهُ يَرْزُقُ مَنْ يَشَاءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ

“এমন লোকরা যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর যিকির থেকে, নামায কায়েম করা থেকে এবং যাকাত দেওয়া থেকে বিরত রাখে না। তারা সেই (কেয়ামতের) দিনটিকে ভয় করে যখন (মানুষের) অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ ওলটপাল্ট (বিপর্যস্ত) হয়ে যাবে।”[সূরা নূর: ৩৭-৩৮]

  • সে যেন হালাল অনুসন্ধান করে, নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের মাঝে হারাম কোনো কিছুর প্রবেশ না ঘটায়। আল্লাহ তাআলা বলেন:

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُمْ بَيْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।” [সূরা নিসা: ২৯]

  • সে যেন সংশয়গুলো থেকে দূরে থাকে। হাদীসে আছে: “যে ব্যক্তি সংশয় থেকে বেঁচে থাকে সে তার দ্বীন ও সম্মানকে রক্ষা করে। আর যে সংশয়ে পড়ে যায় সে হারামেই পড়ে যায়।”[হাদীসটি বুখারী (৫২) ও মুসলিম (১৫৯৯) বর্ণনা করেন]
  • সে যেন সততা, সত্যবাদিতা এবং আল্লাহভীরুতার বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। হাকীম ইবনে হিযাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “ক্রেতা-বিক্রেতা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাদের (চুক্তি বাতিলের) স্বাধীনতা রয়েছে। যদি তারা সত্য কথা বলে এবং (পণ্যের প্রকৃতি) খুলে বলে, তাহলে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত দেওয়া হয়। আর যদি তারা (দোষ-ত্রুটি) গোপন রাখে এবং মিথ্যা বলে, তাহলে তাদের দু'জনের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত নষ্ট হয়ে যায়।”[হাদীসটি বুখারী (১৯৭৩) ও মুসলিম (১৫৩২) বর্ণনা করেন]

ইসমাঈল ইবনে উবাইদ ইবনে রিফায়া তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন: তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে নামাযের স্থানের উদ্দেশে বের হয়ে দেখতে পেলেন লোকজন কেনাবেচা করছে। তিনি বললেন: “হে ব্যবসায়ীরা!” তারা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায় সাড়া দিয়ে মাথা ও দৃষ্টি উঁচু করল। তিনি বললেন: “ব্যবসায়ীরা কিয়ামতে দিন পাপী হিসেবে পুনরুত্থিত হবে কেবল তারা ছাড়া, যারা আল্লাহকে ভয় করে, সততা রক্ষা করে ও সত্য কথা বলে।”[হাদীসটি তিরমিযী (১২১০) ও ইবনে মাজাহ (২১৪৬) বর্ণনা করেন। শাইখ আলবানী ‘সহীহুত তারগীব’ (১৭৮৫) গ্রন্থে এটিকে সহিহ বলে গণ্য করেন]

  • দান-সদকার ব্যাপারে অবহেলা না করা। ক্বাইস ইবনে আবী গারাযা বর্ণনা করেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন: “হে ব্যবসায়ীরা, ক্রয়-বিক্রয়ে অনর্থক কথা ও শপথ হয়ে যায়। তোমরা সেটিকে দান-সদকার মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন করে নিবে।”[হাদীসটি তিরমিযী (১২০৮), আবু দাউদ (৩৩২৬), নাসাঈ (৩৭৯৭) ও ইবনে মাজাহ (২১৪৫) বর্ণনা করেন। শাইখ আলবানী সহীহ আবু দাউদ গ্রন্থে এটিকে সহিহ বলে গণ্য করেন]
  • উদারতা ও সহজতা। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “যে ব্যক্তি বিক্রয়কালে উদারচিত্ত, ক্রয়কালেও উদারচিত্ত এবং পাওনা আদায়ের তাগাদায়ও উদারচিত্ত আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি দয়া করুন।”[হাদীসটি বুখারী (১৯৭০) বর্ণনা করেন]
  • অভাবী ঋণগ্রহীতাকে অবকাশ দেওয়া এবং ঋণ মাফ করে দেওয়া। আবুল ইউসর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “যে লোক অভাবী ঋণগ্রস্তকে সুযোগ প্রদান করে অথবা ঋণ মাফ করে দেয় কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করবেন।”[হাদীসটি মুসলিম (৩০০৬) বর্ণনা করেন]
  • হারাম লেনদেন ও নিন্দনীয় বৈশিষ্ট্য থেকে দূরে থাকবে যা মুসলিমের জন্য সমীচীন নয়; হোক সে ব্যবসায়ী কিংবা ব্যবসায়ী নয়। যেমন: সুদী লেনদেন করা, প্রতারনামূলক বিক্রয়, ঈনা (নির্দিষ্ট মূল্যে কোনো নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বাকিতে একটি বস্তু বিক্রিকরে পুনরায় বিক্রেতা প্রথম মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে বস্তুটি ক্রেতার কাছ থেকে নগদে ক্রয় করে নেওয়া) পদ্ধতির বিক্রয় করা, হারাম বস্তু দিয়ে ব্যবসা করা, ধোঁকা, মিথ্যা, প্রতারণা করা ইত্যাদি।
  • অনুরূপভাবে একজন মুসলিম ব্যবসায়ীর ভালো চরিত্রগুলো ধারণে আগ্রহী হওয়া। যেমন: অনুতপ্ত ক্রেতা থেকে পণ্য ফেরত নেয়া, অভাবীকে সাহায্য করা, নিজের জন্য যা ভালোবাসে অন্য মুসলিম ব্যবসায়ী ভাইয়ের জন্যেও তা ভালোবাসা, নিজের জন্য ও মুসলিম ভাইদের জন্য বেশি বেশি দোয়া করা; যাতে করে আল্লাহ তাদের জন্য হারামের বদলে হালালকে যথেষ্ট করে দেন এবং তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ দিয়ে অন্য কারো অমুখাপেক্ষী করে দেন।

