বিক্রেতার মালিকানায় নেই এমন পণ্য বিক্রি করার হুকুম এবং এমন লেনদেন শুদ্ধ করার পদ্ধতিসমূহ

প্রশ্ন: 160559

আমি বিদেশে থাকি। আমার আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। আমার স্বামী কোনো কাজ করে না। স্বামীকে সাহায্য করার জন্য আমি অনলাইনে কিছু কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি যে দেশে থাকি সেখানে কোনো বোন যদি পণ্য কিনতে চায় তাহলে আমি সেটি খুঁজে দিই। ক্রেতার কাছে পণ্যের ছবি পাঠাই। যদি সে রাজী হয় তাহলে ডেলিভারির খরচসহ মূল্য হিসাব করে তাকে জানিয়ে দিই। এরপর অর্থ পাঠাতে বলি। সে অর্থ দিয়ে পণ্য ক্রয় করে ক্রেতার কাছে পাঠিয়ে দিই। সবকিছু বেশ ভালোভাবে চলছিল। আমি আমার কাজ নিয়ে সুখী ছিলাম। কিন্তু একদিন এক ব্যবসায়ী বোন আমার কাছে একটি পণ্য চাইল। সে আমাকে কিছু ওয়েবসাইট দিল যেখানে পণ্যটি পাওয়া যাবে। আমি যখন পণ্যটির মূল্য হিসাব করে তাকে পাঠালাম সে আমাকে অর্থ পাঠিয়ে দিল (যার পরিমাণ ছিল ৬৭০ আমেরিকান ডলার)। তখন আমি পণ্যটি কিনে সেটা পৌঁছার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু পণ্যটি আসল না। এখানে সমস্যাটা হলো: আমি পণ্যটি কিনেছি, কিন্তু সেটি আমাকে ডেলিভারি দেওয়া হয়নি। যে ওয়েবসাইট থেকে আমরা পণ্যটি কিনেছি সেটার সাথে আমরা যখন যোগাযোগ করলাম তখন কেউ উত্তর দিল না। খোঁজাখুঁজি করে স্পষ্ট হল যে কোম্পানিটি ভুয়া, আমরা প্রতারিত হয়েছি। তারা অর্থ চুরির জন্য ওয়েবসাইট বানিয়েছে। ঐ বোনকে এই খবর জানানোর পরে সে বিশ্বাস করল না। সে আমাকে মিথ্যুক ও প্রতারক বলল। আমি কসম করে তাকে বললাম যে আমার যখনই সুযোগ হবে আমি আমার স্বামীর অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার জন্য এই অর্থ সঞ্চয় করে পাঠিয়ে দিব। কিন্তু ঘটনাটি ঘটার পর প্রায় এক বছর বা এর বেশি সময় চলে গেছে। আমি এখনো সেই পরিমাণ অর্থ জমাতে পারিনি। আমাকে কি ঐ অর্থ ফিরিয়ে দিতে হবে? উল্লেখ্য, এই অর্থ নিয়েছে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান, আর উক্ত বোন আমার কাছে অর্থ দাবী করছে? এক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম কী? আল্লাহ আপনাকে বরকত দিন, শাইখ।

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। পর সমাচার:

এক:

আপনি যে লেনদেনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করছেন তা নিঃসন্দেহে শরীয়তসম্মত নয়। এটি শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ আপনি এমন কিছু বিক্রি করছেন যার মালিক আপনি না, আপনি এমন কিছু বিক্রি করছেন যা আপনার কাছে নেই, ক্রেতাকে সেটার নিশ্চয়তা দেয়া ও হস্তান্তর করার ক্ষমতা আপনার নেই। এতে করে এটি হয়ে গেল প্রতারণামূলক বিক্রি ও জুয়ার লেনদেন। এ ধরনের লেনদেনের ফলে ঝগড়া-বিবাদের অনেকগুলো ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়। হতে পারে আপনি পণ্যটি যে দামে বিক্রি করেছেন হঠাৎ করে এর দাম বেড়ে গেছে। হতে পারে পণ্যটির স্টক শেষ। আরো একটি সমস্যা, যা আপনার লেনদেনে ঘটেছে। সেটি হচ্ছে ব্যবসায়ীর অস্তিত্বই না থাকা! সুতরাং কার জন্য এমন কোনো নির্দিষ্ট পণ্য বিক্রি করা জায়েয নেই— সে যেটার মালিক নয়, যেটা তার কাছে নেই। এমন জিনিসও বিক্রি করা জায়েয নেই— যা বিবরণের মাধ্যমে তার জিম্মায় নির্দিষ্ট; তবে অন্যের কাছে। অবশ্য কেবল ‘সালাম’ পদ্ধতির বিক্রয় এর ব্যতিক্রম।

হাকীম ইবনে হিযাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমার কাছে কোনো লোক এসে এমন কিছু কিনতে চায় যা আমার কাছে নেই। আমি কি তার জন্য সেটি বাজার থেকে কিনে দিব?’ তিনি বলেন: “তোমার কাছে যে পণ্য নেই তা তুমি বিক্রি করো না।”[হাদীসটি তিরমিযী (১২৩২), আবু দাউদ (৩৫০৩), নাসাঈ (৪৬১৩) ও ইবনে মাজাহ (২১৮৭) বর্ণনা করেন। শাইখ আলবানী সহীহুত তিরমিযীতে এটিকে সহিহ বলে গণ্য করেন]

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “বিক্রয় ও ঋণ একসাথে বৈধ নয়, এক বিক্রয়ে দুই রকম শর্ত বৈধ নয়, তুমি যেটার জামিন হওনি সেটা থেকে মুনাফা গ্রহণ বৈধ নয় এবং যা তোমার কাছে নেই তা বিক্রি করা বৈধ নয়।”[হাদীসটি তিরমিযী (১২৩৪) বর্ণনা করে বলেন: হাদীসটি হাসান সহীহ। এছাড়া আবু দাউদ (৩৫০৪) ও নাসাঈ (৪৬১১) বর্ণনা করেন]

ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন: ‘দুই হাদীসের পাঠ একই যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন পণ্য বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন যা ব্যক্তির কাছে নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বচন থেকে এটি সংরক্ষিত। এই প্রকার বিক্রয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা রয়েছে। কারণ সে যদি কোনো নির্দিষ্ট পণ্য বিক্রি করে যা তার মালিকানায় নেই, তারপর সেটি ক্রয় করতে যায় কিংবা তাকে হস্তান্তর করতে যায় তখন সে পণ্যটি পাওয়া বা না-পাওয়ার মধ্যে দোদুল্যমান অবস্থায় থাকে। তাই এটি অনিশ্চিত জুয়ার সদৃশ। তাই এটিকে নিষেধ করা হয়েছে।’[সমাপ্ত][যাদুল মা’আদ ফী হাদই খাইরিল ইবাদ (৫/৮০৮)]

তিনি অস্তিত্বহীন জিনিসের বিক্রির প্রকারসমূহের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন: ‘এমন অস্তিত্বহীন বস্তু যা পাওয়া যাবে কি; যাবে না জানা নেই, বিক্রেতার এটি পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা নেই, বরং তার থেকে ক্রয়কারী ঝুঁকির মধ্যে থাকে; এ ধরণের বস্তু বিক্রয় করা শরীয়তপ্রণেতা নিষিদ্ধ করেছেন। এ নিষেধাজ্ঞা বস্তুটি অস্তিত্বহীন হওয়ার কারণে নয়; বরং অনিশ্চয়তার কারণে। এ শ্রেণীর বিক্রয়ের একটি রূপ হাকীম ইবনে হিযাম ও ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমার বর্ণিত হাদীসে উদ্ধৃত হয়েছে। বিক্রেতা যদি এমন কিছু বিক্রি করে যা তার মালিকানায় নেই এবং যা হস্তান্তর করার ক্ষমতা তার নেই; কিন্তু সে গিয়ে বস্তুটি সংগ্রহ করে ক্রেতাকে হস্তান্তর করবে; এমন লেনদেন জুয়া ও ঝুঁকির সদৃশ। অথচ এমন লেনদেনে এ দুটোর কোনো প্রয়োজন নেই এবং তাদের স্বার্থ এর উপর নির্ভর করে না।’[সমাপ্ত][যাদুল মাআদ ফী হাদই খাইরিল ইবাদ (৫/৮১০)]

