আলহামদু লিল্লাহ।.
এ স্রাব এর আলোচনায় দুইটি মাসয়ালা আসবে:
এক. এ স্রাব কি পবিত্র; নাকি অপবিত্র?
ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আহমাদ ও ইমাম শাফেয়ির এক বর্ণনা মতে (ইমাম নববী এ মতকে সঠিক বলেছেন), এ স্রাব পবিত্র।
এটি শাইখ উছাইমীন (রহঃ) এরও অভিমত। আল্লাহ্ সকলের প্রতি রহম করুন।
তিনি আল-শারহুল মুমতি (১/৪৫৭) গ্রন্থে বলেন:
“নিঃসৃত এই স্রাব যদি মুত্রনালী দিয়ে বের হয় তাহলে সেটা পবিত্র। কেননা এটি খাবার ও পানীয় এর বর্জ্য নয়; সুতরাং এটা পেশাব নয়। আর যে কোন কিছুর মূল অবস্থা হচ্ছে– পবিত্রতা; যতক্ষণ না অপবিত্রতার পক্ষে কোন দলিল সাব্যস্ত হয়। তাছাড়া কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তার জন্য পুরুষাঙ্গ ধৌত করা কিংবা এসব তার কাপড়ে লেগে থাকলেও কাপড় ধৌত করা অনিবার্য নয়। যদি এগুলো নাপাক হয় তাহলে বীর্য নাপাক হওয়াও অনিবার্য হয়ে যায়। কেননা বীর্য এসব স্রাবের সাথে মিশে যায়। [সমাপ্ত]
দেখুন: ‘আল-মাজমু (১/৪০৬), ‘আল-মুগনি’ (২/৮৮)।
অতএব, এ ধরণের স্রাব যদি কাপড়ে লাগে তাহলে কাপড় ধৌত করা কিংবা পরিবর্তন করা আবশ্যকীয় নয়।
দুই. এ ধরণের স্রাব বের হওয়ার কারণে কি ওযু ভেঙ্গে যাবে? নাকি ভাঙ্গবে না?
অধিকাংশ আলেমের মতে, এ ধরণের স্রাব বের হওয়ার কারণে ওযু ভেঙ্গে যাবে।
শাইখ উছাইমীন (রহঃ) এ অভিমতটি গ্রহণ করেছেন। এমনকি তিনি বলেন:
যে ব্যক্তি অন্য মতটিকে আমার দিকে সম্পৃক্ত করে সে সত্যবাদী নয়। খুব সম্ভব ‘আমি যে বলেছি এগুলো পবিত্র’ এর থেকে সে বুঝেছে যে, এগুলো ওযু ভঙ্গ করবে না।[সমাপ্ত]
[মাজমুউ ফাতাওয়াস শাইখ বিন উছাইমীন (১১/২৮৭)]
তিনি আরও বলেন (১১/২৮৫):
“কিছু কিছু নারী মনে করেন যে, ‘এতে ওযু ভাঙ্গবে না’ – আমি এ অভিমতের কোন ভিত্তি জানি না; শুধু ইবনে হাযমের উক্তি ছাড়া।”[সমাপ্ত]
কিন্তু কোন নারী থেকে যদি এ স্রাব অব্যাহতভাবে বের হতে থাকে তাহলে সে নারী ওয়াক্ত প্রবেশ করার পর প্রত্যেক নামাযের জন্য ওযু করবেন। ওযু করার পর যদি কোন কিছু বের হয় এতে কোন অসুবিধা নেই; এমনকি সেটা নামাযের মধ্যে হলেও।
শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন:
“উল্লেখিত স্রাব যদি অধিকাংশ সময় অব্যাহতভাবে বের হয় তাহলে এ নারীর উপর প্রত্যেক নামাযের জন্য ওয়াক্ত প্রবেশ করার পর ওযু করা আবশ্যক; যেমনটি ঋতুস্রাবের অনিয়মগ্রস্ত নারী ও অনর্গল প্রশ্রাব ঝরে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর যদি এ স্রাব কখনও কখনও বের হয়; সবসময় নয়; তাহলে এর হুকুম প্রশ্রাবের হুকুম। যখন বের হবে ওযু নষ্ট হবে; এমনকি নামাযের মধ্যে বের হলেও।”[সমাপ্ত]
[মাজমুউ ফাতাওয়া বিন বায (১০/১৩০)]
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।