এছাড়াও সে আল্লাহর উপর উত্তম তাওয়াক্কুল করবে। তার অন্তরকে সকল কারণের কর্তা ও সৃষ্টিকুলের রিযিকদাতার সাথে সম্পৃক্ত করবে। সে লোভ, লিপ্সা, কৃপণতা, সম্পদের প্রতি আসক্তি, ওজনে কম দেওয়া, মজুদদারি করাসহ অন্য সব নিন্দনীয় বৈশিষ্ট্য থেকে দূরে থাকবে। এর বিপরীতে প্রশংসনীয় চরিত্র ধারণ করবে, যথা: সত্যবাদিতা, উত্তম ব্যবহার, মানুষের কল্যাণ কামনা করা, বদান্যতা প্রভৃতি।

দেখুন: (134621), (128891) ও (131590) নং প্রশ্নোত্তর।

দুই:

ব্যবসায়ীদের উপর গোয়েন্দাগিরি করা, প্রতিযোগীদের ইচ্ছাকৃত ক্ষতি করা, ব্যবসায় ‘কারো প্রতি দয়া দেখানো চলবে না’ এমন কথা বলা— এগুলো সবই হারাম। মুসলিম ব্যবসায়ীর জন্য এমনটি করা সমীচীন নয়। গোয়েন্দাগিরি হারাম। মুসলিম ব্যক্তির ইচ্ছাকৃত ক্ষতি করা হারাম। মুসলিম ব্যক্তির উচিত হলো নিজের জন্য সে যা ভালোবাসে তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য সেটাকে ভালোবাসা। নিজের জন্য সে যা অপছন্দ করে তার মুসলিম ভাইয়ের জন্যেও সেটাকে অপছন্দ করা।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সহিহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন: “ক্ষতি করা নয় এবং ক্ষতির বিপরীতে ক্ষতি করাও নয়।”[হাদীসটি ইবনে মাজাহ (২৩৪০) বর্ণনা করেন এবং শাইখ আলবানী সহিহ ইবনে মাজাহ গ্রন্থে এটিকে সহিহ বলে গণ্য করেন]

শাওকানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন:

‘উক্ত হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে পাল্টাপাল্টি ক্ষতি হারাম; সেটি যে কোনো রূপেই হোক না কেন। সুতরাং কোনো রূপেই ক্ষতি করা জায়েয নয়; যতক্ষণ না এমন কোন দলিল পাওয়া যায় যা এই দলিলের ব্যাপকতাকে সংকোচন করবে।’[সমাপ্ত][নাইলুল আওত্বার (৫/৩১১)]

বুখারী (১৩), মুসলিম (৪৫) ও নাসাঈ (৫০১৭) বর্ণনা করেন (হাদীসের শব্দ নাসাঈর), আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ তার শপথ করে বলছি, তোমাদের কেউ ততক্ষণ ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা ভালোবাসে যা সে নিজের জন্য ভালোবাসে।”

হাফেয রাহিমাহুল্লাহ বলেন: ‘কিরমানী বলেছেন: ঈমানের অন্তর্ভুক্ত হলো ব্যক্তি তার নিজের জন্য যে অনিষ্টকে ঘৃণা করে, সেটি তার ভাইয়ের জন্যেও ঘৃণা করবে।’[সমাপ্ত]

অনুরূপভাবে মুসলিমদের ব্যাপারে মন্দ ধারণা করাও জায়েয নেই। এক ব্যবসায়ী অন্য ব্যবসায়ীর ব্যাপারে বলবে না: ‘আমি যদি তাকে এমনটা না করি তাহলে সে আমার সাথে এমন করবে।’ বরং সে মুসলিম ভাইয়ের ব্যাপারে সু-ধারণা করবে। মন্দের বিপরীতে মন্দ কিছু করবে না। সে ক্ষমা করে দিবে এবং উপেক্ষা করবে। যেমনটি ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্র।

