বৃহস্পতিবার 23 শাওয়াল 1445 - 2 মে 2024
বাংলা

যে অসুস্থ ব্যক্তি রোযা রাখতে পারে না

প্রশ্ন

আমার উপর গত রমযানের অনেক রোযার কাযা পালন বাকী রয়েছে। এখনও আমি সেগুলো রাখতে পারিনি। বর্তমানে পাকস্থলির এক রোগে ভুগছি। রোযা রাখতে পারি না। আমি জানি না যে, ভবিষ্যতে কি রোযা রাখতে পারব; নাকি পারব না (কারণ হতে পারে আমার রোগটি দূরারোগ্য)। এই রমযানের ব্যাপারে এবং বিগত রোযাগুলোর ব্যাপারে আমি কী করব

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

আমরা মহান আরশের প্রভু আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করছি তিনি যেন আপনাকে সুস্থ করে দেন।

আপনার উপর আবশ্যক হল নির্ভরযোগ্য ডাক্তারের কথার উপর নির্ভর করা। আপনি যে রোগে ভুগছেন যদি এ রোগ থেকে মুক্তির আশা থাকে তাহলে আপনি সুস্থ হওয়ার পর বর্তমান রমযান ও বিগত রমযানের যে দিনগুলোর রোযা রাখতে পারেননি সেগুলোর কাযা পালন করবেন। যেহেতু আল্লাহ্‌তাআলা বলেন: আর কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করবে[সূরা বাক্বারা, ২: ১৮৫]

আর যদি রোগটি দূরারোগ্য হয়; আরোগ্য লাভের আশা না থাকে; তাহলে আপনার উপর আবশ্যক হল: বর্তমান রমযান ও বিগত রমযানের প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়ানো। যেহেতু আল্লাহ্‌তাআলা বলেন: আর যাদের জন্য সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদিয়া দেয়া তথা একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৪]

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন: “তিনি (আয়াতে উদ্ধৃত ব্যক্তি) হচ্ছেন: বয়োবৃদ্ধ নর ও নারী; যারা রোযা রাখতে পারেন না। তারা প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়াবেন।”[সহিহ বুখারী (৪৫০৫)]

যে রোগীর আরোগ্য লাভের আশা নেই তার হুকুম বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তির হুকুমের অনুরূপ।

ইবনে কুদামা (রহঃ) ‘আল-মুগনী’ গ্রন্থে (৪/৩৯৬) বলেন:

“যে রোগীর আরোগ্য লাভের আশা নেই তিনি রোযা না রেখে প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন। কেননা তিনি বৃদ্ধ লোকের হেতুর অধিভুক্ত।”[সমাপ্ত]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) “মাজালিসু রামাদান” (পৃষ্ঠা-৩২) বলেন:

“রোযা রাখতে অক্ষম ব্যক্তি যার অক্ষমতা চলমান ও দূর হওয়ার আশা নেই, যেমন বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি কিংবা ক্যান্সারের মত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যার সুস্থতার আশা নেই; এমন লোকের উপর রোযা রাখা ওয়াজিব নয়। কেননা তিনি রোযা রাখতে সক্ষম নন। আল্লাহ্‌তাআলা বলেন: তোমরা সাধ্যানুযায়ী আল্লাহ্‌কে ভয় কর[সূরা তাগাবুন, আয়াত: ১৬] তিনি আরও বলেন: "আল্লাহ্‌কাউকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্বারোপ করেন না"[সূরা বাক্বারা, ২:২৮৬]

তবে এমন ব্যক্তির উপর প্রতিদিনের রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাদ্য খাওয়ানো ওয়াজিব।[সমাপ্ত]

আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব