আলহামদু লিল্লাহ।.
তুমি চূড়ান্তভাবে এ সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে চাচ্ছ জেনে আমরা খুশি হয়েছি। আমরা আল্লাহ্র কাছে দোয়া করি তিনি যেন, তোমাকে সে তাওফিক দেন। এ ধরণের সম্পর্ক যে, হারাম এ ব্যাপারে কারো কোন দ্বিধা নেই। এর জন্য এইটুকুই যথেষ্ট যে, এ ধরণের সম্পর্ককারী অনুভব করে যে, সে ভুল কাজ করছে এবং মানুষের কাছ থেকে এটাকে লুকিয়ে রাখে, মানুষের সামনে এটাকে প্রকাশ করতে পারে না। এ ধরণের কাজ হারাম হওয়ার দলিল হিসেবে এটাই যথেষ্ট। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো বলেছেন: "পাপ হল যা তোমার অন্তরে খটকা তৈরী করে এবং মানুষ সেটা জেনে যাওয়াকে তুমি অপছন্দ কর।"[সহিহ মুসলিম (২৫৫৩)]
এ হারাম সম্পর্কের অনেক অপকারিতা রয়েছে; যেমন—
- নিছক হারাম কাজ করাটাই এক মহা বিপর্যয়; যা ব্যক্তির অন্তরের ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে ধীরে ধীরে অন্তর কালো হয়ে যায়। এভাবে সকল গুনাহই অন্তরের ওপর প্রভাব ফেলে।
- এ যদি এ ধরণের পাপময় সম্পর্কগুলোর সংবাদ ফাঁস হয়ে যায় তাহলে মেয়েদের এমন দুর্নাম হয় যে এতে তার ভাল গুণগুলোও ঢাকা পড়ে যায়। মানুষের কাছে তখন শুধু এ দুর্নামগুলোই আলোচিত হয়। তুমি জান যে, যদি কোন মেয়ের ব্যাপারে এমন ছড়িয়ে পড়ে সে মেয়ের সাথে মানুষের ব্যবহার কেমন হয় এবং মেয়েটি কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- হতে পারে এ সম্পর্ক এর চেয়ে জঘন্য থেকে জঘন্যতর গুনাহর দিকে নিয়ে যাবে। তখন অনুতপ্ত হয়েও কোন লাভ হবে না। আশ্চর্যের বিষয় হলো: প্রত্যেক ভিক্টিমই নিজের সম্পর্কে এমনটি বলে যে, আমি নিজের প্রতি ও আমার বয় ফ্রেন্ডের ব্যাপারে আস্থাশীল। আমরা অন্য মেয়ে ও ছেলেদের মতো নই...। এমন অনেক ঘটনা বলে শেষ করা যাবে না। দুঃখজনক হল: এসব ঘটনা থেকে খুব কম সংখ্যক মানুষই শিক্ষা গ্রহণ করে। আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরণের দশ দশ প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু, সবকিছু খোয়ানোর পর।
সময় থাকতে নিজেকে বাঁচাতে চেষ্টা কর। কেননা আমরা মনে করছি, তোমাকে ধ্বংসের দিকে যাওয়া হচ্ছে; কিন্তু তুমি বুঝতে পারছ না। হতে পারে, অন্যেরা তোমার চেয়ে দ্রুতবেগে চরিত্রহীনতার অতলে নিমজ্জিত হয়। কিন্তু, আমরা নিজের মেয়ে ও বোনের ব্যাপারে যে ভয় করতাম তোমার ব্যাপারেও সে ভয় করছি।
এ হারাম সম্পর্ক ত্যাগ করার জন্য কোন ক্রমধারা অবলম্বনের প্রয়োজন নেই। এ ধরণের চিন্তা হতে পারে শয়তানের ধোকা। বরং মুমিন নর-নারী যখনই জানবে এটি হারাম তখনই তার সামনে এটি ত্যাগ করা ছাড়া আর কোন পথ নেই। আল্লাহ্ তাআলা বলেন: "আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত দিলে কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর জন্য সে বিষয়ে তাদের কোন (ভিন্ন সিদ্ধান্তের) ইখতিয়ার সংগত নয়। আর যে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টভাবে পথভ্রষ্ট হলো।"[সূরা আহ্যাব, আয়াত: ৩৬] আল্লাহ্ তাআলা আরও বলেন: "মুমিনদের উক্তি তো এই—যখন তাদের মধ্যে বিচার-ফয়সালা করে দেয়ার জন্য আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের দিকে ডাকা হয় তখন তারা বলে, 'আমরা শুনলাম এবং আনুগত্য করলাম'। আর তারাই সফলকাম।"[সূরা নূর, আয়াত: ৫১, ৫২]
আমরা আল্লাহ্ তাআলার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন তোমাকে তওবা করার তাওফিক দেন এবং তোমার তওবা কবুল করেন।
তুমি উল্লেখ করেছ যে, এ ছেলেটি বিবাহিত। এর মানে তুমি এ সম্পর্কের মাধ্যমে তোমার বোন (তার স্ত্রী) এর প্রতি অন্যায় করছ। কারণ কোন সন্দেহ নেই যে, সে তোমাকে কিছু সময় দিচ্ছে, তোমার প্রতি সুন্দর কথা নিবেদন করছে, কিছু প্রেম পেশ করছে। কোন সন্দেহ নেই তার স্ত্রী ও সন্তানেরা তার থেকে এগুলো পাওয়ার অধিক হকদার। তুমি তাদের সে অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছ।
এমনও হতে পারে যে, তুমি তার স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে তার সম্পর্ক নষ্টের কারণ হচ্ছ।
তুমি এভাবে একটু ভেবে দেখ তো, এ লোকটি যদি তোমার স্বামী হত তুমি কি সন্তুষ্ট হতে যে, সে কোন এক মেয়ের সাথে এমন একটি সম্পর্ক করবে?
যদি তুমি তোমার নিজের জন্য এতে সন্তুষ্ট হতে না পার; তাহলে তোমার বোনের ক্ষেত্রে কিভাবে সন্তুষ্ট হচ্ছ?
তোমার উচিত অবিলম্বে এ সম্পর্ক ছিন্ন করা। ভাল ও কল্যাণকর কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। খুব সম্ভব এ সম্পর্কের কারণে তুমি নেক আমলে কিংবা কিছু কিছু নেক আমলে স্বাদ পাচ্ছ না।
তোমার উচিত—নামায আদায় করা; আল্লাহ্র কাছে মুনাজাত করে, তাঁকে স্মরণ করে, তাঁর কিতাব তেলাওয়াত করে স্বাদ অনুভব করা এবং তোমার তওবা কবুল করা ও তোমাকে ক্ষমা করার জন্য বেশি বেশি দোয়া করা।
আরও বেশি জানতে 84089 নং ও 84102 নং প্রশ্নোত্তরটি দেখ।
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।