বরং প্রতিযোগিতা হবে সম্মানজনক, যা সত্যবাদিতা, ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার উপর প্রতিষ্ঠিত। এই প্রতিযোগিতায় অন্তর নিষ্কলুষ থাকবে, যুলুম থাকবে না, অন্যায়ভাবে মানুষের সম্পদ গ্রাস করা হবে না, কৃপণতা থেকে মুক্ত থাকবে এবং এমন মোহ থেকে পবিত্র থাকবে যা আসক্তি, লোভ ও লিপ্সার উপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা বাজারের চাহিদা ও যোগানের উপর ভিত্তি করে লেনদেন করব। কোনো পণ্য মজুদ করে রাখব না। কারো প্রতি কোনো যুলুম করব না।

তিন:

ক্রেতাদের সাথে লেনদেন অবশ্যই সত্যবাদিতার ভিত্তিতে হতে হবে। এতে কোনো ধরনের ধোঁকা, প্রতারণা ও যুলুম থাকবে না। আপনি কিছু মানুষ ভাড়া করবেন, যারা ক্রেতাদের সাথে মিশে গিয়ে আপনার পণ্যটি কেনার পরামর্শ দিবে, আর ক্রেতারা মনে করবে তারাও ক্রেতা— এটি কোনোভাবে জায়েয নেই। কারণ এটি ধোঁকা, মিথ্যাচার ও প্রতারণার অন্তর্ভুক্ত। এ সবই আল্লাহর দ্বীনে হারাম। আর যেহেতু এটি একজন মুসলিম ব্যবসায়ীর সত্যবাদিতা ও সততার যে গুণাবলি থাকা উচিত এর বিপরীত।

আল্লাহ ভালো জানেন তবে স্পষ্টত বোঝা যায় যে এটি নিষিদ্ধ ‘নাজাশ’-এর অন্তর্ভুক্ত।

ইমাম নববী বলেন: ‘নাজাশ হচ্ছে বাজারে ডাক তুলে পণ্যের মূল্য বাড়ানো; অথচ ব্যক্তির পণ্যটি কেনার ইচ্ছা নেই। বরং তার উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্য কেউ যেন ধোঁকাগ্রস্ত হয়। এটি হারাম।’[রিয়াদুস সালিহীন (১৭৪) থেকে সমাপ্ত]

এখানে বিক্রেতা যা করছে তা ‘নাজাশ’-এর বাইরে নয়। সে ক্রেতাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে।

মুসলিম ব্যবসায়ী আল্লাহকে ভয় করবে, মানুষের সাথে সত্য কথা বলবে, আমানতদারিতা বজায় রাখবে, মানসম্মত ও উপকারী পণ্য বাজারজাত করার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবে। সে উত্তম চরিত্র ধারণের ব্যাপারে সচেতন হবে। এই বিষয়গুলো তার ক্রেতা বাড়াবে এবং এর মাধ্যমে সে ব্যবসায় লাভবান হবে। এভাবে সে বাজারে সত্যবাদী আমানতদার ব্যবসায়ী হিসেবে গণ্য হবে। তখন মানুষ সব জায়গা থেকে তার কাছে আসবে। আল্লাহ তাকে মানুষের কাছে প্রিয় করে তুলবেন। মুসলিম, সত্যবাদী, আমানতদার, বদান্য, চরিত্রবান, বন্ধুভাবাপন্ন ও দয়ালু ব্যবসায়ী হিসেবে তার গ্রহণযোগ্যতা ছড়িয়ে পড়বে।

চার:

আপনার পণ্যের কাঁচামাল সম্পর্কে ক্রেতাদেরকে জানানো আপনার উপর আবশ্যক নয়। আপনাকে কোনো ক্রেতা এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে আপনার সামনে দুটি অপশন রয়েছে। হয়তো আপনি তাকে সত্য জানিয়ে দিবেন। নতুবা তার কাছে উত্তর না দেওয়ার ব্যাপারে কৈফিয়ত দিবেন। কিন্তু তাকে অসত্য কিছু জানানো আপনার জন্য জায়েয নেই।

আমরা আপনাকে হুসামুদ্দীন ইবনে আফ্‌ফানা রচিত فقه التاجر المسلم , ড. আব্দুল্লাহ আল-মুসলিহ ও সালাহ আস-সাওয়ী রচিত ما لا يسع التاجر جهله এবং ড. নিযার মাহমুদ কাসেম আশ-শাইখ রচিত أخلاق المسلم في التجارة বই পড়ার পরামর্শ দিব।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

answer

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ

at email

নিউজলেটার

ওয়েবসাইটের ইমেইল ভিত্তিক নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত পৌঁছতে ও ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করতে

download iosdownload android