আলহামদু লিল্লাহ।.
আপনার বিষয়টি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পেশ করা উচিত। যদি এই ব্যথা সন্তান জন্মদানে কিংবা স্ত্রী সহবাসে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে কিংবা এই ব্যথা নিয়ে আপনি চাকুরী করতে বা উপার্জন করতে সক্ষম না হন তাহলে আপনি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন তাকে বিষয়টি জানানো আবশ্যক হবে। যদি সে এটি মেনে নেয় তাহলে তাকে বিয়ে করতে আপনার কোন সমস্যা নেই। যদি আপনি সেটা পরিস্কার না করেন তাহলে আপনি তার সাথে জালিয়াতি করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি জালিয়াতি করে আমার দলভুক্ত নয়।”[সহিহ মুসলিম (১০২)]
আমরা উপরে যা উল্লেখ করেছি সেটা এ মাসয়ালার অগ্রগণ্য অভিমতের ভিত্তিতে তথা যে সকল ত্রুটির প্রেক্ষিতে বিয়ের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় সেটা জানানো আবশ্যক। সেই ত্রুটি গোপন করলে ত্রুটিটি জানার পর বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার এখতিয়ার সাব্যস্ত হবে।
ইবনুল কাইয়্যেম (রহঃ) বলেন: “কিয়াস হচ্ছে প্রত্যেক এমন ত্রুটি যা স্বামী-স্ত্রীর একজনকে থেকে অপরজনকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং এর কারণে বিয়ের উদ্দেশ্য হাছিল না হয়; যেমন মমত্ব ও হৃদ্যতা; এমন ত্রুটি (বিয়ে ভাঙ্গার) এখতিয়ারকে আবশ্যক করে।”[যাদুল মাআদ (৫/১৬৬)]
তিনি আরও বলেন: “যে ব্যক্তি সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফদের ফতোয়াগুলো ভেবে দেখেন তিনি দেখবেন যে, তারা বিয়ে প্রত্যাহার করাকে এক ত্রুটির বদলে অন্য ত্রুটির জন্য খাস করেননি।”
তিনি আরও বলেন: যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিক্রেতার জন্য পণ্যের ত্রুটি গোপন করাকে হারাম করে থাকেন এবং যে ব্যক্তি পণ্যের ত্রুটি জানে ক্রেতার কাছে সেই ত্রুটি গোপন করাকে তার উপরও হারাম করে থাকেন; তাহলে বিয়ে সংক্রান্ত ত্রুটির বিষয়টি কেমন হতে পারে? ফাতেমা বিনতে কাইস (রাঃ) যখন নবী সাল্লাল্লাহু্ আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে মুয়াবিয়া (রাঃ) ও আবুল জাহম (রাঃ) এর ব্যাপারে পরামর্শ চাইলেন তখন তিনি বললেন: “মুয়াবিয়া হলো কপর্দকহীন; তার সম্পদ নাই। আর আবু হাজম তার কাঁধ থেকে লাঠি নামায় না।” এর থেকে জানা যায় যে, বিয়ের ক্ষেত্রে ত্রুটি প্রকাশ করা অধিক যুক্তিযুক্ত ও আবশ্যক। সুতরাং ত্রুটি গোপন করা, ধোঁকা দেয়া ও জালিয়াতি করার মাধ্যমে কিভাবে বিয়ের চুক্তি অনিবার্য হতে পারে? অথচ এই ত্রুটিটিকে বিয়ের কোন পক্ষের গলায় একটি অনিবার্য কাঁটা বানানো হয়েছে; অথচ সেই ব্যক্তি এর থেকে তীব্র পলায়নপর।[যাদুল মাআদ থেকে (৫/১৬৮) সমাপ্ত]
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) বলেন: “সঠিক অভিমত হলো: ত্রুটি হচ্ছে— যে কারণে বিয়ের উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। নিঃসন্দেহে বিয়ের উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে— উপভোগ করা, সেবা পাওয়া ও সন্তান জন্মদান। শেষোক্তটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। যা কিছু এ উদ্দেশ্যগুলোকে ব্যাহত করবে সেটাই ত্রুটি। এর ভিত্তিতে কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীকে বন্ধ্য পান কিংবা স্বামী তার স্ত্রীকে বন্ধ্যা পান তাহলে সেটা ত্রুটি।[আল-শারহুল মুমতি (৫/২৭৪) থেকে সমাপ্ত]
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।