যদি শরীয়ত অনুযায়ী এই ওয়েবসাইটগুলো থেকে আপনার জন্য ক্রয় করা সঠিকও হত, তদুপরি পণ্যটি হস্তগত করার আগে, সেটি সস্থানে থাকা অবস্থায় সেটি বিক্রয় করা আপনার জন্য জায়েয হত না। অর্থাৎ কার্যত পণ্যটি আপনি হাতে নেয়ার আগে এবং যদি পণ্যটি স্থানান্তরযোগ্য হয় তাহলে সেটিকে আপনার গুদামঘর বা নিজস্ব স্থানে আনার আগে সেটি বিক্রয় করা জায়েয নেই। আপনার এই লেনদেন শরীয়তসম্মত না হওয়ার এটি আরেকটি কারণ। দেখুন: (39761) নং প্রশ্নোত্তর।

ইবনে উমর বলেন: আমি বাজার থেকে তেল ক্রয় করলাম। ক্রয় পাকাপাকি হবার পর একজন লোক আমার কাছে এসে আমাকে তাতে একটা ভাল লাভ দিতে চাইলো। আমিও তার হাতে হাত মেরে বিক্রয় পাকাপাকি করতে চাইলাম। হঠাৎ করে এক লোক পেছন থেকে আমার বাহু ধরে ফেলল। আমি পেছনে চেয়ে দেখলাম, তিনি যাইদ ইবনে সাবেত। তিনি বললেন: ‘যেখানে ক্রয় করবেন ঐ স্থানে বিক্রয় করবেন না, যতক্ষণ আপনার স্থানে নিয়ে না যান। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্রয় করার স্থানে পণ্য বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন, যতক্ষণ না তা ক্রেতা তার ডেরায় বা স্থানে নিয়ে যায়।’[হাদীসটি আবু দাউদ (৩৪৯৯) বর্ণনা করেন। শাইখ আলবানী সহিহ আবি দাউদে এটিকে হাসান বলে গণ্য করেন]

শাইখ আব্দুল আযীয ইবনে বায রাহিমাহুল্লাহ উপর্যুক্ত তিনটি হাদীস উল্লেখ করার পরে বলেন: “উক্ত হাদীস এবং এর সমার্থক হাদীস থেকে সত্যান্বেষী ব্যক্তির কাছে স্পষ্ট যে কোনো মুসলিমের জন্য এমন পণ্য বিক্রি করা জায়েয নেই যা তার মালিকানায় নেই, পরবর্তীতে সে গিয়ে ওটি ক্রয় করবে। বরং তার উপর আবশ্যক হলো: পণ্যটি কিনে নিজের মালিকানায় আনা অবধি বিক্রয়কে বিলম্বিত করা। এতে আরো স্পষ্ট হয় যে অনেক মানুষ যে কাজটি করে, তথা পণ্যটি ক্রেতার মালিকানায় কিংবা বাজারে আনার আগে বিক্রেতার দোকানে থাকতেই বিক্রি করে ফেলা— সেটি জায়েয নেই। কারণ এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ বিরোধী। অধিকন্তু এটি লেনদেন নিয়ে খেল-তামাশা এবং পবিত্র শরীয়ত অনুসরণ না করার নামান্তর। এতে এমন অনিষ্ট, ক্ষতি ও মন্দ পরিণতি রয়েছে যার পরিমাণ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের ও সমস্ত মুসলমানের জন্য তার শরীয়ত আঁকড়ে ধরার এবং শরীয়তের বিরোধী হয় এমন কিছু থেকে সতর্ক থাকার তৌফিক কামনা করছি।”[সমাপ্ত][মাজমুউ ফাতাওয়াশ শাইখ ইবনে বায (১৯/৫২-৫৩)]

 দুই:

আপনার ক্রয়-বিক্রয় যেন শরীয়তসম্মত হয় সে জন্য আপনার করণীয় হচ্ছে:

১. পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী ব্যক্তির কাছে আপনি পণ্য এমনভাবে পেশ করবেন যেন সেটির ব্যাপারে অজ্ঞতা কেটে যায় এবং বিবাদের অবকাশ না থাকে। আপনি পণ্যের মালিক হলে আপনি কত দামে পণ্যটি বিক্রি করবেন সেটি নির্ধারণ করবেন। ক্রেতা আপনাকে এই মূল্যে পণ্যটি কেনার ওয়াদা দিবে। তবে আপনি বিক্রি করতে বাধ্য নন এবং তারাও ক্রয় করতে বাধ্য নন। বরং উভয় পক্ষের লেনদেন করা কিংবা না করার স্বাধীনতা থাকবে। আপনি যখন শরীয়তসম্মত পন্থায় পণ্যের মালিক হবেন এবং এরপর ক্রেতার সাথে বিক্রি করার চুক্তি করবেন, তখন এই চুক্তিটি উভয়পক্ষের জন্য অনিবার্য হয়ে যাবে এবং এটি বিক্রয়ের সুবিদিত বিধানসমূহ অধিগ্রহণ করবে। এই প্রকার বিক্রির নাম ‘ওয়াদার বিক্রি’।

দেখুন: (126452) নং প্রশ্নোত্তর । সেখানে এই প্রকার বিক্রির বিধান আলোচনা করা হয়েছে।

২. আপনি পণ্যটি কিনতে আগ্রহী ব্যক্তির কাছে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশনের বিনিময়ে কিংবা পণ্যের মূলের উপর একটি নির্দিষ্ট পার্সেন্টিজের বিনিময়ে সেটি বিক্রি করতে পারেন। আপনি মানুষদের কাছে পণ্য উপস্থাপন করবেন এবং একটি নির্দিষ্ট এমাউন্ট নির্ধারণ করে দিবেন। যেমন ধরুন: প্রত্যেক লেনদেনের জন্য দশ ডলার করে কিংবা ক্রয়ের ইনভয়েসের ২ শতাংশ করে। এই পরিমাণ অর্থ বা শতাংশ পণ্য ক্রয়ে আপনার কষ্ট ও ক্লান্তির বিনিময় হিসেবে আপনাকে দেওয়া হবে।

আপনি যেমনিভাবে ক্রেতাদের এজেন্ট হতে পারেন, তেমনিভাবে বিক্রেতাদের এজেন্টও হতে পারেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত (154229) নং প্রশ্নোত্তরে দেখুন।

ঐ নারী আপনাকে যে অর্থ দিয়েছে সেটি তাকে ফিরিয়ে দেওয়া আপনার উপর আবশ্যক। কারণ এটি তার হক। আপনি ওয়েবসাইটের মালিকের কাছ থেকে পুলিশ বা অন্য কোনো মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ ফিরিয়ে নিবেন। ঐ নারী আপনার কাছ থেকে অর্থ ফিরিয়ে নিবেন। আপনি ভুয়া কোম্পানিটি থেকে অর্থ ফিরিয়ে নিতে পারেন বা না পারেন তাতে করে আপনার কাছে ঐ নারীর হক কোনোভাবে বদলে যাবে না। বরং সর্বাবস্থায় তার হক আপনার যিম্মায় থেকে যাবে। আশা করি তিনি আপনার অবস্থা বিবেচনা করে আপনি স্বচ্ছল না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে অবকাশ দিবেন। অথবা তিনি তার হক ছেড়ে দিবেন; ছেড়ে দেয়া তার জন্য তার রবের কাছে উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَإِن كَانَ ذُو عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ إِلَى مَيْسَرَةٍ وَأَن تَصَدَّقُواْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

“(খাতক) যদি অভাবগ্রস্ত হয় তাহলে স্বচ্ছলতা (আসা) পর্যন্ত (তাকে) অবকাশ দিও। আর মাফ করে দেওয়া তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।”[সূরা বাকারা: ২৮০]

আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন স্বামীকে সহায়তা করা ও তার সাথে জীবনের ভার বহনের জন্য আপনাকে নেকী লিখে দেন। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আপনাকে উত্তম ও সুন্দর রিযিক প্রদান করেন।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজলেটার

ওয়েবসাইটের ইমেইল ভিত্তিক নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত পৌঁছতে ও ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করতে

download iosdownload android