আলহামদু লিল্লাহ।.
কোন কোম্পানি বা ব্যাংকে বিনিয়োগ বৈধ হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত শর্ত প্রযোজ্য:
১। বিনিয়োগের খাতের ব্যাপারে অবগত হওয়া যে, এটি বৈধ খাত। কেননা এমন কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা জায়েয নেই যে কোম্পানির তৎপরতা অজ্ঞাত। হতে পারে কোম্পানি সুদি খাতে বিনিয়োগ করে, স্টক এক্সচেঞ্জে বা অন্য কোথাও হারাম লেনদেন করে, জুয়ার আসরে, বা মদের বারে বিনিয়োগ করে কিংবা হারাম পণ্যের ব্যবসায় খাটায়।
২। মূলধনের গ্যারান্টি না দেয়া। অর্থাৎ ব্যবসায় লোকসান হলে কোম্পানি মূলধন ফেরত দেয়ার দায় না নেয়া; যদি না এক্ষেত্রে কোম্পানির কোন কসুর বা অবহেলা না ঘটে এবং কোম্পানিই এই লোকসানের কারণ না হয়।
কেননা যদি মূলধনের গ্যারান্টি দেয়া হয়; তাহলে প্রকৃতপক্ষে এটি ঋণ। আর এর থেকে অতিরিক্ত যে মুনাফা আসে সেটি সুদ।
৩। লাভ নির্ধারিত ও উভয়পক্ষের ঐক্যমত্যপূর্ণ হওয়া। কিন্তু, সেই নির্ধারণ লাভের সর্বাংশব্যাপী আনুপাতিক হতে হবে। মূলধনের থেকে নয়। উদাহরণস্বরূপ বিনিয়োগকারী পাবে এক তৃতীয়াংশ বা অর্ধেক বা লাভের ২০%; মূলধনের নয়।
লাভের অনুপাত অজ্ঞাত হওয়া সঠিক নয়। এমন অজ্ঞতা শরিয়তের দৃষ্টিতে লেনদেনকে বাতিলকারী।
ইবনে কুদামা (রহঃ) বলেন: মুদারাবা চুক্তি সঠিক হওয়ার শর্ত হল: “শ্রমদাতার প্রাপ্য অংশ নির্ধারণ করা। কেননা শর্ত করার ভিত্তিতে সে এর হককার হয়। তাই শর্ত করা না হলে তার অংশ নির্ধারণ হয় না।”
এরপর তিনি বলেন: “যদি কেউ বলে: মুদারাবা হিসেবে তুমি এটি গ্রহণ কর। লাভের একটি অংশ তুমি পাবে, কিংবা লাভ অংশীদারিত্বমূলক কিংবা কিছু লাভ পাবে কিংবা অংশ বিশেষ পাবে বা ভাগ পাবে; তাহলে সহিহ হবে না। কেননা তা অজ্ঞাত। আর মুদারাবা জ্ঞাত পরিমাণের ভিত্তিতে সহিহ হয় না...।
অংশীদারদ্বয়ের প্রত্যেকের প্রাপ্য লাভ জানার আবশ্যকতার ক্ষেত্রে কোম্পানির হুকুম মুদারাবার হুকুমের ন্যায়।”[আল-মুগনী (৫/২৪-২৭)]
“আপনি বলেছেন: আপনি সেই কোম্পানির ওয়েবসাইটে পড়েছেন যে, প্রাপ্য পার্সেন্টিজ ১০% থেকে ৫০% এর মধ্যে হতে পারে: যদি এর দ্বারা লাভের পার্সেন্টিজ উদ্দেশ্য হয় তাহলে অংশ নির্ধারণের জন্য এটি যথেষ্ট নয়। কেননা এরপরও সেটা অজানা রয়ে গেছে। তাই এই ওয়েবসাইটের সাথে লেনদেনে অংশীদার হওয়া হারাম হবে। আর যদি উদ্দেশ্য হয় মূলধনের অনুপাত; তাহলে এটি হারাম হওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি সুস্পষ্ট। কেননা তখন সেটি সুদি ঋণের ক্ষেত্রে ছলচাতুরি। প্রকৃতপক্ষে এটি কোন অংশীদারিত্ব নয়।”
আল্লাহই সর্বজ্ঞ।