আলহামদু লিল্লাহ।.
হজ্জ বা উমরার ইহরাম অবস্থায় মাথা মুণ্ডানো, নখ কাটা, মাথার সাথে লেগে থাকে এমন কিছু দিয়ে মাথা ঢাকা, পুরুষের জন্য সেলাই করা কাপড় পরা, মহিলাদের জন্য বোরকা ও হাত-মোজা পরা, শরীরে বা কাপড়ে সুগন্ধি লাগানো, শিকারী পশু হত্যা করা, বিবাহের চুক্তি করা, সহবাস বা তার অগ্রবর্তী কাজগুলো করা হারাম।[দেখুন: প্রশ্নোত্তর নং 11356 ]
ইহরামকারী ব্যক্তি যদি নিষিদ্ধ কাজগুলোর কোনটায় লিপ্ত হয় তাহলে তার অবস্থা নিম্নের কোনো একটি:
প্রথমত: সে ভুলে বা অজ্ঞতাবশতঃ বা বাধ্য হয়ে কিংবা ঘুমন্ত অবস্থায় তাতে লিপ্ত হলো; এতে করে তার উপর কোন কিছু আবশ্যক হবে না।
দ্বিতীয়ত: সে ইচ্ছাকৃত এতে লিপ্ত হলো; তবে এমন কোন ওজর থাকার কারণে যেটা নিষিদ্ধ কাজকে বৈধ করে দেয়। এক্ষেত্রে তার কোনো পাপ হবে না। তবে তাকে নিষিদ্ধ কাজের ফিদিয়া দিতে হবে। ফিদিয়ার বিবরণ আসবে।
তৃতীয়ত: সে কোনো ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত তাতে লিপ্ত হলো। তাহলে সে পাপী হবে। এর ফিদিয়া কয়েক প্রকার:
প্রথম প্রকার: যাতে কোনো ফিদিয়া নেই। যেমন: বিবাহের চুক্তি করা।
দ্বিতীয় প্রকার: যে নিষিদ্ধ কাজের ফিদিয়া হলো উট। হজ্জের মধ্যে প্রথম হালাল হওয়ার আগে সহবাস করা।
তৃতীয় প্রকার: যে নিষিদ্ধ কাজের ফিদিয়া হলো তিনদিন রোযা রাখা। তিনি চাইলে টানা তিনদিন রাখবেন, আর চাইলে আলাদা আলাদাভাবে রাখবেন।
অথবা কুরবানী করার উপযুক্ত একটি ভেড়া (বা ছাগল) জবাই করা কিংবা ভেড়ার স্থলাভিষিক্ত তথা উট বা গরুর এক-সপ্তমাংশ। যবাইকৃত পশুর গোশত দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করে দিবে। এর থেকে নিজে কিছু খাবে না।
অথবা ছয়জন মিসকীনকে খাদ্য প্রদান। প্রত্যেক মিসকীনকে অর্ধ সা পরিমাণ খাদ্য দিবে।
এই তিনটির যে কোনো একটি করার এখতিয়ার তার থাকবে— যদি সে চুল উপড়ে ফেলে, নখ কাটে, সুগন্ধি লাগায়, যৌন উত্তেজনাসহ শৃঙ্গার করে (অর্থাৎ সহবাস ছাড়া স্ত্রীর সাথে অন্য যৌনাচার), হাত-মোজা পরে, মহিলা নিকাব পরে, পুরুষ সেলাই করা কাপড় পরে কিংবা মাথা ঢাকে।
চতুর্থ প্রকার: যে নিষিদ্ধ কাজের ফিদিয়া হলো নিষিদ্ধ জিনিসটির সমকক্ষ বা সমমূল্য কিছু দেওয়া। এই নিষিদ্ধ কাজটি হলো পশু শিকার করা। যদি শিকারকৃত পশুর অনুরূপ পশু থাকে তাহলে তিনটি বিষয়ের মাঝে এখতিয়ার দেওয়া হবে:
১- অনুরূপ পশু যবাই করে হারামের দরিদ্রদের মাঝে গোশত বিতরণ করা।
২- অনুরূপের পশুর মূল্য কত সেটি নির্ধারণ করে সমান মূল্যের খাদ্য মিসকীনদের মাঝে বিতরণ করা। প্রত্যেক মিসকীনের জন্য অর্ধ সা করে।
৩- প্রত্যেক মিসকীনকে খাদ্য দেওয়ার পরিবর্তে একদিন করে রোযা রাখা।
আর যদি শিকারকৃত পশুর অনুরূপ পশু না থাকে তাহলে দুটি বিষয়ের মাঝে এখতিয়ার দেওয়া হবে:
১- নিহত পশুর মূল্য নির্ধারণ করে মূল্যের সমান খাদ্য মিসকীনদের মাঝে বিতরণ করে দেয়া। প্রত্যেক মিসকীনকে অর্ধ সা করে দেয়া।
২- প্রত্যেক মিসকীনকে খাওয়ানোর পরিবর্তে একদিন করে রোযা রাখা।[ফাতাওয়াশ শাইখ ইবনে উছাইমীন (২২/২০৫-২০৬)]