আলহামদু লিল্লাহ।.
পবিত্রতাসহ আযান দেয়া মুস্তাহাব; ওয়াজিব নয়। পবিত্রতাসহ আযান দেয়া সম্পর্কে একটি হাদিস উদ্ধৃত হয়েছে: “ওযু অবস্থায় ছাড়া আযান দিবে না”।[সুনানে তিরমিযি (১৪৭)] এই কথাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উক্তি মারফু হাদিস হিসেবে বর্ণিত হয়েছে এবং আবু হুরায়রা (রাঃ) এর উক্তি মাওকুফ হাদিস হিসেবেও বর্ণিত হয়েছে। তবে উভয়টি দুর্বল; সহিহ নয়।[দেখুন: তামামুল মিন্নাহ (পৃষ্ঠা-১৫৪)]
ইবনে কুদামা (রহঃ) আল-মুগনী গ্রন্থে (১/২৪৮) বলেন: মুয়াজ্জিন লঘু অপবিত্রতা ও জানাবত উভয়টি থেকে পবিত্র হওয়া মুস্তাহাব।[সমাপ্ত] তিনি পূর্বোক্ত হাদিস দিয়ে দলিল পেশ করেছেন।
ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: ওযু ছাড়া আযান দেয়া কি জায়েয এবং জুনুবী (গুরু অপবিত্রতা) অবস্থায় আযান দেয়ার হুকুম কি?
জবাবে তারা বলেন: লঘু অপবিত্রতা কিংবা গুরু অপবিত্রতা নিয়ে আযান দিলে আযান সঠিক হবে। তবে উত্তম হচ্ছে উভয় প্রকার অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হয়ে আযান দেয়া।[সমাপ্ত][ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা (৬/৬৭)]
জুনুবী ব্যক্তি মসজিদে অবস্থান করা নিষেধ। কিন্তু আযান কিংবা অন্য কোন প্রয়োজন হলে তিনি ওযু করে মসজিদে প্রবেশ করবেন। কাশ্শাফুল ক্বিনা গ্রন্থে (১/১৪৮) বলেন: জুনুবী (অপবিত্র) ব্যক্তির জন্য মসজিদে অবস্থান করা হারাম। যেহেতু আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “এবং (দৈহিক) অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না গোসল কর।”[সূরা নিসা, আয়াত: ৪৩] তবে ওযু করে নিয়ে অবস্থান করতে পারবে। যেহেতু আতা বিন ইয়াসার থেকে সাঈদ বিন মানসুর বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদের কিছু লোককে এমন দেখেছি যে, তারা ওযু করে নিয়ে অপবিত্র অবস্থায় মসজিদে বসে থাকতেন। আল-মুবদি গ্রন্থে বলেন: এর সনদ সহিহ। এবং যেহেতু ওযুকরণ অপবিত্রতাকে কিছুটা হালকা করে। ফলে কিছু নিষেধাজ্ঞা দূর হয়ে যায়। শাইখ তাক্বী উদ্দিন (শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া) বলেন: সেক্ষেত্রে মসজিদে ঘুমানো জায়েয হবে যেভাবে অন্যেরা সেখানে ঘুমায়।”[পরিমার্জিতভাবে সমাপ্ত][দেখুন: আল-শারহুল মুমতি’ (২/৫৭)]
যদি কোন মুয়াজ্জিন অপবিত্রতার কথা ভুলে গিয়ে মসজিদে প্রবেশ করে থাকে তার উপর কোন কিছু বর্তাবে না। কেননা বিস্মৃতির কারণে তার ওজর গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “হে আমাদের প্রভু! আমরা যদি বিস্মৃত হই কিংবা ভুলে যাই আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না।” এবং সহিহ মুসলিমে (১২৬) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে উদ্ধৃত হয়েছে যে, আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “আমি তাই করেছি”। অর্থাৎ আল্লাহ্ তাআলা বিস্মৃত ব্যক্তি ও ভুলকারীকে ছেড়ে দিয়েছেন।
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।