রবিবার 21 জুমাদাল ছানী 1446 - 22 ডিসেম্বর 2024
বাংলা

নতুন চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে টেলিস্কোপ জাতীয় যন্ত্রপাতির সাহায্য নেয়া জায়েয; জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনার সাহায্য নয়

প্রশ্ন

নতুন চাঁদের বয়স ৩০ ঘণ্টা হওয়ার আগে খালি চোখে তা দেখা সম্ভব নয়। এছাড়া কখনো আবহাওয়াজনিত কারণে তা দেখা সম্ভব হয় না। এর উপর ভিত্তি করে কি অ্যাসট্রনমিক্যাল তথ্যাদির সাহায্যে নতুন চাঁদ দেখার সম্ভাব্য সময় ও রমজান মাস শুরু হওয়ার সময় হিসাব করা জায়েয? নাকি পবিত্র রমজান মাস শুরু করার আগে নতুন চাঁদ দেখা আমাদের উপর ওয়াজিব?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

সমস্তপ্রশংসাআল্লাহরজন্য। নতুনচাঁদদেখারজন্যদূরবীক্ষণযন্ত্রের সাহায্যনেয়াজায়েয। কিন্তু পবিত্র রমজানমাসের শুরু সাব্যস্ত করা কিংবাঈদের দিন নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে জ্যোতির্বিজ্ঞানেরউপরনির্ভরকরাজায়েযনয়। কারণ আল্লাহ তাঁর কিতাবে কিংবা তার নবীর হাদিসে জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করা আমাদের জন্যশরিয়তসিদ্ধ করেন নি। বরং আমাদের জন্য চাঁদ দেখাকে শরিয়তসিদ্ধ করেছেন। রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে রোজা শুরু করা এবং শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে রোজা ছাড়া এবং ঈদুল ফিত্বরের নামাযের জন্য মিলিত হওয়াকে শরিয়তসিদ্ধ করেছেন। মানুষের কাজ কর্মের হিসাব নির্ণয় ও হজ্জের সময় নির্ণয়ক বানিয়েছেন চন্দ্রকে।তাই কোনো মুসলিমের জন্য এ পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে ইবাদতের সময়সীমা নির্ধারণ করা জায়েয নয়। যেমন-রমজান মাসের রোজা,ঈদ উদযাপন, বায়তুল্লার হজ্জ আদায়, ভুলক্রমে হত্যার কাফ্‌ফারার রোজা, যিহারের কাফ্‌ফারার রোজা ইত্যাদি।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

قال تعالى : ( فمن شهد منكم الشهر فليصمه ) [2 البقرة : 185]

“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এই মাস পেলো সে যাতে সিয়াম পালন করে।”[২ আল-বাক্বারাহ:১৮৫] আল্লাহ তাআলাআরও বলেন:

( يسألونك عن الأهلة قل هي مواقيت للناس والحج) [2 البقرة : 189]

“তারা আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, বলুন তা মানুষের (কাজ-কর্ম) ও হজ্জ এর জন্য সময় নির্ধারক।”[২ আল-বাক্বারাহ :১৮৯]এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

( صوموالرؤيتهوأفطروالرؤيتهفإنغمعليكمفأكملواالعدةثلاثين )

“তোমরাতা (নতুনচাঁদ) দেখেসিয়াম পালনকরএবংতা (নতুনচাঁদ) দেখেঈদ কর। আরযদিআকাশমেঘাচ্ছন্নহয়তবে৩০দিনপূর্ণকর।”

উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যারা চন্দ্রের উদয়স্থলে পরিষ্কার আকাশে অথবা মেঘাচ্ছন্ন আকাশে নতুন চাঁদ দেখতে পেলোনা তাদের জন্য শাবান মাস ত্রিশদিন পূর্ণ করা ওয়াজিব।”[ফাতাওয়াল্‌ লাজনাহ আদ্‌দায়িমা (ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিরফতোয়াসমগ্র)(১০/১০০] যদিপার্শ্ববর্তী অন্যকোন অঞ্চলেনতুনচাঁদদেখাপ্রমাণিতনাহয় তাহলে এই হুকুম প্রযোজ্য। আর যদি অন্য অঞ্চলেশরিয়তসম্মতভাবেনতুনচাঁদদেখা প্রমাণিতহয় তাহলে অধিকাংশ আলেমের মতানুযায়ী তাদেরউপরসিয়ামপালনকরাওয়াজিব। আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।

সূত্র: শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