Islam QA ওয়েবসাইটের জন্য দান করুন

আমরা আশা করছি, আপনাদের ওয়েবসাইট Islam Q&A (ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব) কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য মুক্তহস্তে দান করবেন; যাতে করে ইনশা আল্লাহ্‌ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সেবায় আপনাদের ওয়েবসাইট তার পথ চলা অব্যাহত রাখতে পারে।

পুরুষের জন্য কখন বিয়ে করা ফরয?

17-08-2023

প্রশ্ন 5511

পুরুষদের জন্য বিয়ে করা কি ফরয?

উত্তর

আলহামদু লিল্লাহ।.

পুরুষদের জন্য বিয়ে করা তাদের পরিস্থিতি ও অবস্থাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। যে ব্যক্তির বিয়ের করার সক্ষমতা আছে, বিয়ে করার জন্য সে আগ্রহী এবং বিয়ে না করলে পাপে লিপ্ত হওয়ার আশংকা করে— তার উপর বিয়ে করা ফরয। কেননা নিজেকে হারাম থেকে রক্ষা করা ও পুতঃপবিত্র রাখা ফরয। আর এটি বিয়ের মাধ্যম ছাড়া সম্পন্ন হবে না।

কুরতুবী বলেন:

যে সক্ষম ব্যক্তি অবিবাহিত থাকলে নিজের উপর ও নিজের দ্বীনদারির ক্ষতির আশংকা করে এবং এই ক্ষতি বিয়ের মাধ্যম ছাড়া দূরীভূত না হয়— এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা ফরয; এতে কোন মতভেদ নেই।

মিরদাওয়ি (রহঃ) ‘আল-ইনসাফ’ গ্রন্থে বলেন: তৃতীয় প্রকার: যে ব্যক্তি العنت (পাপ)-এ লিপ্ত হওয়ার আশংকা করে; এমন ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা ফরয। এ মাসয়ালায় অভিমত মাত্র একটি। আর সঠিক মতানুযায়ী এখানে العنت (পাপ) দ্বারা উদ্দেশ্য: ব্যভিচার। অপর এক মতে, এখানে العنت দ্বারা উদ্দেশ্য: ব্যভিচারের মাধ্যমে ধ্বংস হওয়া।

দ্বিতীয় প্রকার: গ্রন্থকারের বক্তব্য: “তবে যদি হারামে লিপ্ত হওয়ার আশংকা হয় তাহলে ভিন্ন কথা” এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যদি এমন কিছু ঘটার ব্যাপারে ব্যক্তি নিশ্চিত হয় বা তার ধারণা হয়। আল-ফুরু’ গ্রন্থে বলেন: “যদি এমন কিছু ঘটা নিশ্চিত হয় শুধু সেক্ষেত্রে এ মতটি যথাযথ হয়”।[আল-ইনসাফ (খণ্ড-৮), কিতাবুন নিকাহ, আহকামুন নিকাহ]

যদি তার বিয়ে করার আগ্রহ থাকে, কিন্তু স্ত্রীর খরচ বহনে অক্ষম হয় তাহলে তার ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌ তাআলার বাণী: যারা বিবাহে সক্ষম নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন[সূরা নূর, আয়াত: ৩৩]

এবং যেন বেশি বেশি রোযা রাখে। যেহেতু মুহাদ্দিসগণ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: "রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: হে যুব সমাজ! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্য রাখ তাদের উচিত বিয়ে করে ফেলা। কেননা বিয়ে দৃষ্টি অবনতকারী ও লজ্জাস্থানকে হেফাযতকারী। আর যার সামর্থ্য নেই তার উচিত রোযা রাখা। কেননা রোযা যৌন উত্তেজনা প্রশমনকারী।"

উমর (রাঃ) আবুয যাওয়ায়িদকে বলেন: “তোমাকে বিয়ে করতে বাধা দিচ্ছে হয় অক্ষমতা নয়তো দুশ্চরিত্র”।[দেখুন: ফিকহুস সুন্নাহ (/১৫-১৮)]

যে ব্যক্তি বিয়ে না করলে হারাম দর্শন কিংবা চুম্বনের মাধ্যমে গুনাহতে লিপ্ত হবে তার উপর বিয়ে করা ফরয। যদি কোন পুরুষ বা নারী জানে বা তার প্রবল ধারণা হয় যে, যদি সে বিয়ে না করে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে কিংবা যা কিছু ব্যভিচারের অধিভুক্ত তাতে লিপ্ত হবে কিংবা যা কিছু ব্যভিচারের কাছাকাছি সেটাতে লিপ্ত হবে; যেমন হস্তমৈথুন— তার উপর বিয়ে করা ফরয। যে ব্যক্তি নিজের ব্যাপারে জানে যে, বিয়ে করলেও সে পাপ ছাড়তে পারবে না; তার ক্ষেত্রেও বিয়ের ফরযিয়্যত (আবশ্যকতা) মওকুফ হবে না। কেননা বিয়ের মাধ্যমে পাপের হ্রাস ঘটবে। যেহেতু সে ব্যক্তি কিছু কিছু অবস্থার জন্য হলেও পাপ করার সময় পাবে না; পক্ষান্তরে অবিবাহিত থাকলে সে তো সর্বাবস্থায় পাপ করার জন্য অবসর।

আমাদের এ যুগের পরিস্থিতি এবং নানারকম পাপাচার ও পাপের প্রতি প্ররোচনাগুলোর প্রতি দৃষ্টিদানকারী একমত হবেন যে, আমাদের এ যামানায় বিয়ের ফরযিয়ত পূর্ববর্তী যে কোন যুগের চেয়ে আরও বেশি প্রবল ও শক্তিশালী।

আমরা আল্লাহ্র কাছে দোয়া করছি তিনি যেন আমাদের অন্তরগুলোকে পবিত্র করে দেন, আমাদের মাঝে ও হারামের মাঝে দূরত্ব তৈরী করে দেন এবং আমাদেরকে সশ্চরিত্র ও পুতঃপবিত্রতা দান করেন।

আমাদের নবী মুহাম্মদের প্রতি আল্লাহ্র রহমত বর্ষিত হোক।

বিবাহের বিধিবিধান
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব ওয়েবসাইটে দেখান